অনার্যকে খুন করাই আর্যদের ধর্ম
উপমহাদেশে আর্যরা ছিলো আক্রমণকারী। প্রেম, মৈত্রি, মানবতা, মনুষ্যত্ববোধকে কলুষিত করা ছিলো হানাদার আর্য বাহিনীর টার্গেট। এ পথেই তারা ভারতে একচেটিয়া প্রভাব বিস্তার করে কালক্রমে। অহিংস ভারতবর্ষকে আর্যহিন্দুরা সন্ত্রাসের স্বর্গরাজ্য বানায়। অনার্যকে খুন করাই আর্যদের ধর্ম। ঋগবেদ ও অথর্ববেদ আমাদের তাই জানিয়েছে। আজও তাদের চরিত্রে কোনো বদল আসেনি। মোনালী ঠাকুর ঠিকই বলেছেন: ‘ভারত আর বসবাস করার মতো জায়গা নয়, ভারতীয়রা জানোয়ার থেকেও অধম।’ [দি ডেইলি লোকলোকান্তর, ১২ মে ২০১৮, বিভিন্ন দৈনিক ও নিউজ পোর্টাল] নিরপরাধ মানুষকে বধ করাই তাদের সংস্কৃতি। ভারতীয় ঐতিহাসিক অধ্যাপক বিমলানন্দ শাসমল লিখেছেন: ‘ ভারত কেন ভাগ হোলো- এই প্রশ্নের জবাব পেতে হলে আমাদের চলে যেতে হবে সুদূর অতীতে-কয়েক হাজার বছরের পুরোনো ভারতে। আমাদের চলে যেতে হবে সেইদিনের ইতিহাসে যেদিন এই ভারতের মাটি লাল হয়ে উঠেছিল আর্যের হাতে নিপীড়িত অনার্যের রক্তে। … হিটলারও জার্মানদের এই আর্য-বংশসম্ভূত বলে জাহির করতেন। জার্মানদের আর্যত্বের পবিত্রতা রক্ষা করবার জন্য তিনি লক্ষ লক্ষ ইহুদি নর-নারী ও শিশুর প্রতি যা করেছিলেন তা কেবল হাজার হাজার বছর আগে আর্যরা অনার্যদের প্রতি যা করেছিলেন তার সঙ্গে তুলনা করা চলে। … এদেশে আর্যদের জীবনপ্রভাত শুরু হয়েছিল নিরীহ শান্তিপ্রিয় অনার্য অর্থাৎ দাস বা দস্যুজাতির রক্তসিঞ্চনে। বেদে আর্যদের হাতে এই নিরপরাধ দাস ও দস্যুজাতির হত্যালীলার চিত্রটি সুপরিস্ফুট হয়েছে। … যে সকল দাস ও দস্যুকে আর্যরা ধ্বংস করতে পারলেন না অথচ যারা আর্য প্রভূত্ব স্বীকারও করল না-তাদের রেখে দেওয়া হোলো সমাজের অন্তজ-অস্পৃশ্য করে। তাঁদের মারা হোলো না, শুধু কেড়ে নেওয়া হোলো তাঁদের মনুষেত্বের মর্যাদাটুকু। এইভাবে কায়িক পরিশ্রম দিয়ে যারা সমগ্র সমাজ-জীবনকে বাঁচিয়ে রাখতো-চাষী, তাঁতী, কুমোর, কামার, স্যাকরা, গয়লা, ধোপা, নাপিত এমন কি স্থপতি ও শিল্পীদেরও আর্য-ভারতে অন্ত্যজ-অস্পৃশ্য করে দেওয়া হোলো। সেইজন্য স্বাভাবিক কারণেই ভারতীয় সমাজ-জীবনের প্রথম প্রভাত থেকেই এক বিরাট জনসমষ্টি দেশের ও সমাজের প্রতি বিমুখ হয়ে অন্তরে অন্তরে শত্রু হয়ে রইল। ‘‘মানুষের অধিকারে বঞ্চিত করেছো যারে’’- সেই বিরাট জনসমষ্টি, দেশ ও সমাজকে কি করে ভালবাসতে পারতো, এই প্রশ্নটা আমি সবার সামনে রাখছি। সমাজসৌধের অঙ্গন থেকে এই বিরাট জনসমষ্টিকে যেন বলপ্রয়োগে বহিষ্কৃত করা হোলো ভারতীয় সভ্যতার প্রথম যুগ থেকেই। আর্য-হিন্দুদের মূল মন্ত্রই ছিল-সামাজিক বিভাজন।’ [বিমলানন্দ শাসমল: ভারত কী করে ভাগ হলো, হিন্দুস্তান বুক সার্ভিস, কলকাতা, জানুয়ারি ১৯৯১, পৃষ্ঠা ৯-১১]
৭৩ বছরে ৩ কোটি মানুষ খুন করেছে যুক্তরাষ্ট্র
টার্গেট করে একটার পর একটা দেশে যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া। পছন্দের সরকার বসাতে গোয়েন্দা বাহিনী দিয়ে দেশে দেশে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটানো। বিশেষ বাহিনীর মাধ্যমে গোপন অভিযান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে সারাবিশ্বে এভাবেই আধিপত্য কায়েম রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। আধিপত্য লড়াইয়ের এ মিশনে ১৯৪৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অর্থনৈতিক ও সামরিক পরাশক্তি দেশটির হাতে নিহত হয়েছে ২ থেকে ৩ কোটি বেশি নিরীহ বেসামরিক মানুষ।
সম্প্রতি ‘গ্লোবাল রিসার্চ : সেন্টার ফর রিসার্চ অন গ্লোবালাইজেশন’ প্রকাশিত এক গবেষণা রিপোর্টে গত ৭৩ বছরে বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও হত্যাযজ্ঞের এ চিত্র উঠে এসেছে। কয়েক বছর ধরে গবেষণা করে রিপোর্টটি প্রস্তুত করেছেন মার্কিন ইতিহাসবিদ জেমস এ লুকাস। রিপোর্ট বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের চাপিয়ে দেয়া অবৈধ যুদ্ধ, সামরিক অভ্যুত্থান ও গোপন সামরিক অভিযান ‘শিকার’ হয়েছে বিশ্বের অন্তত ৩৭টি দেশ বা জাতি। এর মধ্যে ২০০১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে আফগানিস্তানে ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’। মৃত্যুর পাশাপাশি ঘটেছে অগণিত আহত হওয়ার ঘটনা। বিমান হামলা আর অত্যাধুনিক সব অস্ত্রের আঘাতে সারাজীবনের জন্য পঙ্গু হয়েছে এসব মানুষ।
কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে, যুদ্ধে প্রত্যেক নিহত ব্যক্তির বিপরীতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। এর মানে মার্কিন বাহিনীর হাতে আহত হয়েছে আরও অন্তত ২০ থেকে ৩০ কোটি মানুষ।জেমস লুকাসের গবেষণার বরাত দিয়ে ‘অ্যাটাক দ্য সিস্টেম ডটকম’র প্রধান সম্পাদক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক কেইথ প্রেস্টন প্রেটিভিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, মার্কিন সরকার ওইসব অঞ্চলে দারিদ্র্য, অপরাধ, বর্ণবাদ ও সহিংসতা সৃষ্টির মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটিয়েছে।তিনি বলেন, মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র কখনই শীর্ষ পর্যায়ে ছিল না, বরং দেশ ও বিদেশে ব্যাপক হারে অপরাধ ও কুকর্ম করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র একটা আধুনিক সাম্রাজ্যবাদী, যা আগে ছিল ব্রিটেন।’ [আমাদের সময়.কম, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৮]
নরওয়েতে ইসলামের কোনো স্থান নাই, সব কোরআন ধ্বংস করা হবে
নরওয়েতে ‘স্টপ ইসলামাইজশেন’ নামে ইসলাম বিদ্বেষী একটি দল দেশটির মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনের চলাফেরা ও র্কাযক্রম নিষিদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। দলটির প্রধান নেত্রী অ্যানা ব্রাটনে এক সমাবেশে বলেন, ‘নরওয়েতে ইসলামের কোনো স্থান নেই, সেই সঙ্গে সব কোরআনের কপি ধ্বংস করা হবে। সভায় তিনি মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনকে গালি দেন ও হিজাব নিয়ে কটূক্তি করনে। [দৈনিক ইত্তেফাক, ১৮ জুন ২০১৯] এই হলো পশ্চিমা বুলি। এরই নাম সেকুলারিজম বা ধর্নিরপেক্ষতা।