আলম রায়হান : সাংবাদিকতার ৪৪ বছর

গাজী মো. তাহেরুল আলম ।।
 
আলম রায়হান। প্রথিতযশা আপোষহীন এক সাংবাদিকের নাম। জন্ম প্রাচ্যের ভেনিস বরিশালে। ১৯৭৮ সালে সাংবাদিকতায় যাঁর হাতেখড়ি। সরকারি বরিশাল কলেজের বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক মোজাম্মেল হক স্যারের অনুপ্রেরণা এবং লেখালেখির প্রতি নিজের আগ্রহ ও চেষ্টায় তৎকালীন জেলা পরিষদ থেকে প্রকাশিত ‘বাকেরগঞ্জ পরিক্রমা’য় সাংবাদিকতার শুরু। এর আগে অবশ্য কলেজ ম্যাগাজিন তমালসহ বিভিন্ন সাময়িকীতে নিয়মিত তাঁর লেখা ছাপা হতো। কিন্তু তিনি এখানে থেমে থাকেন নি। নিজের শহর বরিশাল ছেড়ে পাড়ি জমান রাজধানী ঢাকার বুকে। সত্য প্রকাশে আপোষহীন টগবগে এ তরুণ মাত্র তিনশত টাকা বেতনে ঢাকা থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক জনকথায় রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন। জড়িয়ে পড়েন সাংবাদিকতার মতো চ্যালেঞ্জিং পেশায়। ধাপে ধাপে এগিয়ে যান অনেকটা দূর। এখন তাঁর সাংবাদিকতার ৪৪ বছর।
আলম রায়হান ১৯৮১ সালে সাপ্তাহিক সুগন্ধায় চিফ রিপোর্টার পদে নিয়োগ পেয়েই অল্পদিনের ব্যবধানে হয়ে ওঠেন জনপ্রিয় ‘গেদুচাচা’। সুগন্ধা তখন গেদুচাচা’র কলামের জন্য জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। আমরা অনেকেই ভুল গেদুচাচাকে চিনি, আসল গেদুচাচা একজন….. তিনি আলম রায়হান।
(বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরীর সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন সাংবাদিক আলম রায়হান)
আর একটু বিশদ বিশ্লেষণে দেখা যায়, আওয়ামীলীগ সভানেত্রী হয়ে শেখ হাসিনার দেশে ফেরা ১৯৮১ সালে, আলম রায়হান তখন সাংবাদিকতা পেশায় জড়িয়ে পড়েন পেশাদিরত্ব নিয়ে। তখন রাজনীতির উত্তাল সময় চলছিল। সেই সময়টায় প্রথিতযশা সাংবাদিকদের সাথে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে ওঠে আলম রায়হানের। খবরের পেছনের খবর, ডাকসাইটে রাজনীতিবিদদের অন্তরালের খবর তুলে আনতে পারতেন তিনিই। সাংবাদিকতায় বলতে গেলে তিনি ছিলেন ‘গভীর জলের মাছ! ‘রসালো আলাপ এবং এরই মধ্যদিয়ে রাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যক্তিগনের সাথে তাঁর সখ্যতা গড়ে তোলা, এ সখ্যতার নেপথ্যে ছিলো সাংবাদিকতার ইতিবাচক নানা কৌশল। ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী এমনসব সংবাদ করে তিনি যেমন আলোচিত হয়েছেন, তেমনি রাষ্ট্রের উচুতলার ব্যক্তিদের রোষাণলেও পড়েছেন।
বিনয়ী ও সাদাসিধে জীবনের নিরেট একটি গল্প হতে পারে একজন আলম রায়হানকে নিয়ে। নিরুৎসাহী, নিরুদ্যোম তরুণ সাংবাদিকদের জন্য অনুকরণীয় ও অনুপ্রেরণা হতে পারে বিদগ্ধ পথের দিশারী  সাংবাদিক নামের অদম্য এ মানুষটিকে নিয়ে। কারণ, সাপ্তাহিক সুগন্ধায় যুক্ত হওয়া আলম রায়হানের গেদুচাচা খ্যাতি যখন আকাশচুম্বি, তখন তাঁর সাংবাদিকতার প্রায় এক যুগ। বেতন দেড় লাখ টাকার ওপর! একজন সিদ্ধহস্ত, নির্ভীক সাংবাদিক হিসেবে তখন তাঁর একটার পর একটা চাকরির অফার আসছে।
সময় প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ‘অতি সাধারণ এক সাংবাদিকের কথা’। অনেকটা আত্মজীবনীমূলক বইটি লিখেছেন সাংবাদিক আলম রায়হান। বইটি তরুণ ও প্রবীণ সাংবাদিক মহলে যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছে। তাঁর পাঠক ভক্তকুলও নির্দ্বিধায় বইটির প্রশংসায় পঞ্চমুখ। বইটি তাঁর সাংবাদিকতা জীবনের বিচিত্র ও বর্ণিল অভিজ্ঞতা ফুঁটে উঠছে সাবলিলভাবে। অনেকে আবার বইটিকে আলম রায়হানের আত্মজীবনীও বলেছেন। হতে পারে এটাই তিলেতিলে বেড়ে ওঠা অসাধারণ সাংবাদিকের আত্মজীবনী। কিন্তু বইটিতে লক্ষ্যণীয় হলো, ‘হুট করে গল্প করার ছলে সাংবাদিকতার পথে হেঁটে চলার অভিজ্ঞতার কথা বলে গেছেন তিনি। আবার কোথাও আগের ঘটনার সাথে মিলে যায় এমন বর্তমান ঘটনার কথাও লিখেছেন। যেমন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ‘অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী এরশাদ’র সময় গৃহবন্দী ও গ্রেফতার হয়েছিলেন। সেই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ২০০৭-২০০৮ সালের ‘অস্বাভাবিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের’ সময়ে দুই নেত্রীর গ্রেফতারের কথা তুলে ধরেছেন। তাই বইটিতে ঘটনার পর ঘটনা বলে যাওয়ার ব্যাপারটি নেই। প্রাসঙ্গিক ভাবে সব জায়গায় এসেছে বর্তমান সময়ের কথাও। বইটি পড়লে সহজেই অনুমেয় কতো নিঁখুতভাবে তাঁর কলম চলেছে।
আলম রায়হানের লেখা ‘অতি সাধারণ এক সাংবাদিকের কথা’ বইটি সম্পর্কে মূল্যায়ণ করতে গিয়ে সাংবাদিক অহিদুল ইসলাম চমৎকার আলোচনা করেছেন। এ লেখাটি পড়ে জানতে পারলাম, সাংবাদিকতার জীবনে কোনো সমন্তরাল পথে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া যায়না। এখানে বিচক্ষণতার সাথে যুদ্ধের কৌশলের মতো একেকটি ধাপ পেরুতে হয়।
মানুষের যাপিত জীবনটাই কথামালা দিয়ে সাজানো। সেখানে থাকে নানা উত্থান-পতন, সুখ ও কষ্টের গল্প। কিন্তু সাংবাদিকের জীবন শুধু আপন জীবনের গল্প আবর্তিত হয় না। কারণ একজন সাংবাদিকের বিভিন্ন অঙ্গনের গুরুত্বপূর্ণ মানুষের সাথে নিবিড় যোগাযোগ থাকে। তাই সাংবাদিকও দৃশ্যমান ঘটনার পাশাপাশি অদৃশ্য বহু ঘটনার নীরব সাক্ষী হয়ে যান। বইটিতে তেমন বহু ঘটনা ও ব্যক্তির রাজনৈতিক চরিত্র খুঁজে পাওয়া যাবে। আলম রায়হানের লেখা বইটি পড়লে মনে হবে এ যেনো বিখ্যাত কোন সাজানো গোছানো একটি গল্প। আসলে তাঁর লেখার ধরণটাই এমন। যা পাঠককে সহজে আকৃষ্ট করে।
এ বইটির অংশবিশেষ এমন যে, অভিনবভাবে উদাহরণ দিয়ে তাঁর চোখে দেখা বিষয়গুলো নিয়ে গল্প করেছেন। ছাত্র জীবনে ‘বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের রাজনীতির বিভ্রান্তিতে’ জড়িয়ে যাওয়া আলম রায়হান জেনারেল জিয়ার সাথে কর্নেল তাহের ৭ নভেম্বর কেন্দ্রিক অভ্যুত্থানের ঘটনাকে ‘জাসদের আত্মহননের প্রেম’ বলে উল্লেখ করেছেন। এতো সংক্ষেপে জেনারেল জিয়ার ক্ষমতা দখল ও কর্নেল তাহেরের ফাঁসির কথা অনেকেরই হয়ত পড়া হয়নি। আবার নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেছেন, ‘অতি বিপ্লবী হিসেবে প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্যে জাসদে আশ্রয় নিয়েছিলো স্বাধীনতা বিরোধীরা’। স্বাধীনতা বিরোধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে ‘উদার জমিনের স্বর্ণদ্বার খুলে দিয়েছিলেন জেনারেল জিয়া’।
আটত্রিশ বছর আগের অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ডিএফপিকে ‘দুর্নীতিতে আকন্ঠ নিমজ্জিত সংস্থা’ (পৃষ্ঠা-১৬) হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পত্রিকার সার্কুলেশন অনুযায়ী সরকারি বিজ্ঞাপনের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। যে সব পত্রিকা ৫০০ কপি ছাপানো হয় এমন পত্রিকাকে সার্টিফিকেট দেয়া হতো হয় ৫০,০০০। কিংবা ১৫০০ ছাপানো হতো এমন পত্রিকাকে ১৫০০ এরপর দুইটি শূন্য বসিয়ে দেড় লাখ ছাপানো হচ্ছে বলে প্রতিবেদন দেয়া হতো। সেই কথাই তুলে ধরেছেন তিনি। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বহু রাজনীতিকের সাথে যোগাযোগ ছিলো আলম রায়হানের। অনেকের সাথে পরিবারের সদস্যদের মতো উঠা-বসা ছিলো তাঁর। এমনটা এখন হয়ত দেখাই যায় না। কারণ সাংবাদিকের গায়ে দলীয় সীল পড়ে গেছে। কিংবা দলীয় সিল মেরে নিতে হয়। নয়তো চলা যায় না। পত্রিকাগুলোও সেই নীতি অনুসরণ করে। অফিস থেকেই দিকনির্দেশনা দেয়া থাকে পত্রিকার দলীয় আদর্শ কী!
আলম রায়হান প্রতিকুল ও অনুকূল দুই পরিস্থিতি কৌশলে সামাল দিয়ে বহু নামী-দামী ব্যক্তিত্বের সাক্ষাতকার নিয়ে আলোচিত হয়েছেন। যেমন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী আতাউর রহমান খান, শেখ রেহানা, কমরেড তোহাসহ বহু রাজনীতিকের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তিনি। এরমধ্যে বঙ্গবন্ধুর ‘নেপথ্য খুনি’ খোন্দকার মোস্তাকও আছেন। খন্দকার মোস্তাককে এক প্রশ্ন করে চাকুরীতে দুর্বল হয়েছিলেন তিনি। যেটাকে ‘মস্তকের পালক সম ধাক্কা’ হিসেবে মনে করেছেন লেখক। তিনি লিখেছেন, স্বৈরাশাসক এরশাদ এর সময় বিবিসির সাংবাদিক আতাউস সামাদকে গ্রেফতার করা হয় ১৯৮৭ সালের নভেম্বরে। পুলিশ হেফাজতে থাকা আতাউস সামাদের ইন্টারভিও নেয়ার এ্যাসাইনমেন্ট দেন সম্পাদক। পিজি (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) হাসাপাতালের করিডোরে দাঁড়ানো কয়েকজন পুলিশকে দেখার পর ‘এমন একটা ভাব নিলাম যেন আমি কোনো সংস্থার লোক, বললাম সব ঠিক আছে! কাউকে ঢুকতে দেবেন না। এই বলে আমি করিডোরে ঢুকে পড়লাম। আর দরজায় বসা দুই পুলিশের দিকে অর্থপূর্ণ লুক দিয়ে রুমে ঢুকে পড়লাম’।
বইটির অপর এক পৃষ্ঠায় তিনি লিখেন, এরশাদের ভাইস প্রেসিডেন্ট সংবাদ মাধ্যম বিমুখ বিচারপতি নূরুল ইসলামের সাক্ষাৎকার পাওয়ার কৌশল হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন তাঁরই স্ত্রী কে। ‘খোঁজ খবর নিলাম ভাইস প্রেসিডেন্ট এর পরিবারের কে কি করে। জানা গেলো তার স্ত্রী জাহানারা আরজু কবি। আগে ফোন না করে ভাইস প্রেসিডেন্ট অফিসে থাকাকালে দুপুরে গিয়ে হাজির হলাম তাঁর ওয়ারীর বাসায়। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দেখা করতে চাইলাম কবি জাহানারা আরজুর সাথে। এভাবেই ভাইস প্রেসিডেন্ট এর ইন্টারভিও নিয়ে স্বার্থ উদ্ধার করেছিলেন।
আলম রায়হানের সাংবাদিকতা যেখানে শুরু সেই বরিশালে তিনি আবার ফিরে এলেন। ১৯৭৮ সালে বরিশাল ত্যাগ করে রাজধানী ঢাকায় যাওয়া এবং ২০১৮ সালে আবার সেই বরিশালে ফিরে আসা। সময়টার মধ্যে যেনো কেমন সেতুবন্ধন! তিনি আবারো বলেন, ‘আমার সাংবাদিকতার শিক্ষাগুরু অধ্যাপক মোজাম্মেল হক স্যার। যাঁর বয়স এখন ৮০ বছর। অবসর নিয়েছেন বিএম কলেজ থেকে।’
অনেকটা পথ পেছনে ফেলে এসেও ক্লান্তি নেই সাংবাদিকতায়। কিন্তু, ব্যবধান দীর্ঘ…… তবুও কেন যেনো মনে হয় তিনি আগের মতোই রয়েছেন। প্রিয়  আলম রায়হানের কথাবার্তা, লাইফস্টাইল দেখে মনে হয়, তিনি এখনো টগবগে সদ্যজাত এক তরুণ। যাঁর কলম আগের চেয়ে আরো শক্তিশালী!
নিজের তারুণ্যের আপনভূবন বরিশালে ফিরেই সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে প্রকাশ করেন, ‘দৈনিক দখিনের সময়। পত্রিকাটি ইতোমধ্যে বিদগ্ধ পাঠকের মন ছুঁয়েছে।
সম্প্রতি ‘মুক্তবুলি’ সম্পাদক ও প্রকাশক আযাদ আলাউদ্দীন সাংবাদিক আলম রায়হান সম্পর্কে মুক্তবুলিতে একটি লেখা দেয়ার জন্য আমাকে অ্যাসাইনমেন্ট দেন। আযাদ আলাউদ্দীন বলেন, আলম রায়হান কোন সাধারণ সাংবাদিকের নাম নয়! এটা বিবেচনায় রাখবেন। জীবনের অনেকগুলো আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে সাংবাদিকতায় ৪৪ টি বছর অতিক্রম করা আমার সাংবাদিকতা জীবনের শ্রদ্ধেয় গুরু আলম রায়হান নতুন প্রজন্মের জন্য জ্ঞানের এক বটবৃক্ষ। সেই উপলব্দি থেকেই আমি তাঁর বিষয়ে লেখা শুরু করি।
(সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সাক্ষাৎকার গ্রহণকালে সাংবাদিক আলম রায়হান)
আমি যখন আলম রায়হানের সাপ্তাহিক সুগন্ধা কাগজে চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান হিসেবে ২০০২ সালে যুক্ত হই তখন থেকেই আমার মূল সাংবাদিকতা জীবন শুরু। লিখতাম গাজী তাহের লিটন নামে। গেদুচাচার কলামটি তখন সেখানে ছাপা হতো। কিছুদিন পর তিনি গ্রেফতার হলেন। সাল এবং তারিখ মনে নেই। তাঁর মুক্তি চেয়ে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং সহযোগি সংগঠন সারাদেশে দেয়ালে, দেয়ালে পোস্টার লাগালো। আমিও রাত জেগে পোস্টার লাগালাম। তিনি সাংবাদিকতা জীবনে দু’বার জেল খেটেছেন। মুক্তি পেয়েই আবার লিখেছেন, জেল, জুলুম ও নির্যাতনের কথা। সত্য প্রকাশে তাঁর দুর্দান্ত সাহস দেখে আমি বিস্মিত হই। সুগন্ধাকাগজে কমডোর এ. জেড নিজাম উদ্দিন এবং চট্টগ্রাম রেন্জের ডিআইজি আবদুর রহমান এবং ফেনীর জয়নাল হাজারীর এক্সক্লুসিভ সাক্ষাতকার ছেপে তাঁর অনুপ্রেরণা ও প্রশংসা অর্জন করি।
আলম রায়হান একবার গেদুচাচা কলামে দেশের একজন ডাকসাইটে রাজনীতিবিদের অন্তরালের চরিত্র উন্মোচন করতে গিয়ে লিখেছেন, ‘বাড়ির পাশে বিয়াইছে গাই, সেই হিসেবে খালাতো ভাই……। নিজের অজান্তেই হেসেছি এ লেখার অন্তর্নিহিত সত্য অবশেষে বুঝতে পারলাম। তখন ‘গেদুচাচা’ কলামটি পড়ার জন্য সব শ্রেণির পাঠকরা সপ্তাহ জুড়ে অপেক্ষা করতো।
আলম রায়হনের সাংবাদিকতা জীবনের উল্লেখযোগ্য পত্রিকাগুলো হলো, সাপ্তাহিক সুগন্ধা, সুগন্ধা কাগজ, আমাদের সময়, আমাদের অর্থনীতি, দৈনিক যায়যায় দিন এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া বাংলা ভিশন ও মাই টিভি। এছাড়া তিনি টকশো’র নিয়মিত আলোচক। তিনি ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবেও পত্রিকান্তরে লেখালেখি করেন। তাঁকে নিয়ে লিখতে গিয়ে আমি অতলান্ত সমুদ্রে সাঁতার কেটেছি মাত্র। অফুরন্ত ভালোবাসা থেকে যতোটুকু লিখেছি তা কেবল সাংবাদিকতার দায়বদ্ধতা থেকে।
এ লেখা প্রকাশ হওয়ার আগে এক প্রশ্নের জবাবে আলম রায়হান বলেন, বরিশালের সাংবাদিক যাঁরা আমাকে চিনেন, তাঁদের ভালোবাসায় আমি অভিভূত ও বিমুগ্ধ। তাঁর মতে, তরুণ সাংবাদিক তৈরিতে প্রবীণ সাংবাদিকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদেরকে মনিটরিং করা, অনুপ্রেরণা দেয়া, সাহস সঞ্চার করা এবং সত্য প্রকাশে আপোসহীন হতে শেখানো, এ দায়িত্ব গুণি ও প্রবীণ সাংবাদিকদের। এ প্রসঙ্গে আলম রায়হান দ্ব্যর্থহীনকন্ঠে তাঁর সাংবাদিকতা জীবনের শিক্ষাগুরু অধ্যাপক মোজাম্মেল হক স্যারের নাম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
.
গাজী মো. তাহেরুল আলম
বার্তা সম্পাদক, ভোলা বাণী ডটকম
নিয়মিত লেখক, মুক্তবুলি

One comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *