প্রাণের মুক্তবুলি

নীলা আহমেদ ||

তোমার রোদেলা আকাশের হাতছানিতে
এক হলুদ বিকেলের প্রতীক্ষায় ছিলাম আমি।
স্বপ্নভাঙার সাতকাহনে জড়িয়ে ছিল আমার তৃষার্ত আত্মা।
অন্ধকারের অতলে ডুবেছিল আমার রঙিন পৃথিবী।
ধর্ষিত কোন ষোড়শীর মত।

তিলেতিলে গড়া কবিতার কথাগুলো ম্লান হয়ে মিলিয়ে যায়।
নব্বই বছরের বৃদ্ধা ঠাকুমার দৃষ্টির অগোচরে।
উত্তপ্ত প্রাণের হিমেল সমুদ্র বুক সেলফ ঢাকা পড়েছিল ।
হতাশা যন্ত্রনার বিক্ষুব্ধ ধূলোয়।
বিবর্ণ রংতুলির বীভৎস ক্যানভাসে ছিল মুক্তির আকুতি।

আত্মার খোরাক সাহিত্যকে নির্বাসনে দিয়ে,
নাম লিখেছিলাম অসুস্থতার প্রেসার ১৪০।
ভাবনাগুলো ছিল ঘূর্ণিঝড়ের দৌরাত্মে ক্ষত বিক্ষত।
বন্ধু বলতে সুনয়না আমি ছাড়া আমার কেউ নেই।

হঠাৎ শূণ্য চৈতন্যে,
কে যেন দক্ষিণ দুয়ার খুলে গেল নিরবে নিভৃতে।
এক ঝলক রোদের লুকোচুরি যেন মেঘলা আকাশে।
একী স্বপ্নে পাওয়া আশ্চর্য প্রদীপ নাকি পরশ পাথর ?
যার আলতো ছোঁয়ায় ধর্ষিতার ক্রন্দন নয়।
পূর্ণতা পেল ষোড়শীর স্বপ্নচারী কৈশোর।

ভবঘুরে মনের এলোমেলো ভাবনাগুলো।
খুঁজে পেলো এক নিরাপদ আশ্রয় ।
প্রাণের প্রদীপ বইয়ের বর্ণেরা বিষন্নতার শাপমুক্ত হয়ে,
জেগে উঠল মুক্তির আনন্দে।
আমাবশ্যার আড়াল থেকে কে যেন ছিনিয়ে আনলো।
ভরা পূর্নিমার ঠিকরে পড়া আলো।

প্রাণের নিধি ‘মুক্তবুলি’র মুক্ত শিহরণে বিমুগ্ধচিত্তে,
জেগে উঠলাম আমার হারানো আমি।
কাঁশফুল হয়ে ভেসে বেড়ালাম শত লেখকের
শরৎ মেঘের ভালোবাসার ভেলায়।
এত তৃপ্তি এত প্রশান্তি, উচ্ছাসের ক্যানভাসে ।
যেন হাজার স্বপ্নের জালবুনি।
চিরসবুজ চিরভাস্বর হোক আমার প্রাণের ‘মুক্তবুলি’।

আরো পড়ুন

বৈষম্য-বিরোধী শহিদদের স্মরণে

নয়ন আহমেদ ।। অগ্নিগর্ভা এই দেশকে জিগ্যেস করো— আমরা কারা। কারা শিমুল ফুলের মতো দাবি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *