বরিশালের কবি কুসুমকুমারী দাস

স্বর্ণা লাকী

‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে / কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে’। আমরা সকলেই কমবেশি পরিচিত কবি কুসুমকুমারী দাসের (১৮৭৫-১৯৪৮) এই প্রবাদ প্রতিম পঙক্তি দুটির সাথে। আমাদের দেশের সেই ছেলে কবি জীবনানন্দ দাশ (১৮৯৯-১৯৫৪)। বর্তমান সময়ে দাড়িয়ে মনে হয় তিনি সত্যিই তাঁর মায়ের কথা রেখেছেন। মায়ের কথাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কবি তাঁর সৃষ্টিকর্মের মধ্য দিয়ে । জীবনানন্দ দাশের জননী কবি কুসুমকুমারী দাস এই পরিচয়ের বাইরেও তাঁর নিজস্ব একটি পরিচয় আছে। তা হলো তিনি কবি। কেবল কবি নন- তিনি ব্রাক্ষ্ম সমাজের একজন সক্রিয় কর্মী, সুশিক্ষিতা বিশিষ্ট এক ব্যক্তিত্বের অধিকারী। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে গিরীন্দ্রমোহিনী (১৮৫৮-১৯২৪), মানকুমারী বসু (১৮৬৩-১৯৩২), বেগম রোকেয়া (১৮৮০-১৯৩২) প্রমুখ মহিলা কবির মতো কুসুমকুমারী দাসেরও একটি বিশিষ্ট স্থান রয়েছে।

জীবন কথা
কুসুমকুমারী দাস ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে (২১ পৌষ ১২৮২ বঙ্গাব্দ) বরিশাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা চন্দ্রনাথ দাস, মা ধনমনি দেবী। পিতা চন্দ্রনাথ দাসের পৈত্রিক নিবাস আগৈলঝাড়ার গৈলা গ্রামে। চন্দ্রনাথ ও তার অগ্রজ কালীমোহন দাস ব্রাক্ষধর্ম গ্রহণ করলে নিজ গ্রামবাসীর বিরোধিতার ফলে তারা পৈত্রিক গ্রাম ছেড়ে বরিশালে চলে আসেন। বরিশালে এসে প্রথমদিকে তিনি সর্বানন্দ দাসের বাড়িতে কিছুদিন বসবাস করেন। সর্বানন্দ দাস তখন বরিশালের ব্রাক্ষ্মসমাজের সম্পাদক। তিনি ছিলেন জীবনানন্দ দাসের পিতামহ। অর্থাৎ কুসুমকুমারী দাসের জন্মের আগেই দুই পরিবারের সাথে একটি নিবিড় ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। চন্দ্রনাথের একপুত্র প্রিয়নাথ এবং তিন কন্যা কুসুমকুমারী, সুকুমারী ও হেমন্তকুমারী। কুসুমকুমারী প্রাথমিক পাঠ শুরু করেন বরিশালে। তখন বরিশালে মেয়েদের হাইস্কুল ছিল না। ছাত্রবৃত্তি পর্যন্ত পড়ানো হতো মাইনর স্কুলে। ১২৯৬ বঙ্গাব্দে কিছুকালের জন্য বরিশালে মেয়েদের হাইস্কুলে করা হয়। ইন্দুভূষণ রায় চৌধুরী ছিলেন সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ছাত্রী স্বল্পতার কারনে অচিরেই স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়। কুসুমকুমারী এই স্কুলেই চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। পরে তাকে কলকাতায় বেথুন স্কুলে ভর্তি করানো হয়। কুসুমকুমারীর শিক্ষালাভের সুযোগ সম্পর্কে অনুজ হেমন্তকুমারীর একটি মন্তব্য এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য- ‘আমরা নিঃসম্বল হইলেও আমাদের উচ্চশিক্ষা দিতে কার্পণ্য করেন নাই। প্রকৃতপক্ষে কুসুমকুমারী একটি বিদ্যানুরাগী পারিবারিক পরিমন্ডল পেয়েছিলেন আশৈশব’। ১৮৯৪ সাল পর্যন্ত কুসুমকুমারী দাস রেথুন স্কুলের ছাত্রী ছিলেন। প্রবেশিকা শ্রেণিতে (১৮৯৪) পড়াকালীন তাঁর বিয়ে হয়ে যায়। আর এখানেই তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অবসান ঘটে। মায়ের মেধা ও পড়াশুনা সম্পর্কে কবি পূত্র জীবনানন্দ দাসের ধারণা- ‘আমার মা শ্রীযুক্তা কুসুমকুমারী দাস কলকাতার বেথুন স্কুলে পড়তেন। খুব সম্ভব ফার্স্ট ক্লাস অবধি পড়েছিলেন। তারপরেই তার বিয়ে হয়ে যায়। তিনি অনায়াসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ পরীক্ষায় খুব ভালোই করতে পারতেন। এ বিষয়ে সন্তানদের চেয়ে তার বেশি শক্তি ছিল মনে হচ্ছে। হেমন্তকুমারী লিখেছেন- অনুমান ১৩০১ সালের ১৯ জৈষ্ঠ্য সর্বানন্দের দ্বিতীয় পুত্র সন্তানের সহিত কুসুমকুমারীর বিবাহ হয়। সত্যানন্দের পূর্বপুরুষের বিক্রমপুরের দ্বিতীয় কীর্তিপাশা নদীর তীরে গাউপাড়া গ্রামের অধিবাসী ছিলেন। একসময় তাদের জমিদারি ছিল যার কিছুটা অবহেলায় নষ্ট হয়। বাকিটুকু নদীগর্ভে বিলীন হলে তারা বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জে এসে বসবাস শুরু করেন।

সত্যানন্দের পিতা সর্বানন্দ দাসগুপ্ত বরিশালের কালেক্টরিতে কাজ করতেন। পরিবারে তিনিই প্রথম ব্রাক্ষ্মধর্ম গ্রহণ করেন। ব্রাক্ষ্মধর্ম গ্রহণের পর বৈদ্যদের জাতিচিহৃ স্বরুপ গুপ্ত পদবি বর্জন করে দাস লিখতে শুরু করেন। পরবর্তী জীবনে তিনি সর্বানন্দ দাস নামেই পরিচিত হন। তারপর দাস পরিবার বরিশালে নিজ বাড়ি নির্মাণ করে বাড়ির নাম রাখেন ‘সর্বানন্দ ভবন’। এভাবেই বরিশালে দাস পরিবারের স্থায়ী আবাসন তৈরি হয়। সত্যানন্দ দাস ছিলেন বরিশালের ব্রজমোহন ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক এবং বরিশাল থেকে প্রকাশিত মাসিক ব্রাক্ষ্মবাদী পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। পরবর্তীতে এরুপ প্রজ্ঞাকামী দার্শনিক মানুষ সত্যানন্দ দাস তার যোগ্য জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নিয়েছেন কুসুমকুমারী দাস কে। তাঁর পঠিত একটি প্রবন্ধ শুনেই নাকি সত্যানন্দ বিয়েতে সম্মত হয়েছিলেন। সংসার জীবনে ও সামাজিক নানাবিধ কাজে ব্যস্ততার পরও কুসুমকুমারীর লেখা লেখিতে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি। তবে এ কাজে তাঁর স্বামী তাকে বেশি সহযোগিতা করতেন। কুসুমকুমারীকে লেখা সত্যানন্দের একটি চিঠিতে এ সম্পর্কে তার মনোভাব জানা যায়- ‘সন্তান পালন ব্যাতিতও একটা কিছু দ্রুত গ্রহণ কর, একখানা কিছু লিখতে আরম্ভ কর’। কুসুম কুমারীর কর্মজীবন পুরোটাতেই সমাজসেবা প্রাধান্য পেয়েছে। শশুর ও স্বামী ছিলেন বরিশালে ব্রাক্ষ্মসমাজের দুই কেন্দ্রীয় পুরুষ। ব্রাক্ষ্মসমাজের সুবাদেই সেকালের নারীরা যে ঘরের বাইরে পা রেখে সামাজিক কাজকর্মে নিজেকে নিয়োগ করেছিলেন। তার প্রমাণ কুসুমকুমারী দাস নিজেই।
কুসুমকুমারীর কর্মজীবনের পরিচয় পাওয়া যায় ব্রাক্ষ্মবাদী পত্রিকায়। ‘স্থানীয় প্রসঙ্গ ও সংবাদ শিরোনাম’ বিভাগে। বিয়ের পর সংসার জীবনের দৈনন্দিন ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি সাহিত্যচর্চা ও ব্রাক্ষ্মসমাজের কর্মকান্ডে যেমন নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন- তেমনি পাড়া প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনের প্রয়োজন, সংকটেও ছুটে গেছেন সবসময়। বাড়িতে শিশুসন্তান রেখে রাত্রিবেলা প্রতিবেশীর সজ্জা সংকটে গিয়ে দাড়াবার মতো নারী শুধু সেকালে কেন এ যুগেও অল্পই। এ থেকেই উনিশ শতকের নবজাগরণের পথিকৃৎ রাজা রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগর প্রমুখের সাথে কুসুমকুমারীর চিন্তা ও কর্মের একটা মিল খুজে পাওয়া যায়। কুসুমকুমারীর শশুরালয়ে ব্রাক্ষ্মসমাজের উদ্যোগে শিশুদের নীতিশিক্ষা ও সংস্কৃতিচর্চার উদ্দেশ্যে নীতি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ বিদ্যালয়ে শিশুদের প্রবণতা নির্ধারনের প্রচেষ্টা ছিল। কুসুমকুমারী দাস এই স্কুলটির সাথে যুক্ত ছিলেন।
এভাবেই কুসুমকুমারী দাস বরিশাল ব্রাক্ষ্মসমাজের নানা রকম উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘ সময়ব্যাপী এই কর্মকান্ডের মধ্যে তাঁর আগ্রহ ও দক্ষতার সুস্পষ্ট পরিচয় লক্ষ করা যায়। শুধু পরিবেশগত নয় ইচ্ছাশক্তির ফলেই তিনি নারী আন্দোলনের পথিকৃতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে নিজেকে আলোকিত করেছেন। কুসুমকুমারী দাস জীবনের অধিকাংশ সময় বরিশালে কাটালেও কৈশোরে কলকাতায় রেথুন স্কুলে সন্তানের রোগ নিরাময়ের জন্য উত্তর ও পশ্চিম ভারতে পুত্র অশোকানন্দের কর্মক্ষেত্র পুনা, দমদম, জারকপুরসহ বিভিন্ন স্থানে পরিভ্রমণ করেছেন। ১৯৪২ সালের ২২ শে নভেম্বর স্বামী সত্যানন্দের মৃত্যুর পর কুসুমকুমারী মূলত আশোকানন্দ ও তাঁর পত্নী নলিনী দেবীর কাছেই থাকতেন। তবে ১৯৪৭ সালের পর বয়সের ভার ও শারীরিক অসুস্থতার কারনে আর বরিশালে যাননি। ১৯৪৮ সালের ডিসেম্বর মাসে কলকাতায় তিনি পরলোকগমন করেন।

সাহিত্য মূল্যায়ন
বিশ শতকের প্রথম তিন দশকে যেসব বাঙ্গালি মেয়ে সাহিত্যচর্চা করেছেন কুসুমকুমারী দাস তাঁদেরই একজন। মূলত কিশোর, বালক ও তরুণদের উদ্দেশ্যে রচিত কবিতাগুলোর জন্য কুসুমকুমারী সর্বাধিক পরিচিত। কুসুমকুমারী দাসের সাহিত্যকর্মের সার্বিক বিচারে সুমিতা চক্রবর্তী যে মন্তব্য করেছেন তা অবশ্যই প্রনিধানযোগ্য। ‘স্ত্রী শিক্ষার প্রথম যুগে যে মেয়েরা সারাজীবন সাহিত্য সাধনার সঙ্গে নিজেদের যুক্ত রেখেছিলেন তিনি তাদেরই একজন, সাহিত্য রুচির একটি একান্ততা ছিল তাঁদের মধ্যে। নিজেদের জীবন ও সমাজ পরিবেশ থেকে একটি আদর্শ তারা ছেঁকে নিতেন এবং লেখায় তাঁকে রুপ দিতে চেষ্টা করতেন। লেখার মধ্য দিয়ে উচ্চভাব প্রকাশ করতে হবে। বঙ্কিম যুগের এই প্রতিষ্ঠিত ধারণার তারাই ছিলেন শেষ বাহক। সত্যিকার অর্থে ব্রাক্ষ্মসমাজের নারীরা যে সময় স্ত্রী শিক্ষা ও স্ত্রী স্বাধীনতার পথ উন্মুক্ত করেছিলেন’।
ছোটবেলা থেকেই কবিতা ও প্রবন্ধ লেখার হাত ছিল কুসুমকুমারী দাসের। রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় তাঁর এই ক্ষমতাকে সবসময় উৎসাহিত করতেন। প্রবাসী সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় শিশুদের জন্য যে চিত্র শোভিত বর্ণশিক্ষার বই লিখেছিলেন তার প্রথমভাগে কুসুমকুমারী রচিত যুক্তাক্ষরবিহীন ছোট ছোট দু-একটি পদ্যাংশ সংযোজিত করেছিলেন ।
‘ছোট নদী দিনরাত বহে কুলকুল / পরপারে আমগাছে থাকে বুলবুল’।
কুসুসকুমারীর কবিতাগুলোর ব্রাক্ষ্মবাদী প্রবাসী মুকুল বামাবোধিনী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কুসুমকুমারীর কবিতা মুকুল ও পৌরাণিক আখ্যায়িকা নামে দুটি গ্রন্থের কথা বিভিন্নজনে উল্লেখ করলেও আজ অবধি প্রাচীন গ্রন্থাগার ও মুদ্রিতগ্রন্থ তালিকায় কুসুমকুমারীর কোনো বইয়ের সন্ধান পাওয়া যায়নি। স্মৃতিসুধা নামে তিনি একটি আত্মজীবনী লেখা শুরু করেছিলেন কিন্তু সেটিও বেশি দুর এগোয়নি। কুসুমকুমারী- কবিতা, প্রবন্ধ, দিনলিপি, শিশুতোষ গল্প এবং অসমাপ্ত আত্মজীবনী রচনা করেছেন। তবে তাঁর রচনার বড় অংশই কবিতা। তাঁর প্রবন্ধ ব্রাক্ষ্মসমাজের বিভিন্ন সভায় পাঠের উদ্দেশ্যে রচিত হয়েছে। তিনি নারীত্বের আদর্শ নামে একটি প্রবন্ধ লিখে স্বর্নপদক লাভ করেছিলেন।

জীবনানন্দ দাশ প্রণীত ‘আমার মা ও বাবা’ প্রবন্ধ
‘আমার বাবা ছিলেন সত্যানন্দ দাস। তার সম্বন্ধে ভাবতে গেলেই মনে হয় যে ভিতরের সঙ্গে বাইরের জীবনের যে বিরোধে একদিকে মানুষের ব্যক্তিমানস ও অন্যদিকে তার ব্যবহারিক ও জনমানস আশ্রয়ী জীবনের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় তার বেলায় তা তেমন নিঃশেষে ঘটে উঠতে পারে নি।
আমার মা শ্রীযুক্তা কুসুমকুমারী দাস বরিশাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতার বেথুন স্কুলে পড়তেন। খুব সম্ভব ফার্স্ট ক্লাস অবধি পড়েছিলেন। তারপরই তার বিয়ে হয়ে যায়।
তিনি অনায়াশেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ পরীক্ষায় খুব ভালোই করতে পারতেন। এ বিষয়ে সন্তানদের চেয়ে তার বেশি শক্তি ছিল মনে হচ্ছে। পঁচিশ ত্রিশ চল্লিশ বছর আগে আমাদের বরিশালের বাড়িতে পরিবারের লোকসংখ্যা অনেক ছিল। জেঠিমা ও মাকে সারাদিন গৃহস্থালির কাজকর্মে এবং উপরে ঠাকুমার তদারকে কত বিরোধী অস্বভাবী অবস্থার ভিতর দিয়ে কি রকম সহিষ্ণু, নিরলস ও সার্থকভাবে সংসারের কাজ সম্পন্ন হতো সে কথা ভাবলে আজ আশ্চর্য হয়ে থাকতে হয়।
খুব সকালবেলা শীতকালেও খুব ভোরে তারা ঘুম থেকে উঠতেন এবং অনেক রাত্রে সংসারের কাজকর্ম সেরে ঘরে আসতেন। কোনো রেহাই ছিল না, রেহাই তারা পাননি। পরিশ্রমকে ভয় করতেন না, কর্তব্যবোধ পরিপূর্নভাবে সজাগ ছিল। দায়িত্বকে এড়াবার কথা তারা ভাবতেও পারতেন না। আরাম বিরাম বিশেষ কাকে বলে সে কথা তারা নিজেদের জীবনের অভিজ্ঞতায় অনুভব করে দেখেননি। শারীরিক স্বাচ্ছন্দ কি জিনিষ সেকথা ভাববার অবসর ছিল না। নিজের স্বকীয় সংসারের জন্য ঠিক নয়, একটা প্রকান্ড বড় বিমিশ্র সংসারের জন্য যেখানে প্রায়ই অতিথি আসত, শত শত পরিজন আসত বহুল পরিমানে সেই বৃহৎ বিমিশ্র সংসারের কাজে দক্ষিণ্য ভরশায় ভরপুর অক্লান্ত সেবিকার মতো নিজেদের নিয়োজিত করে রাখতেন।

মনে পড়ে বরিশালের শীতের সেই রাতগুলো। যখন খুব ছোট ছিলাম প্রথম রাতেই চারদিক নিস্তব্দ হয়ে যেত আমাদের পড়াশোনা, খাওয়া দাওয়া শেষ হতো। বাবা বাতি জ্বালিয়ে অনেক রাত অবধি লিখতেন। টের পেতাম মা রান্নাঘরে আছেন। সংসারের শেষ মানুষটির খাওয়া-দাওয়া সাদ হলে তবে তিনি ঘরে ফিরতেন। কিন্তু যতই রাত হোকনা কেন মা ঘরে না ফিরলে দুচোখ ঘুমে আচ্চন্ন হয়ে আসলেও ঘুম প্রতিরোধ করে জেগে থাকতে চাইতাম। মা ঘরে এলে তবে ঘুমোব। খুব দেরিতে আসতেন- চারদিকে শীতের রাত কখন নিথর, নিস্তব্ধ, আমাদের বাড়ি থেকে খানিকটা দুরে নারিকেল বীথির ভিতর থেকে বাজকুরল পাখি ডাকত। প্রহরে প্রহরে সেই পাখি দুটো বরিশালের শীতের শিয়রে অনন্ত অন্ধকারে দেবযানী আত্মাদের সংঙ্গে। মা ঘরে এসে ঘুরতেন ফিরতেন এবং সেবা করতেন। দূরে পাখির ডাক, আমি এখনো জেগে আছি কেন? কতদূর কি পড়াশোনা করেছি জিজ্ঞেস করতেন। ঘুমিয়ে পড়তে বলতেন। বাইরে পৃথিবীর অন্ধকার অঘ্রানে পৌষের শীত। ভয় পেতাম কোনো পড়শির বাড়ির লোক ডাকতে আসতে পারে। কারো মারাত্মক রোগ হয়েছে হয়তো কোনো দুস্থ পরিবারকে তাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তাদের আশ্রয় থেকে। হয়তো কোনো নিম্মশ্রেণির লোকের মৃত্যু হয়েছে। হয়তো কোনো অনাথ স্ত্রীলোক বিশেষ কারণে বিপন্ন, হয়তো কোনো প্রতিবেশীর ঘরে ছেলেপিলে হবে মার কাছে খবর এসে পৌছুলেই তিনি চলে যাবেন। সারারাত বাড়িই ফিরবেন না। হয়তো আর জেগে বা ঘুমিয়ে একাই পড়ে থাকতে হবে আমাদের। বাইরের থেকে এ রকম কোন ডাক না এলে মা প্রদীপের পাশে সেলাই করতে বসে যেতেন কিংবা সমস্ত দিনের শেষে দু চারটি পত্রপত্রিকা বই নিয়ে বসে পড়তেন। মায়ের মুখ-চোখের সামনের সেই প্রদীপটির দিকে তাকিয়ে শান্তিতে ঘুমিয়ে পড়তাম। সেই বয়স, তখনকার সেই মা, প্রথম মহাযুদ্ধের গোড়ার দিকের সেই অপেক্ষাকৃত নির্দোষ পৃথিবী আজ মনে হচ্ছে কোনো পীস্ কনফারন্সের মানুষের বিক্ষিপ্ত জীবনে সে অনবতুল সমাবেশ ফিরিয়ে দিতে পারবে কি আর? ফিরিয়ে দিতে যাচ্ছে তো কিন্তু সর্বান্তঃকরণে নয়।
আজ অনুভব করি যে তাদের নানা বিজ্ঞানের ভূষণ ছিলনা, কিন্তু মহত্তর মর্মজ্ঞান ছিল। তাদের উচ্চাকাঙ্খা ছিল না। কিন্তু সকলের জন্য যতদূরসম্ভব হিতাকাঙ্খা ছিল।
ভাবনা বেদনা সংকল্প স্বপ্নের কোনো ক্ষয়প্রাপ্তির হাতে ইতিহাসের অন্ধকার ক্ষমতার হাতে মা নিজেকে কোনদিন সমর্পিত করতে যাননি। যে বড় ভূমিকা তার পাওয়া উচিত ছিল। সংসারে সে পটভূমি পাননি তিনি। কিন্তু তাহলে কি হবে। তিলধারনের মতো তুচ্ছ ভূমিকায় দেখিয়েছেন ব্রাক্ষ্মাও প্রতিফলিত হয়ে উঠতে পারে। আমরা তাঁর সন্তান ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করে বেরিয়েছি অনেকদিন হতে চলল। কিন্তু কার কাছে শিক্ষা পেয়েছিলাম আমরা? আমি অন্তত তিনজন মানুষের কাছে- একজন বাবা, একজন মা, আর একজন ব্রজমোহন স্কুলের হেডমাস্টার আচার্য্য জগদীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়।

বরিশাল স্কুল থেকে পাশ করে অনেক বড় বড় কলেজে পড়েছি। ইউনিভার্সিটিতে পড়েছি। কিন্তু আজ জীবনের মাঝামাঝি এসে প্রতিনিয়তই টের পাচ্ছি যে, আমার জীবনে শিক্ষার ভিত্তি এদের হাতে গড়া। একএক সময় মনে হয় মাহভারতের রচনাকর্তা বেদদাসের মতো দৃষ্টি এরা সবই শিখিয়েছিলেন আমাকে। আমার জীবনে সে শিক্ষা যদি ব্যবহারিকভাবে ফলপ্রসু না হয়ে থাকে তাহলে তাদের কোন দোষ নেই, যদি মনোলোক কিছু স্বার্থক হয়ে থাকে। তা হয়েছে এদেরই প্রশস্ত দানের ফলে। নানা নামী কলেজের বড় বড় অধ্যাপকের কাছে পড়েছি বটে, সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, অর্থনীতি সম্পর্কে অনেক খবর যুগিয়েছেন তারা কিন্তু বোধির অবাবে সে খবর পরীক্ষার খাতায় পর্যবশিত হয়ে ডিগ্রি দান করে অন্ধকারে বিলীন হয়ে গেছে। জীবনের যা কিছু কান্ডজ্ঞান, মর্মজ্ঞান, রমাস্বাদ, যা কিছু লোকসমাজে এষণা শক্তি বা নির্জনে ভাবনা প্রতিষ্ঠা, যা কিছু সংবাদকে বিদ্যায় পরিণত করতে পারে। বিদ্যাকে জ্ঞানে সমস্ত জিনিসেরই অন্ত দীর্পন ও বিধি নিয়ম এদের কাছ থেকে লাভ করবার সুযোগ হয়েছিল আমার। আর মুখের ভাষা কি রকম প্রাণক্ষরা ছিল। কত লোকগাঁথাও প্রবাসের যথোচিত সংমিশ্রণে তির্যক ও উজ্জ্বল হয়ে উঠত। বরিশালে যতদিন তাঁর উদ্যম ও কর্মপ্রবাহ অক্ষুন্ন ছিল ততদিন তা শুনেছি ও বুঝেছি। সে ভাষা প্রকৃতি ও প্রকৃতির মতো মানুষপ্তলোকে নিখুঁতভাবে ধরতে পেরেছিল বলেই অমন সহজ পবিত্রতায় ব্যক্ত হতে পারত। সমস্ত স্কুলের জীবনে তিনি আমাদের স্কুলের পড়া শিখিয়েছেন সংসারের কাজকর্মের ফাঁকে ফাঁকে স্কুলীপড়া শেখাবার সুযোগে যে বুনিয়াদ গড়েছেন সেটা স্কুল-কলেজের কারিকুলামের সঙ্গে খাপ খেয়ে চলে না। শুধু সদর্থ আবিস্কার করে চলতে থাকে সংসারের সমাজের দেশের জীবনের। সে পরমার্থগুলো আজো প্রায় সম্পূর্নভাবে সত্য । কোনো নিপাট দর্শন এসে খন্ডন করতে পারেনি সেগুলোকে, কোনো নতুন বিজ্ঞান এসে ছেদ করতে পারেনি। মানুষ এতদিন পৃথিবীতে থেকে পৃথিবীকে ভুল বুঝেছে অথবা নিজের জীবনকে চিনতে পারেনি এ মত পোষণ করা চলে না। সমাজ ও জীবন সম্বন্ধে অনেক দীর্ঘস্থায়ী হয়তো শ্বাশ্বত সত্য আবিস্কার করেছে মানুষ। জীবনে সেসব সত্যের প্রচলন চেয়েছে সৎ মানুষেরা। মাও আজীবন সেই জিনিষই চেয়েছিলেন।
সাহিত্য পড়ায় ও আলোচনায় মাকে বিশেষ অংশ নিতে দেখেছি। দেশী বিদেশী কোনো কোনো কবি ও ঔপন্যাসিকের কোথায় কি ভালো, কি বিশেষ দিয়ে গেছেন তারা এসবের প্রায় প্রথম পাঠ তাঁর কাছ থেকে নিয়েছি। ওয়ার্ডস ওয়ার্থের অনেক ছোট ছোট কবিতা তার মুখে শুনেছি এবং শেলী ব্রাউনিভের, বৈষ্ণব পদাবলী থেকে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত আমাদের দেশের কবিতার মোটামুটি সম্পূর্ন ঐতিহ্য জেনে ও ভালোবেসে এবং বিদেশী কবিদের কাউকে কাউকে মনে রেখে তিনি তাঁর স্বাভাবিক কবিজনকে শিক্ষিত ও স্বতন্ত্র করে রেখেছিলেন।
মার বাবা চন্দ্রনাথ দাসও গান এবং কবিতা লিখেছেন অনেক। এরও দেখেছি অজর্থ স্বভাব রয়েছে যা বিশেষভাবে শিক্ষিত ও নিয়ন্ত্রিত হলে কাজে প্রকাশিত হয়ে উঠতে পারে। না হলে অশিক্ষিত পটুত্ব উল্লেখ্য পদ্যে কোনো কোনো লাইনের বা উপমার উল্লেখযোগ্যতা আরো কিছু প্রগাঢ় হলেও দাদা মশায়ের অনেক লেখা ইশ্বরগুপ্ত, মধুসূদন, হেম, রঙ্গলাল ইত্যাদিকে মনে করিয়ে দিলেও তাঁর সফলতার লেখা বিশেষ করে কয়েকটি গান, লোকগাঁথা ও লোককবিতা খানিকটা স্বার্থক উত্তরসাক্ষ্য হিসেবে টিকে থাকবে মনে হয়।

মা বেশি লেখবার সুযোগ পেলেন না । খুব বড় সংসারের ভেতরে এসে পড়েছিলেন যেখানে শিক্ষা ও শিক্ষিতদের আবহ ছিল বটে কিন্তু দিনরাতের অবিশ্রান্ত কাজের ফাঁকে সময় করে লেখা তখনকার দিনের সেই অসচ্ছল সংসারের একজন স্ত্রীলোকের পক্ষে শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়ে উঠলো না আর। কবিতা লেখার চেয়ে কাজ ও সেবার সর্বাত্মকতার ভেতরে ডুবে গিয়ে তিনি ভালোই করেছেন হয়তো। তাঁর কাজকর্মের আশ্চর্য নিষ্ঠা দেখে সেই কথা মনে হলেও ভেতরের খবর বুঝতে পারিনি। কিন্তু তিনি আরো লিখলে বাংলা সাহিত্যের বিশেষ কিছু দিয়ে যেতে পারতেন মনে হয়। মার কবিতায় আশ্চর্য প্রসাদ গুণ। অনেক সময় বেশ ভালো কবিতা বা গদ্য রচনা করছেন দেখতে পেতাম ।
সংসারের নানা কাজকর্মে খুবই ব্যস্ত আছেন এমন সময় ব্রাক্ষ্মবাদীর সম্পাদক আচার্য মনোমোহন চক্রবর্তী এসে বললেন- এক্ষুণি ব্রাক্ষ্মবাদীর জন্য তোমার কবিতা চাই, প্রেসে পাঠাতে হবে, লোক দাড়িয়ে আছে । শুনে মা খাতা কলম নিয়ে রান্নাঘরে ঢুকে এক হাতে খুন্তি আরেক হাতে কলম নাড়ছেন দেখা যেত। যেন চিঠি লিখছেন বড় একটা ঠেকছেন না কোথাও । আচার্য চক্রবর্তীকে প্রায় তখনই কবিতা দিয়ে দিলেন। স্বভাব কবিদের কথা মনে পড়ত আমার, আমাদের দেশের লোক কবিদের স্বভাবেই সহজাতকে।
অনেক আগে প্রথম জীবনে মা কয়েকটি কবিতা লিখেছিলেন। যেমন- ছোট নদী দিনরাত বহে কুলকুল অথবা দাদার চিঠি কিংবা বিপাশার পরপারে, হাসিমুখে রবি উঠে, একটি শান্ত, অর্থধ্বন সুস্মিত ভোরের আলো, শিশির লেগে রয়েছে যেন এসব কবিতা শরীরে। সেদেশ মায়েরই স্বকীয় ভাবনা কল্পনার স্বীয় দেশ। কোনো সময় এসে সেখান থেকে এদের স্থানচ্যুত করতে পারবে না।

আজকের পৃথিবীর জীবনবেদের তাৎপর্য মা বেশি বলেছিলেন তাঁর পদ্য লেখায়, অভিভাষণে, সমাজে নানা সমিতির কাজকর্মে, লোকসমাজের সঙ্গে লেনদেনে নানা রকম বিখ্যাত বই ও চিন্তা ধারার সঙ্গে পরিচয়ের পিপাসায়, ভাবনা বিচারের আধুনিকতার মর্ম দেখেছিলেন যখন তার কিছু আগেই কবিতা লেখা প্রায় ঘুচিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ফলে যে মহৎ কবিতা হয়তো তিনি লিখে যেতে পারতেন, তাঁর রচিত কাব্যের ভেতরে অনেক জায়গাতেই তার আভাস আছে, কিন্তু কোন জায়গাতেই সম্পুর্ন সিদ্ধি নেই। মাঝে মাঝে কবিতার ভেতর দু চারটে বিচ্ছিন্ন সিদ্ধিকে বাদ দিয়ে। গদ্যসন্দর্ভ রচনায়ও এরকম সৎ সাহিত্যের উপাদান ছিল তাঁর মধ্যে। বাবা ও পিসে মশায়ের অবর্তমানে তিনি বরিশালের ব্রাক্ষ্মসমাজে আচার্যের কাজ করতেন। আরাধনা উপাসনা আশ্চর্য নির্ঝরের মতো ধ্বনিত হয়ে তবুও ধ্বনির অতীত অর্থ গোরিদের দিকে আমাদের মর্ম ফিরিয়ে রাখত, কোথাও ঠেকতেন না, তাল কেটে যেত না, পুনরুক্তি ছিল না, কিন্তু যে সাহিত্যিক ও কবির গরিমা তাঁর প্রাপ্য ছিল, সেটাকে অন্তর্দমিত করে রাখলেন। তিনি প্রকাশ্য কোনো পুরস্কার নিতে গেলেন না। শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকদের লেখায়ও নিজের অলিখিত অনুভাবনা বিতর্ক ও ধ্যানের ভেতর কেমন যেন আত্মনির্বান খুঁজে পেতেন আত্মশুদ্ধির জন্য।

অনেকদিন আগে চিত্তরঞ্জনের মৃত্যুর পর তাঁর ওপর আমি একটি কবিতা লিখেছিলাম। মা নিজে কবিপত্র পত্রিকার পাতায় আমার সেই প্রায় প্রথম জাতক কবিতাটি সম্বন্ধে তাঁর মতামত জানবার জন্য মাকে এককপি সাহিত্যপত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। মা আমাকে ফেরত ডাকে লিখলেন, চিত্তরঞ্জন সম্বন্ধে লিখছো, ভালোই করেছ, কিন্তু রামমোহনের ওপর লিখতে বলেছি তোমাকে, মহর্ষির ওপরেও। তিনি পড়ে বিক্ষুব্ধ বোধ করেছিলেন- এ যেন ধান ভানতে শিবের গীত। কিন্তু দেশের নানা রকম সাময়িক ঘনঘটাচ্ছন্ন অতীতে রামমোহন যে কত বড় পুরুষ আমাদের সক্রিয় সচেতন মনে যে অঙ্গীকারের একটা স্পষ্ট জীবনবেদ দেখতে চাইতেন তিনি। অনেক আগে আমার মন বড় বড় আদর্শ পুরুষকে তাদের উঁচু পীঠস্থান থেকে নামিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে চাইত তাঁদের সত্যিকারের মূল্য নিরুপনের নামে বিনাশী বুদ্ধিবলে তাঁদের আঘাত করে। মা টের পেয়েছিলেন, বলেছিলেন- ওরকম করে হয় না আগে তাদের মহত্বে বিশ্বাস কর- মনের নেতিধর্মী নষ্ট করে ফেল। শুধু মহামানুষ কেন, যে কোন মানুষ কতখানি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের পাত্র অনুভব করতে শেখ।
দেশে ও বিদেশের যেসব মহাপুরুষের তালিকা দিয়েছিলেন তিনি আমাকে- অনেক অনুতর্ক বিতর্কের পর টের পেয়েছি সত্যিই তারা মহৎ। যেকোন তুচ্ছ মানুষকে শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস করতে বলেছিলেন। এখন বুঝেছি ঠিকই বলেছিলেন। যদিও মায়ের সেই নির্ধারিত পথে মনপবনের মাঝির দল চলেছে যত বেশি, বাস্তব যাত্রা সেই অনুপাতে কিছুই হয়ে উঠছে না ব্যক্তির বা জাতির বা পৃথিবীর জীবনে। বিদ্বেষই বেশি, হিংসা কেটে যায় না, সংঘর্ষ নষ্ট করে ফেরতে চায় সব। রোলার মত, টমাস থম, রবীন্দ্রনাথ, আইনস্টাইন, গান্ধীজীর মতো একেকজন লোক তবুও আশা করে বসে থাকেন। ইতিহাস চেনে তাদের। আমার মার মতো একজন মহিলাও আশা করে বলেছিলেন, বিশ্বাস করতেন’।

স্বর্ণা লাকী, সাবেক শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

তথ্যসূত্র:
(১) লায়লা জামান সম্পাদিত : কুসুমকুমারী দাসের কবিতা অবসর, ঢাকা ২০০০
(২) ড. মিজান রহমান সম্পাদিত : শ্রেষ্ঠ কবিতা : কুসুমকুমারী দাস, কথা প্রকাশ, ঢাকা ২০১২
(৩) যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত: বঙ্গের মহিলা কবি কলকাতা : দ্বিতীয় সংস্করণ ১৩৬০

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *