মো: খলিলুর র হমান
প্রতিটি মুসলমানের জন্য কুরআন পাঠ হচ্ছে অপরিহার্য । কুরআন হচ্ছে আমাদের জীবন বিধান । Code of Life, দ্বীন । সুতরাং জীবন বিধান যদি আমরা না পড়ি, না জানি তাহলে সে অনুযায়ী কীভাবে জীবনকে পরিচালনা করব । আমাদেরকে নিরন্তর মনে রাখতে হবে যে, কুরআন কোনো মানব রচিত অপরাপর গ্রন্থের মত নয়, এটা একটা আসমানি গ্রন্থ যা যুগের পরিক্রমায় মহান অধিপতি আল্লাহ রসুলে কারিম স. এর উপর দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে বিশ্ব মানবতার মুক্তির সনদ হিসেবে অবতীর্ন করেন । সুতরাং কুরআন পাঠ আমাদের জন্য এই সেন্সে Obligatory. আমাদের জন্য must.
অন্যদিকে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে আমাদের কুরআন পড়তে হচ্ছে । নামাজে কুরআন পড়া ছাড়াও আমরা রেগুলার কোরআন পড়ি । কুরআন পাঠের মাধ্যমে আমরা জানি যে অনেক বেশি সওয়াব হয় । হাদিসে এসেছে :-কুরআনের প্রতিটি অক্ষরের জন্য একটা করে নেকি আবার সেই সওয়াব দশগুণ পরিমাণ (multiplied) বৃদ্ধি করে দেয়া হয় । আমরা মুসলমান মাত্রই অনেক বেশি সওয়াব করতে চাই । আমাদেরতো অনেক দোষ বা ভুলত্রুটি হয়ে যায় । তাই আমরা বেশি আল্লাহর দরবারে গুনাহ মাফ করতে চাই । সেহেতু আমাদের কুরআন বেশি বেশি পড়া দরকার ।
একটি হাদিসে মুমিন ব্যক্তির উদাহরণ এভাবে আসছে :-
“কুরআন তেলাওয়াতকারী মুমিন ব্যক্তি হচ্ছে ওই রসালো ফলের মত যার স্বাদও আছে, গন্ধও আছে । অন্যদিকে যে মুমিন ব্যক্তি কুরআন পড়ে না তার অবস্থা হচ্ছে একটা শুকনো ফলের মত তার ভেতরে স্বাদ আছে ঠিকই কিন্ত তার গন্ধ ও রস যেন মরে গেছে” ।
একজন মুমিনের হৃদয়ে আল্লাহর প্রতি আনুগত্য আছে ঠিকই কিন্ত সেটাকে তরতাজা রাখা, তাকে সব সময় Renew করা। প্রকৃতপক্ষে আমাদের অন্তরটাকে সব সময় কুরআন দিয়ে ভরে রাখতে হবে । অনেক সময় মনে হয় আমাদের অন্তর খালি হয়ে গেছে, আমাদের মধ্যে অনেক সময় হতাশা চলে আসে । কিন্ত এই কুরআনের পাঠ আমাদের ঈমানকে দৃঢ় করে, পরিপূর্ণ করে । মুসলমান মাত্রই যারা আমরা আল্লাহকে একমাত্র ইলাহ হিসেবে মেনে নিয়েছি তাদের বিরাট দায়িত্ব হচ্ছে সব সময় অন্ত:করণকে আল্লাহর আনুগত্য দিয়ে পরিপূর্ণ রাখা, এই কাজটি যদি আমরা নিয়মিত কুরআন পড়ি তবেই সম্ভব অন্যথায় হবেনা ।
বিদায় হচ্ছে রসুল স. বলে গেছেন, আমি তোমাদের মাঝে দুটো জিনিস রেখে যাচ্ছি, সে দুটো যদি তোমরা দৃঢ়ভাবে আঁকড়িয়ে ধর তাহলে কস্মিনকালেও পথভ্রষ্ট হবেনা । আর তা হচ্ছে কুরআন ও সুন্নাহ । সুতরাং আমাদের মুসলিম কমিউনিটির জন্য ব্যক্তিগতভাবে, As a whole এটা খুবই আবশ্যক যে কুরআন ও সুন্নাহর উপর টিকে থাকা । আর সেই টিকে থাকার জন্য কুরআন অধ্যয়ন খুবই অত্যাবশ্যক ।
বিদায় হজ্জের ভাষনে রসুলে আকরাম স. আরেকটি ইন্টারেস্টিং কথা বলেছিলেন সেটা হচ্ছে যে, উপস্থিত লোক সকল (যারা আমার কথা শুনছ) তারা আজকে যে কথা তোমাদের কাছে বলেছি সেটা অনুপস্থিত লোকদের নিকট পৌঁছে দাও। হতে পারে অনুপস্থিত লোক যারা সব শেষে শুনল তারা উপস্থিত লোকদের চেয়ে এ কথাগুলো ভালোভাবে মনে রাখবে তথা ভালোভাবে বুজবে । এটা একটি অদ্ভুত বিষয় । আসলে যে ব্যক্তি সামনা সামনি শুনল তাদের চেয়ে তার পরবর্তী জেনারেশনের আনডারেস্টিং আরো different হতে পারে, আজকে আমাদের civilization এ যে পরিবর্তন এসেছে, আমাদের technological যে উন্নয়ন, আমাদের scientific যে আবিস্কার, তার মাধ্যমে আমরা আমাদের সৃষ্টিকর্তাকে নতুনভাবে চিনেছি। আমরা দেখছি যে এত আবিস্কারের পরেও আমরা কত অসহায় আমরা এত মেডিসিন আবিস্কার করেছি অথচ ক্যানসারের মেডিসিন এখনো আবিস্কার করতে পারি নাই, আমরা মহাকাশ জয় করছি কিন্ত সাগরের নিচে কি আছে এখনো পর্যন্ত তা জানি না, আমরা পৃথিবীর এখনো অনেক কিছুই জানিনা । ফলে সিভিলাইজেশনের উন্নয়নের সাথে সাথে পবিত্র কুরআনের যে মাহাত্ম্য এটা হয়তো আমাদের কাছে আরো বড় হয়ে দেখা দিবে। আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে সেই জেনারেশন যারা একদম সামনা সামনি বসে রসুলের পবিত্র মুখ থেকে এ কুরআন শুনেছেন, আমরাতো ১৪০০ বছর পরে more advance society তে আছি আমাদের কুরআন বুঝার আন্ডারস্টান্ডিং হতে পারে আরো ডিফারেন্ট বর্তমান টেকনোলজিকাল উন্নয়নের কারনণ । সুতরাং আমরা বর্তমান প্রজন্ম যদি কুরআন না পড়ি তাহলে কুরআনের benefit কিভাবে নেব । অতএব প্রতিটি মুসলমানের উচিত প্রতিদিন কুরআন পাঠ করা, অধ্যয়ন করা, realize করা ।