ডা. এহসানুল কবীর
# প্রথম_উপদেশ
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীরা পেটের উপর ভর করে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন বা সামান্য কাত হয়ে বাহু বা হাতের উপর ভর করে। আমরা সচরাচর যেভাবে ঘুমাই অর্থাৎ পিঠের উপর ভর করে না ঘুমানোই শ্রেয়।
ভেন্টিলেশন ইন প্রোন বা উপুর হয়ে শোয়া অবস্থায় ফুসফুসের অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ে ৷ এতে আপনার হাইপোক্সিক বা অক্সিজেনের ঘাটতি হওয়ার আশংকা কমে আসে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের পরিমানও বাড়ে ৷ অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম (এআরডিএস) বা তীব্র শ্বাসকষ্টের লক্ষণগুলোর চিকিৎসায়ও প্রোন ভেন্টিলেশন অনেক বড় ভূমিকা রাখে।
# দ্বিতীয়_উপদেশ
করোনায় আক্রান্ত হলে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে।
একটা কথা ভুলে গেলে চলবে না করোনাভাইরাস যখন ফুসফুসে আক্রমণ করে, তখন ফুসফুসের ডিপেন্ডেন্ট পার্ট বা নিচের অংশ শক্ত হতে থাকে। বায়ুথলিগুলো আর অক্সিজেন বহন করতে পারেনা ৷ যেটুকু করতে পারে সেটুকুও ধীরে ধীরে কমে আসতে থাকে।
শরীরের সংবেদনশীল অংগগুলোকে (ব্রেইন, লিভার, কিডনী) এই সামান্য অক্সিজেনের সাহায্যে টিকে থাকতে হয়। এ অবস্থায় আপনি যদি দুশ্চিন্তা করেন তবে আপনার ব্রেইনের কাজ বাড়তে থাকে ৷ ব্রেইনের মেটাবোলিজম অংশে অক্সিজেনের চাহিদা বাড়তে থাকায় ব্রেইন বেশি অক্সিজেন ব্যবহার করে ফেলে ৷ সেক্ষেত্রে বাকী সংবেদনশীল অংগগুলো মারাত্মক অক্সিজেন সংকটে পড়তে পারে ৷
# তৃতীয়_উপদেশ
করোনায় আক্রান্ত হলে শরীরকে ডিহাইড্রেটেড বা পানিশূণ্য করা যাবেনা, মোটেই না ৷ প্রচুর তরল , পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
এই ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত রোগী স্ট্রোক থেকে শুরু করে যে কোনো অ্যাকিউট ভাস্কুলার ক্রাইসিস বা তীব্র সংবহনতান্ত্রিক জটিলতায় পড়তে পারেন। ফলে পালমোনারি এমবোলিজম থেকে শুরু করে যেকোনো প্রধান সাংবহনতন্ত্রে ব্লক হতে পারে করোনা আক্রান্ত রোগীর ৷
আপনার শরীরের পানিশূণ্যতা এই স্ট্রোক লাইক সিম্পটমকে ট্রিগার করতে পারে ৷ বিশেষত করোনায় আক্রান্তদের ক্ষেত্রে হার্টের প্রধান নালীকে ব্লক করার পেছনে কোষের পানিশূণ্যতা মারাত্মক বাজে ভূমিকা রাখে৷ আপনার শরীর যদি পানিশূণ্য হয় সেক্ষেত্রে হেমোকনসেনট্রেশন হয় ৷ প্যাকড সেল ভলিয়ম বা PCV বাড়ে , রক্তের সান্দ্রতা বাড়ে, রক্ত আঠালো হয়ে যায়। এর ফলে স্ট্রোক হওয়ার প্রবণতা বাড়ে ৷
আপনি যদি করোনায় আক্রান্ত হন এবং এর কারণে যদি আপনার ডায়েরিয়া হয় তবে আপনার প্রচুর পরিমানে তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে।
শরীরকে প্রোটিন দিতে হবে ৷ নতুবা আপনার স্ট্রোক, হার্ট এটাক, মেজর ভ্যাসেল এম্বোলিজম হওয়ার আশংকা বহুগুণে বেড়ে যাবে।
সতর্ক হোন ৷ দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুন৷ আল্লাহ সকলকে হেফাজত করুন।
ডা. এহসানুল কবীর, সহকারি অধ্যাপক, খুলনা সিটি মেডিক্যাল কলেজ, খুলনা।