সাহিত্য সংস্কৃতি বাদ দিলে জীবন পরিপূর্ণ হয় না

আযাদ আলাউদ্দীন ।।

দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদের আহবায়ক আ.জ.ম ওবায়দুল্লাহ বলেছেন- মানুষের জীবন থেকে সাহিত্য-সংস্কৃতি বাদ দিলে কোন জীবন পরিপূর্ণ হবে না, মানুষের বিশ্বাস ও চেতনার সাথে মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে সাহিত্য এবং সংস্কৃতি। প্রতিটি দেশের মানুষের বিশ্বাস ও ঐতিহ্যের আলোকে গড়ে ওঠে তার সংস্কৃতি, কিন্তু বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের বিশ্বাসের মূলে আঘাত হেনে ভিনদেশী অপসংস্কৃতি আমাদের উপর চাপিয়ে দেয়ার জন্য নিরন্তর অপচেষ্টা চলছে। এবিষয়ে আমাদেরকে আরো সচেতন ও সজাগ থাকতে হবে।

২৬ জুলাই সকাল ০৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত জুম অনলাইনে অনুষ্ঠিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন- অপসংস্কৃতির মোকাবেলায় নিজস্ব সাহিত্য-সংস্কৃতি ও তাহযীব-তমদ্দুনকে আকড়ে ধরেছিলেন বলেই কবি ফরররুখ আহমদ এবং আল মাহমুদরা কোন বিত্ত বৈভব আর ক্ষমতার কাছে আপোষ করেন নি। আমাদেরকেও তাদের মতো দৃঢ় চেতনা ধারন করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের কবিতার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন- ‘উহারা প্রচার করুক হিংসা, বিদ্বেষ আর নিন্দাবাদ, আমরা বলিব সাম্য শান্তি এক আল্লাহ জিন্দাবাদ।

বরিশাল সংস্কৃতিকেন্দ্রের সভাপতি প্রফেসর মাহমুদ হোসাইন দুলালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট গীতিকার ও সুরকার তাফাজ্জল হোসাইন খান। তিনি বলেন- করোনাকালীন এই সময়ে আমাদের শিশুরা ঘরে বন্দি, তাদের স্কুল বন্ধ, তারা খেলার মাঠে যেতে পারছে না- এমন পরিস্থিতিতে তাদের উপযোগী নতুন নতুন কন্টেন্ট দিতে না পারলে শিশুরা বিপথগামী হয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এসবের মোকাবেলায় বরিশাল ভাটি অঞ্চলের সাংস্কৃতিক কর্মিদের স্বকীয়তা নিয়ে ভাটিয়ালী, পল্লীগীতি, লোকগীতি, আঞ্চলিক সহ সৃষ্টিশীল নানা সাংস্কৃতিক কাজ করে যেতে হবে।

বরিশাল সংস্কৃতিকেন্দ্রের পরিচালক আযাদ আলাউদ্দীনের সঞ্চালনায় এই ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত শিল্পী হিসেবে আবৃত্তি করেন সাইমুম শিল্পীগোষ্ঠীর সাবেক পরিচালক মোস্তাগিছুর রহমান মোস্তাক, সংগীত পরিবেশন করেন প্যানভিশন টেলিভিশনের উপস্থাপক শিল্পী ওবায়দুল্লাহ তারেক।

বক্তব্য রাখেন দেশীয় সাংস্কৃতিক সংসদ বরিশাল অঞ্চলের সংগঠক ফখরুদ্দিন খান রাজী, ভোলা জেলা সমন্বয়ক হাসান তারেক হাওলাদার, বরগুনা জেলা সমন্বয়ক মাওলানা আবদুল মান্নান, পিরোজপুর জেলা সমন্বয়ক অধ্যাপক সোহরাব হোসেন জুয়েল, ঝালকাঠি জেলা সমন্বয়ক মো. ফরিদুল হক, পটুয়াখালী জেলা সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ খান শামীম, বরিশাল জেলা পূর্ব সমন্বয়ক অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম ও বরিশাল জেলা পশ্চিম শাখা সমন্বয়ক হাফেজ সাইফুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে কোরাস সংগীত পরিবেশন করেন বরিশালের ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন হেরাররশ্মি শিল্পী গোষ্ঠী ও ভোলার আলহেরা শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা। আইটি নির্দেশনা প্রদান করেন সমন্বিত সাংস্কৃতিক সংসদের (সসাস) সাবেক নির্বাহী পরিচালক হাসান আতিক। একক সংগীত পরিবেশন করেন বরিশাল সাংস্কৃতিক সংসদের সহসভাপতি মো. আবদুল হাই, নির্বাহী সদস্য জহিরুল ইসলাম, আমান উল্লাহ আমান, শহীদুল্লাহ হাদী প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা ‘ফররুখ জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত এক হাজার পৃষ্ঠার ‘স্মারক’ গ্রন্থটি সর্বস্তরের পাঠকের কাছে পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়। অনুষ্ঠানে বরিশাল অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার দেড়শতাধিক সাংস্কৃতিক কর্মি, শিল্পী ও সংগঠক অংশগ্রহণ করেন।