মুক্তবুলি প্রতিবেদক ।।
পরিবারের সবাই ব্যবসা-বাণিজ্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত, ব্যতিক্রম শাহিন হাওলাদার। তিনি বেছে নিলেন সাংবাদিকতা পেশা। বাবা-মা, ভাই-বোন সবাই তাকে বোঝাতে চেষ্টা করলেন সাংবাদিকতা পেশার ভবিষ্যৎ নেই, ব্যবসায় হাল ধরো। কিন্তু শাহিন হাওলাদারের মনের গভীরে লুকিয়ে ছিলো সাংবাদিকতা পেশার প্রতি অগাধ ভালোবাসা। সে কারণে তিনি বেছে নিলেন সাংবাদিকতা পেশা।
২০০৬ সালে নিজের জন্মস্থান ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাকিমুদ্দিন বাজার থেকেই শুরু করলেন সাংবাদিকতা। শাহিন হাওলাদারের বড় ভাই বিশিষ্ট্য ব্যবসায়ী ও সাংস্কৃতিক সংগঠক সাখাওয়াত হোসাইনের বন্ধু- আযাদ আলাউদ্দীন তখন দৈনিক বরিশাল বার্তা পত্রিকার বার্তাসম্পাদক হিসেবে কর্মরত। শাহিন যোগাযোগ করলেন সাংবাদিক আযাদ আলাউদ্দীনের সাথে, জানালেন তার সাংবাদিক হওয়ার আগ্রহের কথা।
আযাদ আলাউদ্দীন বরিশাল থেকে তাকে সাংবাদিকতা বিষয়ক কিছু গাইডলাইন দিয়ে নিউজ পাঠানোর অনুমতি দিলেন। শুরু হলো শাহিন হাওলাদারের সাংবাদিক জীবন। এলাকার প্রান্তিক মানুষের সমস্যা-সংকট আর দুর্ভোগের কথা লিখতে থাকলেন দৈনিক বরিশাল বার্তা পত্রিকায়। তখন তথ্য-প্রযুক্তির এতো বিকাশ ছিলোনা। হাতে লিখে ফ্যাক্স করতেন অথবা কুরিয়ারে লেখা পাঠাতেন পত্রিকা অফিসে। সেইসব লেখার সংশ্লিষ্ট ছবিসহ তা ফিচার আকারে বাইনেমে ছাপা হতো ‘বরিশাল বার্তা’ পত্রিকায়। এক পর্যায়ে নিজের কাজের মূল্যায়নের স্বীকৃতি হিসেবে বোরহানউদ্দিন প্রেসক্লাবের সদস্য পদ লাভ করেন তিনি।
কয়েকবছর এভাবে কাজ করার পর ঢাকায় যান সাংবাদিক শাহিন হাওলাদার। সেখানে গিয়ে পর্যায়ক্রমে বেশ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন তিনি। এরপর যোগ দেন জাতীয় দৈনিক সময়ের আলো পত্রিকায়। অর্থনৈতিক বিটে কাজ করার দায়িত্ব পান। সেখানে তিনি একের পর এক আলোচিত রিপোর্ট করে আলোচনায় আসেন। বিশেষ করে অর্থনৈতিক বিটের সিনিয়র রিপোর্টারদের দৃষ্টিতে আসেন শাহিন হাওলাদার। দেশের আর্থিক খাতের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে প্রকাশিত শাহিন হাওলাদারের অনুসন্ধানী প্রতিবেনগুলো সর্বমহলে প্রশংশিত হয়। অর্থমন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অর্থনৈতিক সেক্টরের এসব লিড নিউজ শাহীন হাওলাদারকে ব্যাপক পরিচিত করে তোলে।
এরই মধ্যে বাংলাদেশের পেশাদার সাংবাদিকদের অনন্য সংগঠন ‘ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিট‘র সদস্য পদ অর্জন করেন শাহিন হাওলাদার। সর্বশেষ তিনি ভালো বেতন-ভাতা ও সুযোগ সুবিধার অফার পেয়ে দৈনিক সময়ের আলো ছেড়ে যোগ দেন পেশাদার গণমাধ্যম ইংরেজি দৈনিক `দ্যা বিজনেস পোস্ট’ পত্রিকায়। এই পত্রিকায়ও বেশ কিছু আলোচিত রিপোর্ট করেন তিনি। তাঁর কাজে মুগ্ধ হয়ে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ এবার তাকে আমেরিকার ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সম্মেলনের নিউজ কভার করার দায়িত্ব প্রদান করেন। বর্তমানে তিনি ওয়াশিংটনের সেই সম্মেলন থেকে সরাসরি ঢাকার ‘দ্যা বিজনেস পোস্ট’ পত্রিকায় নিয়মিত সংবাদ প্রেরণ করছেন।
মুক্তবুলির সাথে একান্ত আলাপাচারিতায় সাংবাদিক শাহিন হাওলাদার ওয়াশিংটন থেকে জানান, আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক গ্রুপ থেকে বাংলাদেশের অনেক সাংবাদিক আমন্ত্রণ পেলেও অনেক যাছাই-বাছাই ও ইন্টারভিউ শেষে বাংলাদেশের মাত্র ১৫ জন সাংবাদিককে এই সম্মেলনের নিউজ কভার করার ভিসা প্রদান করেছে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
প্রসঙ্গত, মুক্তবুলি ম্যাগাজিনে প্রকাশিত লেখা মূল্যায়নের ভিত্তিতে সেরা লেখক মনোনয়ন জুরিবোর্ডের অন্যতম সদস্য সাংবাদিক শাহীন হাওলাদার। কবি আল হাফিজের নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট জুরিবোর্ডের অপর সদস্য হলেন- মুক্তবুলি’র প্রকাশক ও সম্পাদক আযাদ আলাউদ্দীন।
শিক্ষাজীবন
সাংবাদিক শাহিন হাওলাদার ২০০৪ সালে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কুতুবা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও ২০০৬ সালে মনিরাম হাফিজ ইব্রাহিম কলেজ থেকে এইচএসসি উত্তীর্ণ হন। এরপর ভোলা সরকারি কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞানে অনার্স এবং ঢাকা কলেজ থেকে একই বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
কৃতজ্ঞতা
সাংবাদিক শাহিন হাওলাদার তাঁর কর্মজীবনের এই সাফল্যের জন্য মহান আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমি সবসময় চেষ্টা করি সকল ধরণের লোভ-লালসার উর্ধ্বে থেকে গণমানুষের জন্য কাজ করতে। সাংবাদিকতার প্রতি ডেডিকেশনই আমাকে সাফল্যের পথে নিয়ে এসেছে। তিনি বলেন- পারিবারিকভাবে আমার বাবা ও বড় ভাই সাখাওয়াত হোসাইনের প্রেরণা এবং যেসব পত্রিকায় কাজ করেছি বা এখনো করছি- সেই গণমাধ্যমের বসদের কাছে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
১৩ অক্টোবর ২০২২ তারিখে আমেরিকার ওয়াশিংটন থেকে পাঠানো এবং ঢাকার ‘দ্যা বিজনেস পোস্ট’ পত্রিকায় প্রকাশিত শাহিন হাওলাদারের লেখা প্রতিবেদন।
Thanks for covering the informative news!! Its really appreciative honour for a journalist.
জনাব শাহীন হাওলাদার এর পরিবার বংশগতভাবে ব্যবসয়ী হলেও তিনি সাংবাদিকতায় যতদূর এগিয়েছেন সেটা সম্পুর্ন তার নিজস্ব মেধা ও যোগ্যতা বলে। বোরহানউদ্দিন প্রেসক্লাব এর পক্ষ হতে আমি তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।