মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
.
ভোররাত চারদিক স্তব্ধ,
নিরবতা আছড়ে পড়েছে ৩২ নম্বরের সেই নিকেতনে।
শান্ত প্রকৃতির মাঝে
ঝিরিঝিরি হিমেল হাওয়া বইছে—-
আর আলতো হাতে স্নেহমাখা শান্তির পরশ বুলিয়ে দিচ্ছে
ধানমন্ডির সেই ছোট্ট শান্তি কুটিরে।
সুশীতল পরশে,
বঙ্গপিতা পরিজন নিয়ে হৃদ্য ঘুমে আচ্ছন্ন।
.
এরই মাঝে বন্যপশুর বুনো উল্লাস,
বুটের নগ্ন আওয়াজে নিদ্রা ভাঙে বঙ্গপিতার।
ঠাসঠাস দ্রুমদ্রুম গুলির শব্দ,
এক অচেনা মুহূর্ত
এ যেন বহ্নিশত্রুর নগ্নথাবা।
.
না, এরা বহ্নিশত্রু নয়,
এদেশেরই বিশ্বাসঘাতক নরপিশাচ হায়েনার দল।
একে একে গুলি করে যাচ্ছে
যাকে সামনে পাচ্ছে তাকে—।
যেন এক মৃত্যুপুরী,
সেদিনের সেই ৩২ নম্বরের বাড়িটি—।
.
বঙ্গপিতার আদরের কামাল, জামাল, পুত্রবধূ, আত্মীয়,
এমনকি স্নেহের ছোট্ট রাসেল—।
কেউ বাদ যায়নি,
ঘাতকের রক্তচক্ষু থেকে।
.
বঙ্গমাতার হৃদয় বিদীর্ণ করলো ঘাতকের বুলেট।
বঙ্গপিতার দেহে একে একে আঠারোটি গুলি
লুটিয়ে পড়লেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি।
বাংলার মাটি রঞ্জিত হলো জনকের রক্তে!
.
ইতিহাসের কালোছায়া নেমে এলো সোনার জমিনে,
স্বাধীনতা জ্যোতি হারালো,
ঘাতকের ঘৃণ্য আস্ফালনে।
.
৩২ নম্বরের সেই বাড়িটি
আজও কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে,
অপেক্ষায় দিন গুনছে তারই মালিকের প্রত্যাবর্তনের।
গোটাজাতি আজ দন্ডায়মান তোমার প্রতীক্ষায়
ফিরে এসো হে বঙ্গপিতা—-
অলংকৃত করো বঙ্গআসন, সাজাও তোমার সোনার বাংলা।