আযাদ আলাউদ্দীন ।।
২০০৭ সালের নভেম্বর মাসে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডর দক্ষিণ উপকূলে আঘাত হানার দুদিন আগের কথা। সহকর্মি-বন্ধু, সাংবাদিক প্রাচুর্য রানা (বর্তমানে চ্যানেল ২৪) সহ বরিশাল বেতারে গিয়েছিলাম সংবাদ সম্পাদনার কাজে। নিউজ রুমে ঢুকতেই অফিস সহকারী মামুন জানালো আপনাদের আজ তেমন কষ্ট করতে হবেনা। কেন ? প্রশ্ন করতেই তার জবাব, ‘আজ আবহাওয়ার নিউজই প্রায় ৬০ লাইন’। উল্লেখ্য- সংবাদ অনুবাদক হিসেবে তথকন আমরা বরিশাল বেতারে ৫ মিনিটের স্থানীয় সংবাদের জন্য প্রায় ১৩০ লাইন সংবাদ সম্পাদনা করতাম আমরা।
পরে খোজ নিয়ে নয়াদিগন্ত এবং প্রথম আলো পড়ে জানলাম- চার নম্বর সিগনাল চলছে, ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’। ঘূর্ণিঝড়ের এরুপ বিচিত্র নামকরণ নিয়ে প্রাচুর্য রানার সাথে বেশ মজা করছিলাম। বললাম- চার নম্বর সিগনাল অথচ দিব্যি রোদ্র এবং ফকফকা আবহাওয়া, এটা কেমন কথা। রানা তার সাধ্যমত কাগজে ম্যাপ একে আমাকে বোঝানোর চেস্টা করলো সাইক্লোন, হেরিকেন কিংবা সুনামি সাগরের ভেতর থেকে কিভাবে ঘূর্ণায়মান আকারে আঘাত হানে। আমি বললাম কয়েকদিন আগের সুনামি সংকেতের মতো হবেনাতো। প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে রানা বললো, এই রোদ্রের মধ্যে অর্থাৎ শুস্ক আবহাওয়ার মধ্যে যদি সিডর আঘাত হানে তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান হবে অনেক বেশি। তার মতে এখন বৃষ্টি দরকার। এভাবে কথার ফাকে ফাকে কাজ শেষ করে চলে আসলাম বাসায়।
১৫ নভেম্বর বিকেল থেকেই দেখছি আকাশ মেঘলা, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। রাতে বৃষ্টির পরিমান আরও বাড়ে। পরদিন বৃহস্পতিবার বৃষ্টির কারনে বেতারে যেতে পারিনি। রানা একাই ডিউটি করে বাসায় ফিরেছে। বিকেলের দিকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে আসছে দেখে নয়াদিগন্তের তৎকালীন সহকর্মি সাংবাদিক খালিদ সাইফুল্লাহকে আবহাওয়ার ফলোআপ নিউজ পাঠাতে বলি। তিনি যথারীতি নিউজ পাঠিয়ে দেন। রাত আটটার দিকে আমার সাংবাদিকতার গুরু দৈনিক নয়াদিগন্তের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সালাহউদ্দিন বাবর ভাইয়ের ফোন। আযাদ তোমাদের এলাকার পরিস্থিতি কি? বললাম নিউজতো পাঠিয়েছি। এরপর তিনি বললেন- রাতে এলার্ট থেকে টাইম টু টাইম খবরাখবর জানাবে। পরিস্থিতি বোধহয় বেশি ভালো নয়। এর কিছুক্ষণ পরই বরিশালের সকল পয়েন্টের বিদ্যুত চলে যায়। রাত নয়টা পেরিয়ে দশটা এগারটা বেজে যায়। জেলা- উপজেলা সংবাদদাতাদের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার চেস্টা করি। স্থানীয় পত্রিকাগুলোতে ফোন করি। সবাই বলছে পরিস্থিতি ভালো নয়। গ্রীড বিপর্যয়ের কারনে কোন পত্রিকাই কাল বের হচ্ছেনা। বরিশাল বেতারের সকল স্টাফের ছুটি বাতিল করে রাতেও সতর্কতা সংকেত প্রচার করা হয়। কুয়াকাটায় আমাদের সংবাদদাতাকে ফোন করতে গিয়ে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেল। এরপর ফোন করলাম যুগান্তরের নাসিরউদ্দিন বিপ্লব কে। তিনি ফোন রিসিভ করেই বললেন- ভাই পরিস্থিতি খুবই খারাপ, এতই ভয়াবহ যে এই মূহুর্তে কথা বলতে পারছিনা। মানুষ চারদিকে দিকবিদ্বিগ ছুটোছুটি করছে। এভাবে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা সংবাদদাতাদের সাথে কথা বলে সার্বিক পরিস্থিতির খোঁজখবর নিয়ে রাখি।
রাত এগারটার দিকে তৎকালীন চিফ রিপোর্টার তৌহিদ ভাইর ফোন- পরিস্থিতি কি? তাকে সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে মোটামুটি আইডিয়া দেই। তখন তিনি বলেন, সব গুছিয়ে রাখেন প্রথম সংস্করণ ছাপা হচ্ছে, দ্বিতীয় সংস্করনণ সর্বশেষ পরিস্থিতির খবর ধরাতে হবে। রাত ১২টার দিকে বার্তা সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলী ভাইর ফোন। তাকে খবরাখবর জানাতেই তিনি বললেন হামিমের কাছে বিস্তারিত বলেন। ওই রাতে অনির্ধারিত ‘লেটনাইট’ ডিউটি করছিলেন সিনিয়র রিপোর্টার হামিম উল কবির। তার কাছে মোবাইল ফোনে সর্বশেষ সংবাদ জানাই। প্রতিকূল পরিস্থিতির কারনে পরদিন বরিশালে কোন পত্রিকা আসেনি। তবে বরিশালের সিনিয়র সাংবাদিক আনিসুর রহমান স্বপন ভাইয়ের ইন্টারনেটের মাধ্যমে (জেনারেটরে চালু করা) জানতে পারি ওই সংবাদ নয়াদিগন্তের দ্বিতীয় সংস্করনে ছাপা হয়েছে।
পরদিন সকালে মোবাইলে চার্জ নেই। পড়লাম মহাসমস্যায়। তবুও বেরিয়ে পড়ি নিউজের সন্ধানে। নয়াদিগন্তের তৎকালীন বরিশাল ব্যুরো চিফ কামাল মাছুদুর রহমানের সাথে অ্যাসাইনমেন্ট ভাগ করে নিলাম। অপর সহকর্মি খালিদ সাইফুল্লাহ মোটরসাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন ছবির সন্ধানে।
চতুর্দিক থেকে খবর আসছে এখানে দুজন ওখানে পাচজন মারা গেছে। এভাবে আসতে আসতে শুধুমাত্র বরিশাল জেলাতেই প্রথমদিন ৮২ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছি। অন্যান্য জেলা মিলিয়ে এ মৃতের সংখ্যা ছিল ৩ শতাধিক। পরদিন খবর দিলাম সহস্রাধিক। এভাবে বাড়তে থাকে মৃতের সংখ্যা। দুদিন পর লিড নিউজ- মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। আসলে প্রথমে আমাদের বোঝার উপায় ছিলনা সিডরের এই ভয়াবহতার চিত্র। ঝড়ের একদিন পর ঢাকা থেকে ছুটে এলেন নয়াদিগন্তের প্রধান আলোকচিত্রী শফিউদ্দিন বিটু। খালিদ ভাই তাকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়লেন প্রত্যন্ত এলাকায়।
সিডর আঘাত হানার পরবর্তী দু’দিন কেটেছে চরম দূর্বিসহ অবস্থায়। বিদ্যুত নেই, পানি নেই, ফ্যাক্স, কম্পিউটার সব বন্ধ। নিউজ দেই মোবাইল ফোনে। কিন্তু ফোনে নিউজ দিয়ে তৃপ্তি পাইনা। এদিকে ন্যাশনাল ডেস্কে কর্মরত সাব এডিটরগণ সিডর পরবর্তী কয়েকদিন নিউজের ট্রিটমেন্ট দেন গণহারে। অর্থাত উপদ্রুত এলাকার সব নিউজ একত্র করে লিড নিউজ তৈরী করাই যেন ছিল তাদের কাজ! এসময় কয়েকটি ফিচার আইটেমও লীড নিউজের ‘লেজ’ হিসেবে ছাপা হয়েছে। যাকে আমরা স্থানীয় পত্রিকার ভাষায় বলি ‘দিকে দিকে’। যেমন বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে একই বিষয়ের সবগুলো নিউজ একসাথে ট্রিটমেন্ট দেয়া হয়। তখন অনেক প্রতিনিধি বলেন- ভাই, আমার বিজয় দিবসের নিউজটাতো ছাপা হলোনা ! তখন আমরা বলি ‘দিকে দিকে’র মধ্যে খোঁজেন। সিডর পরবর্তী কয়েকদিন আমরাও আমাদের সব খবর ‘দিকে দিকে’র মধ্যে খুঁজে পেয়েছি। সে যাই হোক-
১৮ নভেম্বর রোববার রাতে ঢাকা থেকে ফোন করেন আমাদের তৎকালীন বিশেষ সংবাদদাতা আবু সালেহ আকন। তিনি জানান সকালে বরিশাল আসছি। ঘুর্ণি উপদ্রুত এলাকায় যাবো, আপনাকে আমার সাথে থাকতে হবে। ভোরে এসে পৌছলেন তিনি। স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক বরিশাল বার্তার তৎকালীন স্টাফ রিপোর্টার (বর্তমানে রূপালী বার্তা অনলাইন নিউজ পোর্টালের বার্তা সম্পাদক) জাকিরুল আহসান সহ মোটর সাইকেলে রওয়ানা করলাম বরগুনার আমতলী-তালতলীর দিকে। এত দীর্ঘ পথ মোটরসাইকেলে পাড়ি দেয়া দু:সাধ্য হবে বিধায় মোটর সাইকেল রুপাতলী বাসস্টান্ড এলাকায় রেখে গাড়িতে করেই আমতলী পৌছলাম আমরা। সেখানে অপেক্ষমান ছিলেন আমাদের তৎকালীন আমতলী সংবাদদাতা সাফায়েত আল মামুন ও দৈনিক ডেসটিনির সাংবাদিক পরিতোষ কর্মকার।
সেখানে গিয়ে তালতলী এলাকার ম্যাপ দেখে ভাড়ায় চালিত দু’টি মোটর সাইকেল নিয়ে ছুটলাম তালতলীর পথে। পথে পথে সিডরের ধ্বংসের চিহ্ন দেখে বিস্মিত হলাম। তালতলীর জয়ালভাঙ্গা, তেতুলবাড়িয়া, চরপাড়া এলাকার মানুষের যে করুন চিত্র দেখেছি তার তেমন কিছুই সেদিন লেখায় প্রকাশ করতে পারিনি। পারবোই বা কিভাবে? আপডাউন প্রায় একশ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে নানা চড়াই উতড়াই মাড়িয়ে সংবাদ সংগ্রহ করে আমরা যখন তালতলী থেকে আমতলী এসে পৌছলাম তখন সন্ধ্যা ৬টা। আমতলী এসে দেখি কোথাও বিদ্যুত নেই। ছিন্নভিন্ন হয়ে আছে বিদ্যুত ব্যবস্থা। কতদিনে ঠিক হবে তারও কোন ঠিকঠিকানা নেই।
আমতলীর একটি দোকানে গিয়ে দেখা গেল সাংবাদিকদের ভীড়। খোজ নিয়ে জানা গেল, একটি জেনারেটর ভাড়া করা হয়েছে। কম্পিউটারে জিপিআরএস মডেম লাগিয়ে নিউজ সেন্ড করা হবে। সেখানে আরও আছেন দৈনিক আমার দেশের তৎকালীন সিনিয়র রিপোর্টার (বর্তমানে দেশ রূপান্তর) আলাউদ্দিন আরিফ ও ফটো সাংবাদিক সুমন ভাই সহ অন্যরা। তারা এসেছেন ঢাকা থেকে। জেনারেটর চালিয়ে কম্পিউটারে নিউজ লেখার কাজ চলছে। আমরা আছি সিরিয়ালে। এরই মধ্যে কে যেন হঠাত করে জেনারেটরের পাওয়ার দিলেন বাড়িয়ে । কিন্তু লোড সামলাতে না পেরে বিকট শব্দে কম্পিউটারের মনিটর বিস্ফোরিত হয়ে যায়। ভাগ্যিস কোন হতাহত হয়নি। এভাবেই নিউজ পাঠানোর সব প্রক্রিয়া শেষ ।
পড়লাম মহাসমস্যায়। ছবি নিউজ পাঠাই কিভাবে? সালেহ ভাই বললেন, আপনি ক্যামেরা নিয়ে পটুয়াখালী চলে যান। সেখান থেকে ছবি মেইল করেন । আর আমি মোবাইল ফোনে ঢাকা অফিসে নিউজ দিচ্ছি। তখন রাত আটটা। আর আমতলী থেকে পটুয়াখালীর দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেলও পাওয়া যাচ্ছেনা। কারণ পথে ডাকাতের ভয়। এর কয়েকদিন আগে যাত্রীবেশি কয়েজন ডাকাত এক মোটর সাইকেল চালককে গলাকেটে হত্যা করে মোটর সাইকেল নিয়ে পালিয়ে গেছে। এ কারনে এখানকার মোটর সাইকেল চালকরা রাতে ভাড়ায় মোটর সাইকেল চালান না। কি আর করা, কলাপাড়া-পটুয়াখালী মহাসড়কের পাশে দাড়িয়ে আছি, যদি কোন বাস পাওয়া যায়। এরইমধ্যে ফোন করলেন বরিশালের এনজিও দিশা বাংলাদেশর তৎকালীন চেয়ারম্যান জিয়াউল হক। বিভিন্ন বিষয়ে আলাপের পর তিনি বললেন আপনি কোথায়? আমি বললাম আমতলী বাসস্টান্ডের পাশে রাস্তায় দাড়িয়ে আছি। পটুয়াখালী যাবো তবে বাস পাচ্ছিনা। জিয়া ভাই বললেন- আমরা কলাপাড়া থেকে মাইক্রোবাসে আসছি, পথে। আপনি সেখানেই দাড়ান, আমরাও পটুয়াখালী যাবো। আপনি আমাদের সাথে যেতে পারবেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই মাইক্রো কলাপাড়া থেকে আমতলী এসে পৌছলো। সেখান থেকে সোজা ৪০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পটুয়াখালী শহরে এসে পৌছলাম। তখন রাত পৌনে নয়টা। পথে মাইক্রোর মধ্যে বসেই পটুয়াখালী সংবাদদাতা গোলাম কিবরিয়া ভাইকে জানালাম- যে করেই হোক অন্তত দু’একটি ই মেইলের দোকান খোলা রাখতে। সারাদিনের সব পরিশ্রম মাটি হয়ে যাবে যদি গুরুত্বপূর্ন এসব ছবি এবং নিউজ পাঠাতে না পারি। অনেক চেষ্টার পর ইন্টারনেটের লাইন পাওয়া গেল। মেইল যখন সেন্ড হলো তখন রাত সাড়ে ৯টা। পরদিন আমার পাঠানো জয়ালভাঙা সংলগ্ন পায়রা নদীর তীরে ত্রাণের জন্য অপেক্ষমান শত শত মানুষের সেই ছবি নয়া দিগন্তের প্রথম পাতায় লিড হলো। সঙ্গে সালেহ ভাইর পাঠানো নিউজ।
সিডরের আঘাতের পরবর্তী প্রথম এক সপ্তাহ এভাবে উপকূলের পথে পথে কাটিয়েছি সংবাদ সংগ্রহের জন্য। দেশ বিদেশের সাংবাদিকরাও ছুটে এসেছেন ক্ষতিগ্রস্থ এ এলাকায়। তারা উপকূলের পথে পথে কাটিয়েছেন দীর্ঘ সময়। এসংক্রান্ত একটি সংবাদ ছিল এরুপ- ‘উপকূলের পথে পথে দেশবিদেশের সাংবাদিকরা’। (তথ্যসূত্র – দৈনিক নয়াদিগন্ত ২৪ নভেম্বর ২০০৭)
এরপরবর্তী সপ্তাহ কেটেছে নয়াদিগন্তের ত্রাণ বিতরন নিয়ে। নয়াদিগন্তের তৎকালীন নির্বাহী সম্পাদক সালাহউদ্দিন বাবর ভাই জানালেন- দূর্গত এলাকায় নয়াদিগন্ত ত্রাণ তহবিলের ত্রাণ বিতরণ করতে হবে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে ত্রাণ পায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, সেখানে সবকিছু সমন্বয়ের দায়িত্ব তোমার। এ ক্ষেত্রে তৎকালীন ম্যানেজার পার্সোনাল সাইফুল ইসলাম সুজনের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করো। ম্যানেজার (এইচআরডি) সাইফুল ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করলাম। তিনি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিলেন। ঢাকা থেকে আসলেন সহকারি ম্যানেজার (প্রশাসন) মুহাম্মদ নূরুল ইসলাম (বর্তমানে ফ্রান্স প্রবাসী), সিকিউরিটি ইনচার্জ লোকমান পাঠান সহ অন্যরা। সহকর্মি খালিদ ভাইকে সহ সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সংবাদদাতাদের সাথে যোগাযোগ করি। ঢাকা থেকে ত্রাণভর্তি ট্রাক আসে বরিশালে। বরিশাল থেকে পিকআপ ভ্যান কিংবা লঞ্চযোগে এসব ত্রাণ পৌছে দেয়া হয় প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কাছে। এ ক্ষেত্রে স্থানীয় সংবাদদাতা ও বরিশাল প্রিয়জন সমাবেশের সদস্যরা আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করেছেন।
এদিকে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের ফাকে ফাকে কয়েকটি মানবিক ফিচার লিখেছি। পাঠকের ব্যাপক সাড়াও পাওয়া গেছে । ২ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখের দৈনিক নয়াদিগন্তের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত হয়েছে- পাথরঘাটার নব্বই বছরের বৃদ্ধ ইসমাঈলের বেচে থাকার কাহিনী ‘মোর জামাইরে বাঘে খাইছে’। একই বছরের ৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়েছে গলাচিপার চরবিশ্বাসের শিশু রুবেলের ঘর ভাঙ্গার কাহিনী- ‘ডেকসোডা না থাকলে হেইদিন মোরা মইররাই যাইতাম’। এসব রিপোর্টের পর দেশ-বিদেশের মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। বৃদ্ধের জন্য সহায়তা পাওয়া গেছে, শিশু রুবেলের ভেঙ্গে পড়া ঘর উত্তোলনের ব্যবস্থা হয়েছে। মানুষের এরুপ প্রতিক্রিয়া পাওয়ার পর বাস্তবিকভাবেই অনুভব করছি- আসলেই ‘মানুষ মানুষের জন্য’। ##
আযাদ আলাউদ্দীন
বরিশাল ব্যুরো চিফ
দৈনিক নয়া দিগন্ত
০১৭১২১৮৯৩৩৮
[email protected]
2 comments on “সিডর সাংবাদিকতা”
রুদ্ধশ্বাসে পরিশ্রমী একজন সাংবাদিকের ডায়েরি পড়লাম। মহৎ কাজ এভাবেই অতীতকে জীবন্ত করে। এগিয় যাও বন্ধু। শুভকামনা থাকলো।
মামা, “বুশের ত্রাণ মুই খামুনা” সেই নিউজটা কোথায়?