তোমার চোখে দেখেছিলাম
বনলতাসেনের প্রতি জীবনানন্দের প্রগাঢ় ভালোবাসা।
আজ তোমার না থাকাতে
নিজেকে সাজায় রবিঠাকুরের চোখের বালির পাতায়।
তোমার বুকে পেয়েছিলাম
গন্ধবিধূতে বসে মুজতবা আলীর শিউলি শবনমে সৃষ্টিমূখর প্রেমের নেশা।
আজ তোমার না বলাতে
বিরহের অপূর্ব জীবনের শক্তি জহির রায়হানের বরফ গলা নদীতে ভাসা।
তোমার হৃদয়ের পাশে বসে শিখেছিলাম
দিবালোকে হুমায়ুন আহমেদের নবনীর মতো দৃষ্টি তাক করে প্রেয়সীকে ছোঁয়ার কৌশল।
আজ তোমার না পাওয়াতে
রিক্ততায় অধীর সিক্ত হুমায়ুনের অপেক্ষাতে বেঁচে থাকার কিরণ।
তোমার মুখে শুনেছিলাম
বুলবুলের ঝিলাম নদীর দেশে কামনীয় বাক্যে ঝিলিমিলি টেউয়ের শব্দ।
আজ তোমার না আসাতে
জীবন্তলাশের সমারহে ভাসে ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের শাপমোচন রপ্ত।
তোমার ঠেটে একেছিলাম
আমৃত্যু আশ্রয়স্থলের নিশানা ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের শেষ বিকেলের মেয়ের চোখেতে।
আজ তোমার না ছোঁয়াতে
জীবন সংসারে নিয়ন্ত্রণহীন নিজেকে হারায় হুমায়ুনের একা একা জীবন্তমৃত্যুর জগতে।
তোমার স্বপ্ন বুনেছিলাম
হুমায়ুনের নীল অপারিজাতার মতো নিজের দেহের নিবেদনময়ী পুষ্পযুক্ত রহস্য উদঘাটনে।
আজ তোমার না ডাকাতে
চোখের জলের ব্যবধানটুকু রইল বেদনার সুরে গাঁথা ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের চিতা বহ্নিমানে।
তোমার হৃদপিন্ঠে লেপ্টেছিলাম
নৈসর্গিক অনুভূতিযুক্ত হুমায়ুনের নীল তিথির চন্দ্রবিন্দুতে স্পর্শকাতরের ছোঁয়া।
আজ তোমার না উপস্থিতিতে
বেরঙ্গিন দরজার কড়া খুলে স্বাদ গন্ধহীন হয়ে বখতিয়ার রহমানের অপেক্ষায় আছি।
তোমার আকাশপানে ছিলাম
বিয়োগান্ত সমাপ্তি পরিহার করে হুমায়ুনের বাসরে নিশিকন্যা দেখার তরে।
আজ তোমার না উষ্ণ গন্ধে
বিমহিত বাস্তবের কাগজে মোড়ানো ভুলে যাওয়া জহির রায়হানের কয়েকটি মৃত্যুর ভরে।
ফারহানা ইয়াসমিন, শিক্ষার্থী, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।