মো. জিল্লুর রহমান ।।
.
রোমের সম্রাট হেরকেলকে লেখা রাসূল (সা.) এর চিঠি
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
আল্লাহর বান্দা মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহর পক্ষ থেকে রোমের সম্রাট হেরকেলকে। যে সত্যের অনুসরণ করে সে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। ইসলাম গ্রহণ করুন তাহলে শান্তিতে থাকবেন। ইসলাম গ্রহণ করুন তাহলে আল্লাহ আপনাকে দুইবার পুরষ্কার দিবেন। ইসলাম গ্রহণ না করলে আপনার প্রজাদের গোনাহও আপনার উপর বর্তাবে।
.
মুহাম্মাদ (স.)’র পক্ষ থেকে হাবশার বাদশা নাজ্জাশি আসহামকে লেখা চিঠি
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
আপনি আমাদের সাথে আপোষে আসুন। আমি মালিক, কুদস, সালাম, মুমিন এবং মুহাইমেন আল্লাহর প্রশংসা করে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, ঈসা ইবনে মারিয়াম আল্লাহর রুহ এবং কালিমা। আল্লাহ হযরত ঈসাকে কুমারী মারিয়ামের গর্ভে দান করেছেন এবং আল্লাহ ঈসাকে তার রুহ থেকে সৃষ্টি করেছেন। যেভাবে হযরত আদমকে তার রুহ থেকে সৃষ্টি করেছেন। আমি আপনাকে এক আল্লাহর প্রতি এবং তার আনুগত্যের দাওয়াত দিচ্ছি। আমার অনুসরণ করবেন এবং বিশ্বাস করবেন যে আমি আল্লাহর রাসূল (সা.)। আমার চাচাত ভাই জাফরসহ কিছু মুসলমানদেরকে আপনার কাছে প্রেরণ করছি, আপনি তাদেরকে গ্রহণ করবেন এবং কোন প্রকার অহংকার করবেন না। আমি আপনাকে আপনার সকল রাজত্বসহ আল্লাহর দিকে আহ্বান করছি। আমি আল্লাহর বাণী আপনার কাছে পৌঁছে দিলাম এবং আপনাকে উপদেশ দিলাম। আমার উপদেশ গ্রহণ করুন এবং তার উপর আল্লাহর দরুদ, যে হোদায়াতের পথ অনুসরণ করে।
.
রাসূল (সা.) এর লেখা চিঠি ইরানের বাদশা খসরু পারভেজকে
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।
তার উপর দরুদ যে হেদায়েতের অনুসরণ করে এবং আল্লাহ ও রাসূলের উপর ঈমান আনে এবং বলে যে, এক আল্লাহ ব্যতীত আর কোন মাবুদ নেই। আমি সবার জন্য আল্লাহর প্রেরিত রাসূল এবং আমি সকল মানুষকে সতর্ক করার জন্য প্রেরিত হয়েছি। সুস্থ ও ভাল থাকতে হলে ইসলাম গ্রহণ কর। আর যদি ইসলাম গ্রহণ না কর তাহলে সকল অগ্নিপূজকদের গোনাহ তোমার উপর বর্তাবে।
.
মিশরের বাদশাহ মুকাউকিস কে লেখা মহানবির (স.) এর চিঠি
বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম।
হেদায়েত অনুসারীদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। অতঃপর, আমি আপনাকে ইসলামের দিকে আহ্বান করছি। ইসলাম গ্রহণ করুন, শান্তিতে থাকতে পারবেন। এবং আল্লাহ আপনাকে দ্বিগুণ পুরস্কৃত করবেন। পক্ষান্তরে যদি তা অমান্য করেন, তাহলে দেশবাসীর পাপের জন্য আপনি দায়ী থাকবেন।”
”হে আহলে কিতাবগণ, এমন একটি বাণীর দিকে এগিয়ে এসো, যা আমাদের এবং তোমাদের মধ্যে সমান, বরাবর। তা এই যে আমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করব না, তাঁর সঙ্গে কাউকে অংশীদার করব না, আল্লাহকে বাদ দিয়ে আমাদের কেউ যেন অন্য কাউকে তাঁর আসনে না বসায়। কিন্তু যদি তারা এ কথা না মানে তাহলে বলে দিন, আমরা মানছি, তোমরা এ ব্যাপারে সাক্ষী থেকো।
.
ছেলের শিক্ষকের কাছে আব্রাহাম লিংকনের চিঠি
মাননীয় মহাশয়,
আমার পুত্রকে জ্ঞানার্জনের জন্য আপনার কাছে প্রেরণ করলাম। তাকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবেন- এটাই আপনার কাছে আমার বিশেষ দাবি।
আমার পুত্রকে অবশ্যই শেখাবেন – সব মানুষই ন্যায়পরায়ণ নয়, সব মানুষই সত্যনিষ্ঠ নয়। তাকে এও শেখাবেন প্রত্যেক বদমায়েশের মাঝেও একজন বীর থাকতে পারে, প্রত্যেক স্বার্থবান রাজনীতিকের মাঝেও একজন নিঃস্বার্থ নেতা থাকে। তাকে শেখাবেন পাঁচটি ডলার কুড়িয়ে পাওয়ার চেয়ে একটি উপার্জিত ডলার অধিক মূল্যবান। এও তাকে শেখাবেন, কিভাবে পরাজয়কে মেনে নিতে হয় এবং কিভাবে বিজয়োল্লাস উপভোগ করতে হয়। হিংসা থেকে দূরে থাকার শিক্ষাও তাকে দিবেন। যদি পারেন নীরব হাসির গোপন সৌন্দর্য তাকে শেখাবেন। সে যেন আগেভাগেই এ কথা বুঝতে পারে- যারা পীড়নকারী তাদেরই সহজে কাবু করা যায়। বইয়ের মাঝে কি রহস্য আছে তাও তাকে বুঝতে শেখাবেন। আমার পুত্রকে শেখাবেন – বিদ্যালয়ে নকল করার চেয়ে অকৃতকার্য হওয়া অনেক বেশী সম্মানজনক। নিজের উপর তার যেন সুমহান আস্থা থাকে। এমনকি সবাই যদি সেটাকে ভুলও মনে করে। তাকে শেখাবেন, ভদ্রলোকের প্রতি ভদ্র আচরণ করতে, কঠোরদের প্রতি কঠোর হতে। আমার পুত্র যেন এ শক্তি পায়- হুজুগে মাতাল জনতার পদাঙ্ক অনুসরণ না করার। সে যেন সবার কথা শোনে এবং তা সত্যের পর্দায় ছেঁকে যেন ভালোটাই শুধু গ্রহণ করে- এ শিক্ষাও তাকে দিবেন।
সে যেন শিখে দুঃখের মাঝে কীভাবে হাসতে হয়। আবার কান্নার মাঝে লজ্জা নেই একথা তাকে বুঝতে শেখাবেন। যারা নির্দয়, নির্মম তাদের সে যেন ঘৃণা করতে শেখে। আর অতিরিক্ত আরাম-আয়েশ থেকে সাবধান থাকে।
আমার পুত্রের প্রতি সদয় আচরণ করবেন কিন্তু সোহাগ করবেন না। কেননা আগুনে পুড়েই ইস্পাত খাঁটি হয়। আমার সন্তানের যেন অধৈর্য হওয়ার সাহস না থাকে, থাকে যেন সাহসী হওয়ার ধৈর্য। তাকে এ শিক্ষাও দিবেন- নিজের প্রতি তার যেন সুমহান আস্থা থাকে আর তখনই তার সুমহান আস্থা থাকবে মানবজাতির প্রতি।
ইতি
আপনার বিশ্বস্ত আব্রাহাম লিংকন।
.
নার্গিস কে লেখা নজরুলের শেষ চিঠি
কল্যানীয়াসু,
তোমার পত্র পেয়েছি সেদিন নব বর্ষার নবঘন-সিক্ত প্রভাতে। মেঘ মেদুর গগনে সেদিন অশান্ত ধারায় বারি ঝরছিল। পনর বছর আগে এমনি এক আষাঢ়ে এমনি এক বারি ধারায় প্লাবন নেমেছিল– তা তুমিও হয়তো স্মরণ করতে পারো। আষাঢ়ের নবমেঘপুঞ্জকে আমার নমস্কার। এই মেঘদূত বিরোহী যক্ষের বানী বহন করে নিয়ে গিয়েছিল কালিদাসের যুগে, রেবা নদীর তীরে, মালবিকার দেশে, তার প্রিয়ার কাছে। এই মেঘ পুঞ্জের আশীর্বাণী আমার জীবনে এনে দেয় চরম বেদনার সঞ্চার। এই আষাঢ় আমায় কল্পনার স্বর্গ লোক থেকে টেনে ভাসিয়ে দিয়েছে বেদনার অনন্ত স্রোতে। যাক, তোমার অনুযোগের অভিযোগের উত্তর দেই। তুমি বিশ্বাস করো, আমি যা লিখছি তা সত্য। লোকের মুখে শোনা কথা দিয়ে যদি আমার মূর্তির কল্পনা করে থাকো,তাহলে আমায় ভুল বুঝবে- আর তা মিথ্যা।
তোমার উপর আমি কোনো ‘জিঘাংসা’ পোষণ করিনা –এ আমি সকল অন্তর দিয়ে বলছি। আমার অন্তর্যামী জানেন তোমার জন্য আমার হৃদয়ে কি গভীর ক্ষত, কি আসীম বেদনা! কিন্তু সে বেদনার আগুনে আমিই পুড়েছি—তা দিয়ে তোমায় কোনোদিন দগ্ধ করতে চাইনি। তুমি এই আগুনের পরশ মানিক না দিলে আমি ‘অগ্নিবীণা’ বাজাতে পারতাম না—আমি ধুমকেতুর বিস্ময় নিয়ে উদিত হতে পারতাম না। তোমার যে কল্যান রূপ আমি আমার কিশোর বয়সে প্রথম দেখেছিলাম, যে রূপকে আমার জীবনের সর্বপ্রথম ভালবাসার আঞ্জলি দিয়েছিলাম, সে রূপ আজো স্বর্গের পারিজাত-মন্দারের মতো চির অম্লান হয়েই আছে আমার বক্ষে। অন্তরের সে আগুন- বাইরের সে ফুলহারকে স্পর্শ করতে পারেনি।
তুমি ভুলে যেওনা আমি কবি—আমি আঘাত করলেও ফুল দিয়ে আঘাত করি। অসুন্দর কুৎসিতের সাধনা আমার নয়। আমার আঘাত বর্বরের কাপুরুষের আঘাতের মতো নিষ্ঠুর নয়।আমার অন্তর্যামী জানেন (তুমি কি জান বা শুনেছ জানিনা) তোমার বিরুদ্ধে আজ আমার কোন অনুযোগ নেই, অভিযোগ নেই, দাবীও নেই।
তোমার আজিকার রূপ কি জানিনা। আমি জানি তোমার সেই কিশোরি মুর্তিকে, যাকে দেবী মূর্তির মতো আমার হৃদয় বেদীতে অনন্ত প্রেম,অনন্ত শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলাম। সেদিনের তুমি সে বেদী গ্রহণ করলেনা। পাষান দেবীর মতই তুমি বেছে নিলে বেদনার বেদিপাঠ …জীবন ভ’রে সেখানেই চলেছে আমার পূজা আরতি। আজকার তুমি আমার কাছে মিথ্যা,ব্যর্থ ; তাই তাকে পেতে চাইনে। জানিনে হয়ত সে রূপ দেখে বঞ্চিত হব,অধিকতর বেদনা পাব,–তাই তাকে অস্বীকার করেই চলেছি।
দেখা? না-ই হ’ল এ ধূলির ধরায়। প্রেমের ফুল এ ধূলিতলে হয়ে যায় ম্লান,দগদ্ধ,হতশ্রী। তুমি যদি সত্যিই আমায় ভালবাস আমাকে চাও ওখান থেকেই আমাকে পাবে। লাইলি মজনুকে পায়নি, শিরি ফরহাদকে পায়নি, তবু তাদের মত করে কেউ কারো প্রিয়তমাকে পায়নি ।আত্মহত্যা মহাপাপ, এ অতি পুরাতন কথা হলেও প্রেম সত্য। আত্মা অবিনশ্বর,আত্মাকে কেউ হত্যা করতে পারেনা। প্রেমের সোনার কাঠির স্পর্শ যদি পেয়ে থাকো, তাহলে তোমার মতো ভাগ্যবতী আর কে আছে? তারি মায়া স্পর্শে তোমার সকল কিছু আলোয় আলোময় হয়ে উঠবে। দুঃখ নিয়ে এক ঘর থেকে অন্য ঘরে গেলেই সেই দুঃখের অবসান হয়না। মানুষ ইচ্ছা করলে সাধনা দিয়ে, তপস্যা দিয়ে ভুলকে ফুল রূপে ফুটিয়ে তুলতে পারে। যদি কোনো ভুল করে থাক জীবনে, এই জীবনেই তাকে সংশোধন করে যেতে হবে; তবেই পাবে আনন্দ মুক্তি; তবেই হবে সর্ব দুঃখের অবসান। নিজেকে উন্নত করতে চেষ্টা করো, স্বয়ংবিধাতা তোমার সহায় হবেন। আমি সংসার করছি, তবু চলে গেছি এই সংসারের বাধাকে অতক্রম করে উর্ধ্ব লোকে—সেখানে গেলে পৃ্থিবীর সকল অপূর্ণতা, সকল অপরাধ ক্ষমা সুন্দর চোখে পরম মনোহর মূর্তিতে দেখা যায়।
হঠাৎ মনে পড়ে গেল পনর বছর আগের কথা। তোমার জ্বর হয়েছিল, বহু সাধনার পর আমার তৃষিত দুটি কর তোমার শুভ্র ললাট স্পর্শ করতে পেরেছিল; তোমার তপ্ত ললাটের স্পর্শ যেন আজো অনুভব করতে পারি। তুমি কি চিয়ে দেখেছিলে? আমার চোখে ছিলো জল, হাতে সেবা করার আকুল স্পৃহা, অন্তরে শ্রীবিধাতার চরণে তোমার আরোগ্য লাভের জন্য করুন মিনতি। মনে হয় যেন কালকের কথা। মহাকাল যে স্মৃতি মুছে ফেলতে পারলেননা। কী উদগ্র অতৃপ্তি, কী দুর্দমনীয় প্রেমের জোয়ারই সেদিন এসেছিল। সারা দিন রাত আমার চোখে ঘুম ছিল না।
যাক আজ চলেছি জীবনের অস্তমান দিনের শেষে রশ্মি ধরে ভাটার স্রোতে, তোমার ক্ষমতা নেই সে পথ থেকে ফেরানোর। আর তার চেষ্টা করোনা। তোমাকে লিখা এই আমার প্রথম ও শেষ চিঠি হোক ।যেখানেই থাকি বিশ্বাস করো আমার অক্ষয় আশির্বাদ কবচ তোমায় ঘিরে থাকবে । তুমি সুখি হও, শান্তি পাও— এই প্রার্থনা। আমায় যত মন্দ বলে বিশ্বাস করো, আমি তত মন্দ নই –এই আমার শেষ কৈফিয়ৎ।
ইতি—
নিত্য শুভার্থী—
কাজী নজরুল ইসলাম
.
চার্লি ইয়ামসের ভালোবাসায় পরিপূর্ণ বিয়ের প্রস্তাব সম্বলিত চিরকুট
আমি এখন চৌত্রিশের কোঠায় দাঁড়ানো তোমার মায়াময় রূপের বাঁধনে বুক ভাঙা এক পাগল যুবক। আমি তোমাকে ভীষণ ভালোবাসি। এতটাই উন্মত্ত আমার এ ভালোবাসা। এখন চূড়ান্ত পরিণতির প্রহর গুনছে ঘর বাঁধার স্বপ্ন নিয়ে। আমার এ দরিদ্র ভালোবাসা হয়তো তোমাকে রাজপ্রাসাদের সুখ গড়ে দিতে পারবে না, তবুও আমৃত্যু চেষ্টা করে যাবে তোমার মুখের হাসি অম্লান, অক্ষত রাখতে।হে প্রেয়সী, দেবে কি আমাকে সে সুযোগ তোমার অনামিকায় আমার দেওয়া আংটি পরাতে? তোমার অনামিকা অঙ্গুলির আংটির মাপই আমার স্বপ্নের উত্তর।
উত্তরের প্রত্যাশী।
তোমারই অনেক অনেক ভালোবাসার
চার্লস
.
জোসেফিনকে লেখা নেপোলিয়নের আবেগময় চিঠি
নেপোলিয়নের মতো তুখোড় যোদ্ধা কি করে একজন অসাধারণ প্রেমিক হতে পারেন সেটা তার প্রিয়তমা স্ত্রীকে লেখা চিঠি না পড়লে বোঝা অসম্ভব! তিনি প্রায় ৭৫ হাজার চিঠি লিখেছেন যার বেশির ভাগ ছিল যুদ্ধের ময়দান থেকেই জোসেফিনকে (পরবর্তীতে তার স্ত্রী) দেওয়া। একজন যোদ্ধার মনেও যে কি পরিমাণ প্রেম থাকতে পারে তার প্রতীক বহন করে এই চিঠিগুলো।জোসেফিন, আমার জোসেফিন,
গতকাল সারাটি বিকেল কাটিয়েছি তোমার পোট্রেটের দিকে চেয়ে থেকেই। কী করে পারো তুমি বলতো এই কঠোর মনের যোদ্ধার চোখেও জল আনতে? আমার হৃদয় যদি একটি পাত্র হয়, তবে সেই পাত্রে ধারণ করা পানীয়ের নাম দুঃখ। তুমি কি তা বোঝো জোসেফিন? আবার কবে তোমার আমার দেখা হবে? সে অপেক্ষার প্রহর যেন শেষ হতেই চায় না! সে অপেক্ষায়…
তোমারই
নেপোলিয়ন বোনাপার্ট
.
স্ত্রী ক্লেমিকে লেখা চার্চিলের প্রেমপত্র
আমার প্রিয় ক্লেমি,
আমার মন পড়ে রয়েছে মাদ্রাজের ছোট্ট এক টেবিলে, যেখানে বসে বসে তুমি গত পত্রখানায় লিখেছো যে, আমি নাকি তোমার জীবনকে আলোকিত করেছি। চিঠিখানা পড়ে নির্বাক আমি বসে রইলাম কিছুক্ষণ। একমাত্র আমিই জানি, তোমার কাছে আমি কতটা ঋণী। আজ আমি যেখানে দাঁড়িয়ে, তার সবটাই তো তোমারই দান। কত ঝড় এলো জীবনে। কিন্তু তুমিই আমার শিখিয়েছো কী করে ঝড়ের রাতেও রত্ন কুঁড়াতে হয়। সব ঝড়ের রাতে কুড়ানো রত্ন জমিয়ে রেখেছি ক্লেমি তোমায় দেবো বলে। কবে আবার দেখা হবে আমাদের? তোমার স্মৃতি আর ভালবাসা নিয়েই আমার বেঁচে থাকার প্রতিটি নিঃশ্বাস পড়ে। কখনও বদলে যেওনা যেন।
একান্তই তোমার
চার্চিল
.
হিটলারকে লেখা মহাত্মা গান্ধীর একটি চিঠি
প্রিয় বন্ধু!
আমি আপনাকে সৌজন্যের খাতিরে বন্ধু সম্বোধন করছি না। আমি আপনার শত্রু নই। আমি আমার জীবনের ৩৩ বছর ব্যয় করেছি ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে সব মানুষের মধ্যে বন্ধুত্ব সৃষ্টির প্রচেষ্টায়। আমি আশা করি, আপনার জানার সেই আগ্রহ আছে যে, সারা বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষ আপনাকে কীভাবে মূল্যায়ন করে। আপনার মাতৃভূমির প্রতি যে ভালোবাসা ও মমত্ব তাতে আমাদের কোনো অবিশ্বাস নেই এবং আমরা এ-ও বিশ্বাস করি না যে, আপনি একজন দানব, যা আপনার প্রতিপক্ষ আপনার বিরুদ্ধে রটিয়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু আপনার কিছু লেখা ও বক্তব্য এবং আপনার কাছের লোকেদের দেওয়া আপনার সম্পর্কে মন্তব্য আমার মতো যারা শান্তিতে বিশ্বাসী তাদের কাছে আপনাকে দানবরূপে উপস্থাপন করছে। যেমন- চেকস্লোভাকিয়ার ওপর আপনার চালানো নির্যাতন, পোল্যান্ডের নারীদের ধর্ষণ এবং ডেনমার্কের ওপর আগ্রাসন আপনার প্রতি এই ধারণারই জন্ম দিচ্ছে। আপনার নিষ্ঠুরতা দেখে মনে হচ্ছে, এই সমস্ত কাজকে আপনি ধর্ম বলে জ্ঞান করেন। কিন্তু আমি শৈশব থেকে শিখে এসেছি, যে কর্ম মানুষকে কষ্ট দেয় তা ধর্ম হতে পারে না। ফলে আমি এ ক্ষেত্রে আপনার সাফল্য কামনা করতে পারছি না।
একান্তই তোমার
মহাত্মা গান্ধী, ভারত
.
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত।