ভাটিয়ালী রাজ আবদুল আলীম

মাহমুদ ইউসুফ

Image result for ভাটিয়ালী রাজ আবদুল আলীম

নদীর স্রোতে নৌকা ভাসিয়ে যে রাগিণীতে গান গাওয়া হয় তাকে ভাটিয়ালী গান বলে। ভাটিয়ালী একটি রাগিণীর নাম। ভাটিয়ালী নদীমাতৃক বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলের জনপ্রিয় গান। বাংলাদেশের অধিবাসীদের প্রাণের গভীর চেতনা থেকে উৎসারিত একটি বিশিষ্ট সম্পদ এই গান। নদীর মাঝি বা নদী পাড়ের জনজীবনে এই গানের প্রচলন অত্যাধিক। নদীর স্রোতের সাথে আছে জীবনের চলার এক অপূর্ব সাদৃশ্য। ভাটিয়ালী গানের সঙ্গে ভাটি, মাল্লা-মাঝি, নৌকা, দাড়, গুন, পাল, খাল, নদী, দুই পাড়ের জনবসতি প্রভৃতির প্রসঙ্গ জড়িত। সাথে থাকে গ্রামীণ জীবন, গ্রাম বাংলার মানব-মানবীর প্রেম-ভালবাসা, আবেগ-অনুভূতি, বিরহ-আকুলতা ইত্যাদির সম্মিলন। অন্যভাবে বলা যায়, ভাটিয়ালী হলো বোটসম্যানস সঙ বা মাঝিমাল্লাদের গান। আবদুল আলীম ছিলেন এই ভাটিয়ালী গানের মহানায়ক। ছিলেন পল্লীগানের একনিষ্ঠ সাধক এবং লোকসংস্কৃতির মুখপাত্র।
ভাওয়াই সম্রাট আব্বাসউদ্দীন আহমদ আর ভাটিয়ালী রাজ আবদুল আলীম বাংলার সাংস্কৃতিক জগতের দুই মহীরুহ। তাদের বাদ দিয়ে বাংলার সুর সংগীত, গানের ভুবন, বিনোদন তথা কৃষ্টি কালচার নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা অর্থহীন। গ্রামের জনমানুষের ভাষা বুলি, জবান, শব্দ ও সুরকে আধুনিক শহুরে সমাজের ভদ্র পরিবেশের নাগরিকদের মোহিত করার কঠিন কাজটিই করেছেন এই দুই আলোকিত মনীষী। ব্রিটিশ আমলের শেষকাল, পাকিস্তানি আমল এবং বাংলাদেশ আমলের সূচনালগ্নের অর্ধশতাব্দির অধিককাল বাংলার গানের রাজ্যে রাজত্ব করেছেন আব্বাসউদ্দিন আহমদ ও আবদুল আলীম। সারা বাংলায় এমন কোনো মানুষ বা ঘরবাড়ি বা পরিবার ছিলো না যেখানে তাঁদের সুর বা কণ্ঠ পৌঁছেনি। বিংশ শতাব্দির বাংলার আকাশ-বাতাস, মাঠ-ময়দান, পথ-প্রান্তর মাতোয়ারা করে তুলেছিলেন এই কণ্ঠরাজদ্বয়।

আবদুল আলীমের একাডেমিক শিক্ষা জিরো পর্যায়ে। তিনি ছিলেন জাতশিল্পী, জন্মগতভাবে শিল্পী বা বর্ন আর্টিস্ট। তিনি গানের জগতে প্রবেশ করেন ১৯৪৩ সালে। ইসলামি গান দিয়ে তাঁর সংগীত সাধনা শুরু। ১৯৭৪ সালে মৃত্যু পর্যন্ত গান ছিলো তাঁর জীবনেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। নেশা আর পেশা। তাঁর চিন্তা, মন, মনন, প্রচেষ্টা, কর্ম, সাধনা সবই ছিলো গীতকেন্দ্রিক। পল্লীগানের উন্নয়ন এবং বিশ^ দরবারে তার প্রতিষ্ঠায় তিনি কখনও কার্পণ্য করেননি। তাঁর রেকর্ডকৃত প্রথম গান দুটি হলো: ‘আফতাব ঐ বসলো পাটে আঁধার এলো ছেয়ে, চল ফিরে চল মা হালিমা আছেরে পথ চেয়ে।’ এবং ‘তোর মোস্তফাকে দেনা মাগো, সঙ্গে লয়ে যাই, মোদের সাথে মেষ চারণে ময়দানে ভয় নাই। গীতিকার ছিলেন মোহাম্মাদ সুলতান। মহাকবি কাজী নজরুল ইসলামের নির্দেশে তাঁরই সুরে গান দুটির রেকর্ড করেন মেগাফোন কোম্পানির ট্রেনার ধীরেন দাস। সময়: ইসায়ি ১৯৪২ সাল, স্থান: কলকাতা।

তবে ঘরোয়া প্রোগ্রামে আগমন ঘটে আরও কিছুদিন পূর্বে। ১৯৪২ সালে শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক এলেন কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায়। সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই মঞ্চে আবদুল আলীম গাইলেন, ‘সদা মন চাহে মদিনা যাবো।’ মঞ্চে বসে আবদুল আলীমের গান শুনে ফজলুল হক শিশুর মতো কেঁদে ফেললেন। কিশোর আলীমকে জড়িয়ে নিলেন তাঁর বুকে। উৎসাহ দিলেন, দোয়া করলেন এবং তখনই বাজারে গিয়ে পাজামা, পাঞ্জাবি, জুতা, পুটি, মোজা সব কিনে দিলেন।

রেডিওতে আবদুল আলীমের অভিষেক ঘটে ১৯৪৮ সালে। ১৯৪৭ সালে আযাদি লাভের একমাস পূর্বে তিনি কলকাতা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যান। ডিসেম্বর মাসে এলেন ঢাকায়। পরের বছর ঢাকা বেতারে অডিশন দিয়ে কৃতকার্য হন। ১৯৪৮ সালের ৯ আগস্ট তারিখে তিনি মমতাজ আলী খানের রচনা ও সুরে বেতারে প্রথম গাইলেন, ‘ও মুর্শিদ, পথ দেখাইয়া দাও- আমি ঐ পথ চিনিনা তো সঙ্গে কইরা নাও।।’

নামজাদা কবি, শিক্ষাবিদ ড. সৈকত আসগর বলেন, ‘আবদুল আলীম খুব বড়মাপের শিল্পী ছিলেন। সাধারণ অবস্থা থেকে খ্যাতির শীর্ষে আরোহণ করেছিলেন। কিন্তু জীবন নির্বাহ করেছেন অত্যন্ত সাধারণভাবে। পোশাক পরিচ্ছদে তিনি ছিলেন সাধারণ। খ্যাতির মোহে তিনি কোনদিন নিজেকে জাহির করেন নি। নিরহঙ্কারী, সদালাপী, মিষ্টভাষী এবং দরাজ দিল ছিলেন তিনি। মহান আল্লাহর কাছ থেকে পেয়েছিলেন দরাজ কণ্ঠ। সে কণ্ঠ কখনো ঔদ্ধত্যকে প্রশ্রয় দেয়নি। তিনি শুধু অমায়িক ছিলেন না, ছিলেন বিনম্র, ভদ্র এবং পরিশ্রমী পিতা হিসেবে তিনি ছিলেন দায়ীত্বশীল। স্বামী হিসেবে ছিলেন না কখনো উদাসীন। সকল দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে। সকল দিকে দৃষ্টি দিতে গিয়ে নিজের দিকে তাকাতে পারেন নি। লোক চিকিৎসার প্রতি বিশ্বাসী ছিলেন। মৃত্যুকালেও সে বিশ্বাস বিচ্যুত হননি। কেউ বলেছেন তাঁকে বাঁশের বাঁশি, কেউ বলেছেন বাংলার কোকিল, কেউ বলেছেন যাদুকণ্ঠ। আবদুল আলীমের উপমা আবদুল আলীম নিজেই। (সৈকত আসগর: আবদুল আলীম, পৃ ১৪)

আবদুল আলীম প্রধানত ভাটিয়ালী তারকা হলেও দেহতত্ত্ব, আধ্যাত্মতত্ত্ব, লালন, মুর্শিদী, গজল, বাউল, ইসলামি সংগীত, বিচ্ছেদী, মেয়েলী গীত, প্রেমমূলক ও চলচ্চিত্রের গানও গেয়েছেন প্রচুর। তবে ইসলামি সংগীত দিয়েই তাঁর শুভযাত্রা। সাফল্যের শিখড়ে আরোহন করেছেন এর ওপর ভিত্তি করে। অধিকাংশ জনগোষ্ঠী মুসলিম হবার কারণে তাদের অন্তরের অন্তস্থলে পৌঁছে গেছেন আল্লাহ রসুলের গান বা হামদ নাত দিয়ে। অথচ আজ ইসলামি গান উপেক্ষিত, অপাঙক্তেয়, ফেলনা কোনো সুর। ফিল্ম, নাটক, কনসার্ট, টিভি, বেতার, মঞ্চ ইসলামি গান পরিবেশন না করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। হায়রে দেশ হায়রে বাঙালি!
আবদুল আলীম আব্বাসউদ্দীনের গাওয়া ‘আমি ভাবি যারে,’ ‘এই সুন্দর ফুল,’ ‘বেলা দ্বিপ্রহর-আল্লা মেঘ দে’ প্রভৃতি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। আল্লা মেঘ দে পানি দে, ছায়া দেরে তুই’- আবদুল আলীমের কণ্ঠে এ গান যখন ধ্বনিত হয়েছিল বর্তমান মিয়ানমারে, তখন আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নেমেছিল। আব্বাসউদ্দিনের কণ্ঠেও গানটি বৃষ্টির কারণ হয়েছিল। (সৈকত আসগর: আবদুল আলীম, পৃ ৩৯ )
আব্বাসউদ্দিন তাঁর আত্মজীবনীতে লিখেছেন, ‘আল্লাহ মেঘ দে পানি দে- গানখানা বহুবার গেয়েছি। যতদিনই গেয়েছি। গানের শেষে ঝড়ে বক মরে ফকিরের কেরামতি বাড়ি’ উপখ্যান বা প্রবাদ বাক্য কিভাবে প্রতিফলিত হয়েছে তার একটি ঘটনার কথা মনে পড়ছে।
চীনের প্রধানমন্ত্রী মি. চৌ এন্ লাই ঢাকায় এলেন। আমরা এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গুলিস্তান সিনেমা হলে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাই। সন্ধ্যা সাতটায় নাচ-গান আরম্ভ হল। রাত নটায় অনুষ্ঠান শেষ হয়। এই অনুষ্ঠানে আমি ‘‘আল্লা মেঘ দে পানি দে’’ গানখানি পরিবেশন করেছিলাম।
অনুষ্ঠান শেষে প্রতিটি শ্রোতা হলের বাইরে এসে থমকে দাঁড়ালেন। বাইরে আরম্ভ হয়েছে ঝমঝমাঝম বৃষ্টি। অথচ প্রেক্ষাগৃহে যখন সবাই ঢুকেছিলাম তখন ছিলো তারকাখচিত নির্মল আকাশ।
মিঃ চৌ এন্ লাই ঢাকা পরিত্যাগের পূর্বমুহূর্তে বিমানঘাঁটিতে বলে গিয়েছিলেন, এদেশের অনেক কিছুই হয়ত ভুলে যাব কিন্তু স্মৃতির মনিকোঠায় একটি চিত্র বহুদিন দাগ কেটে থাকবে। সেটা হচ্ছে- তোমাদের দেশের শিল্পী গান দিয়ে আকাশের পানি আনতে পারে।’ (আব্বাসউদ্দীন আহমদ: আমার শিল্পী জীবনের কথা, পৃ ১৩৯-১৪০)

সব মিলিয়ে প্রায় ৫০০টির মতো গান রেকর্ড হয়েছিল তাঁর। আমাদের দৃষ্টিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তার তুলনায় সংখ্যায় ইহা নিতান্তই অপ্রতুল। বেতার টিভিতে রেকর্ডকৃত গানের সংখ্যা প্রায় ৮০টি। প্রথম ছায়াছবি ‘মুখ ও মুখোশ’ শুরু করে প্রায় ৫০টি ছবিতে কণ্ঠ দিয়েছেন। তাঁর সংগীত নিদর্শন: সদা মন চাহে মদিনা যাবো, আফতাব ঐ বসলো পাটে আঁধার এলো ছেয়ে, তোর মোস্তফাকে দে না মাগো, এই সুন্দর ফল সুন্দর ফুল মিঠা নদীর পানি, নবী মোর পরশমনি নবী মোর সোনার খনি, আল্লাহ মেঘ দে পানি দে, রূপালী নদীরে রূপ দেখে তোর হইয়াছি পাগল, গহিন গাংগে ধরলাম পাড়ি- গাংগের ঠিকঠিকানা পাইলাম না, ও বিদেশী নাইয়া ঝিলিমিলি পাল তুলে যাও, ভাটি গাঙ্গে ভাইটাল সুরে বাঁশি কে বাজাইয়া যাওরে বন্ধু, ও ধীরে ধীরে ভাটির গাঙ্গে ভাটির দেশে যাও তরুণী বাইয়া, উজান দেশের মাঝি ভাই ধন ভাটির দেশে যাও, সারা জীবন বাইলাম তরী সারি গান গাইয়া, সে পাড়ে তোর বসত বাড়ি এ পাড়ে তোর বাসা, শোন ওভাই মন মাঝিয়া নাও যেন যায় না ডুবিয়া, প্রাণের বন্ধুয়ারে সহে না দারুণ পরানে, নাইয়ারে নায়ে বাদাম তুইলা কোন দূরে যাও চইলা, কৈ রইলি তুই পিরিতি শিখাইয়া রে বন্ধু বিনোদিয়া, আহারে মন পাখি তুই আর কত কাল থাকবি খাঁচাতে, দীনের দরদী রে আমার নৌকা বাইয়া দেয়, মনের ভাব না জানিয়া পিরিতি কইরো না, আরে ও বন্ধু রইলে কোথায় তোরে না দেখলে মোর প্রাণ যায়, পথের দিশা দাও গো মুর্শিদ পথের দিশা দাও, থাকবো না আর এই আবেশে চলবে মনা আপন দেশে, মন পাখিরে জান নাকি কোথায় সে ঠিকানা, মনে বড় আশা ছিল যাব মদিনায় সালাম করবো গিয়া নবীজীর রওজায়, পূবাল হাওয়া পশ্চিমে যাও কাবার পথে বইয়া, ঘরে আমার মন বসে না কেমনে ঘরে রই, বই কথা কও বউ কথা কও রইলা পাখি ডাকে সকাল সাঁঝে, কে কান্দেরে নদীর কিনারায়, দাগের মত দাগ লাগাইলি রে নিঠুর কালিয়া, ও গুণের ননদ লো ও সাধের ননদ লো, ও ধান ভানিরে ঢেঁকিতে পাড় দিয়া, তোমার সবই ছিল জানা, গঙ্গায় তো রাঙ্গা ঢেউ খেলে ও বুবু জান, ও বন্ধুরে—প্রেম দরিয়ায় এত যে ঢেউ আগে না জানিতাম, তেরে ইস নদীয়ামে মুঝকো কেয়া রঙ্গ দেখায়ে, ঢেউ উঠছে সাগরে রে কেমনে পাড়ি ধরি রে, আট কুঠরি নয় দরজা কোনখানে নাই তালা ঘরখানা হয় তিনতলা, ছাড়িলাম হাছনের নাও রে, আমি ভাবি যারে পাই নাগো তারে সে যেন কতই দূরে, কেউ কোন দিন বাইন্ধো না ঘর মেঘলা নদীর চরে, ভোমরা রে গাইও না গান গুণ গুণ, মনের মানুষ হইয়া যদি মনের কথা কও, তোরে দেখলে পরে অঙ্গ জ¦লে না দেখিলে প্রাণ যায়, না না না তোমার সাথে কথা বলুম না, ওলো সুন্দরী তুই ঘরে আয়, কার কথায় কইরাছো এত মন ভারি, হলুদিয়া পাখি সোনারই বরণ, দোল দোল দোলনি রাঙা মাথায় চিড়–নি, উজান গাঙের নাইয়া, আমায় পোড়াইলিরে তোর রূপের আগুন দিয়া, উজান দেশের মাঝি ভাই ধন, ও পদ্মা নদীরে, পরে জায়গা পরের জমিন, সুজন সখিরে পার করিতে নেব আনা আনা, দুয়ারে আইসাছে পালকী নাইয়রি যাও তুলো রে তুলো মুখে আল্লাহ রসুল সবে বল ও মুখে আল্লাহ রসুল সবে বল ইত্যাদি।
আবদুল আলীমের প্রধান পরিচয় তিনি কণ্ঠশিল্পী। তিনি গীতিকার বা সুরকার ছিলেন না। অনেক গীতিকারের গানে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন, অনেক সুরকারের সুরে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন। তাছাড়া অনেক বিখ্যাত কণ্ঠশিল্পীর বিখ্যাত গানকে কণ্ঠে তুলে নিয়েছেন। আবদুল আলীম ছিলেন আবদুল লতিফের পল্লীগানের ভাণ্ডারী। তাঁর অনেক বিখ্যাত গানে তিনি কণ্ঠ দিয়েছেন। (সৈকত আসগর: আবদুল আলীম, পৃ ৪০ )

ডিশ কালচার বা আকাশ সংস্কৃতি, বিজাতীয় কৃষ্টিকালচার, বলিউড বা হিন্দি ফিল্ম, কলকাতার বাংলা সংগীতের কুপ্রভাবে হারিয়ে যাচ্ছে আবদুল আলীমের লোকগীতি। বিলুপ্ত হচ্ছে পল্লীগীতি এবং আবহমান বাংলার চিরায়ত সম্পদ। ইহা দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গলজনক নয়। আবদুল আলীমের প্রতি উদাসীনতা আমাদেরকে আশাহত করে। ইহা শুধু দুঃখজনক নয়, শেকড়কে ভুলে যাওয়াও বটে। কেবল জন্ম-মৃত্যু বার্ষিকী পালন নয়; বরং সুখবর হবে সেটাই যখন আমরা দেখব মানুষের মুখে মুখে ফিরছে আবদুল আলীমের গান। এ বিষয়ে সরকার, গণমাধ্যম, শিল্পী, সংগীতজ্ঞ, দর্শক-শ্রোতা সবারই দায় রয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা আধুনিক গায়ক, উত্তরাধুনিক শিল্পীর কণ্ঠে পুনর্জীবিত হোক আবদুল আলীমের সংগীত সাধনা। বাংলাদেশিদের মানব হৃদয় উদ্বেলিত হোক, মুর্চ্ছিত হোক ফোক গানের সুরে। পুন:আবাদ হোক ইমান ও তাওহিদের গানের সুরের। আর দূর হোক বিদেশি ভারতীয় ভালচারদের কালচারাল আগ্রাসন।

হদিসঃ
১। সৈকত আসগর: আবদুল আলীম ১৯৩১-১৯৭৪, বাংলা একাডেমি ঢাকা, প্রথম প্রকাশ জুন ১৯৯৭
২। আব্বাসউদ্দিন আহমদ: আমার শিল্পী জীবনের কথা, হাসি প্রকাশনী, বাংলাবাজার, ৩৪ নর্থব্রুক হল রোড, ঢাকা-১১০০, দ্বিতীয় মুদ্রণ, ফেব্রুয়ারি ২০০২
৩। সংস্কৃতি ডট কম ও বিভিন্ন ওয়েবসাইট
৪। উইকিপিডিয়া; ১৭ জুলাই ২০১৭