মাদক নামের সামাজিক ব্যাধি প্রতিরোধে করণীয়

এ. এম. আবদুল জাহের
শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড, ক্রীড়া জাতির মানদন্ড। নেশা ও মাদকমুক্ত সমাজ হলো সেই মেরুদন্ডের মজ্জা। যদি মেরুদন্ডের মজ্জা শুকিয়ে যায়, দুষিত হয়ে যায়, নষ্ট হয়ে যায় কিংবা ভঙ্গাকুর অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাহলে সেই মেরুদন্ডতো সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনা কিংবা দাঁড়াতে পারলেও তা দিয়ে কোন কাজ হয় না। এরকম মেরুদন্ডের উপর ভর করে আশা ব্যাঞ্জক কোন কিছু হতে পারে না। আমাদের দেশের উদীয়মান তরুন শিক্ষিত সমাজ হোক কিংবা অশিক্ষিত তরুন সমাজ হোক তাদের অনেকেই ক্রমান্বয়ে নেশা ও মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। আমাদের সমাজে সভ্যতার অগ্রগতি হচ্ছে ঠিকই কিন্তু সমাজে জুয়া, নেশা ও মাদক ব্যবহার আশানুরুপ না কমে ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। মাদক, নেশা ও জুয়া সামাজিক ক্যান্সার নামে এই রোগ যদি বাড়তে থাকে তাহলে সমাজটা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে যা নিরাময় করা খুবই দুরুহ হয়ে পড়বে। সেক্ষেত্রে সমাজ থেকে এ ব্যাধিটি নিরাময়-এর ব্যাপারে সতর্ক হওয়া দরকার। আমরা হয়তো সমগ্র দেশে একসাথে সামাজিক এই অপরাধটি নির্মুল করতে পারবো না ঠিক, কিন্তু আমরা স্ব-স্ব উপজেলায় যে সব পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আমাদের সমাজকে আমরা মাদকমুক্ত সমাজ ও দেশ গড়তে পারব সেটাই হলো বিবেচ্য বিষয়। সমাজের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের উপরই একটি দায়িত্ব রয়েছে। আমরা তা একটু মনে করে যথাযথ পদক্ষেপ নিলেই একটি মাদকমুক্ত সমাজ উপহার দিতে সক্ষম হবো। যদি সে দায়িত্বগুলো ঘুর্নায়মান চক্রের মতো হয়। যেমন-
অভিভাবকের> শিক্ষার্থীর> শিক্ষকের> শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের> স্থানীয় লোকদের> স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের> ব্যবসায়ীদের> পুলিশ বিভাগের> প্রশাসনের> রাজনৈতিক দলের> সাংবাদিক ও মিডিয়ার দায়িত্ব এবং নতুন আইন প্রনয়ন করা।

অভিভাবকের দায়িত্ব
পরিবারের প্রধান হিসেবে অভিভাবক যিনি রয়েছেন, তার উচিৎ সন্তানের চলাচলের গতিবিধি পর্যবেক্ষন করা। পরিবার প্রধান-সহ অন্যান্য সবাইকে ছেলে-মেয়েদের প্রতি যে সব বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে তা হলো: মাদকে আসক্ত কোন ছেলে-মেয়েদের সাথে সখ্যতা আছে কি না। নিয়মিত বিদ্যালয়ে যায় কিনা। অতিরিক্ত সময়গুলো সে কোন পরিবেশে ব্যয় করে। তাদের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার প্রতি খেয়াল রাখা।
শিক্ষার্থীর দায়িত্ব
একজন শিক্ষার্থী হিসেবে তাকে যেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে তা হলো- মাদকে আসক্ত কোন শিক্ষার্থীর সাথে মিশা যাবে না। তবে ভালে পথে, সুস্থ পথে, সুস্থ জীবনে নিয়ে আসার জন্য তার সাথে মিশা যেতে পারে। মাদক ও ইভটিজিং-কে না বলার উদ্ভুদ্ধ করতে হবে। নিজেকে সতর্ক রাখতে হবে।
শিক্ষকের দায়িত্ব
‘শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড’ আর এর নাবিকের দায়িত্ব পালন করছেন শিক্ষকরা আর সেখানে শিক্ষার্থী নামের যাত্রীরা যদি বিপদগামী হয় কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নামক তরী থেকে হোঁচট খেয়ে পানিতে নিমজ্জিত হয়। সেক্ষেত্রে নাবিকের দায়িত্ব পালনরত শিক্ষক কোন ভাবেই দ্বায় এড়াতে পারে না। হ্যাঁ এ কথা সত্যি যে, নাবিকের নির্দেশনা, সর্তকতা, অমান্য করে অগ্রাহ্য করে কোন যাত্রী নামের শিক্ষার্থী যদি সাগরে ঝাঁপ দেয় তখন নাবিকের দেখে দেখে চেয়ে থাকা এবং দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আর কিই বা করার থাকে। একজন শিক্ষক হিসেবে একজন শিক্ষার্থীর প্রতি যে সব বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে তা হলোঃ- শিক্ষার্থীর চলাফেরার গতিবিধি। শারীরিক ও মানসিক অবস্থার প্রতি সতর্ক দৃষ্টি। সেরকম কিছু মনে হলে শিক্ষার্থীর অভিভাবকের সাথে, বিদ্যালয় প্রধানের সাথে পরামর্শ করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে হতে পারে- শিক্ষার্থীকে নিরুৎসাহিত করা। শিক্ষার্থীকে বুঝানো। সতর্ক করা। সর্বশেষ বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মধ্যে সমন্বয় করে নেশা ও জুয়ামুক্ত কমিটি গঠন করে প্রতি মাসে না হলেও ত্রৈ-মাসিক অন্তর কাজের অগ্রগতি মূল্যায়ন করা, বিভিন্ন উদ্দীপনা পুরস্কারে ভুষিত করা এবং কাজের অগ্রগতি অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা। অভিভাবকের সাথে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা।
স্থানীয় লোকদের দায়িত্ব
সমাজে জনপ্রতিনিধি ছাড়াও স্থানীয় সুনাগরিকের কিছু দায়-দায়িত্ব রয়েছে সমাজের প্রতি, কারন আমরা সমাজে বসবাস করব কিন্তু সমাজের প্রতি কোন দায়িত্ব পালন করব না এমনটা হতে পারেনা। সমাজ এর সকলকে নিজস্ব পরিবারের মতোই মনে করতে হবে। এজন্য তাদের-কে সচেতন হতে হবে। যাতে করে সমাজের কোন লোক যেন মাদকাসক্ত না হয়। কোন কারনে হয়ে পড়লে সংশ্লিষ্ট মাদক সেবনকারীর পরিবারকে সতর্ক করে দিতে হবে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব
সমাজে মাদক, নেশা কিংবা ইভটিজিং প্রতিরোধ এবং সমাজ থেকে নির্মুল করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অনেক গুরুদায়িত্ব রয়েছে। তাদেরকে এ ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর হতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় সমাজে যারা এ সব অসামাজিক কার্যক্রমে জড়িত তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মৌন দৃষ্টিতে হোক কিংবা তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে হোক মাদকাসক্ত, নেশা ও জুয়ায় আসক্তদের ব্যাপারে কঠোর ভূমিকা প্রয়োগ করতে দেখা যায় না। এমনকি অনেক সময় এদেরকে স্থানীয় জনপ্রতিধিদের আশে-পাশে কিংবা তাদের সাথে ভাল একটা সখ্যতা দেখা যায়, যারফলে অপরাধিরা নিজেকে একটু শক্তিশালী মনে করে এবং প্রভাব খাটিয়ে সমাজে মাদক নেশা ও জুয়ার সম্রাজ্য গড়ে তোলে। এদের ক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে বিভিণ্ন পদক্ষেপ গ্রহন করতে হবে, যেমন- সামাজিক ঐক্য গড়ে তোলা। যারা এ জাতীয় অপকর্মের সাথে জড়িত তাদেরকে আশ্রয়-প্রশ্রয় কিংবা মদদ না দেওয়া। স্থানীয়ভাবে তাদের ব্যাপারে জনমত তৈরী করে তাদেরকে সামাজিকভাবে কঠোর শাসনের মধ্যে রাখা। প্রয়োজনে তাদেরকে আইনের হাতে তুলে দেওয়া। প্রতিটি ওয়ার্ডে মাদক, নেশা, জুয়া এবং ইভটিজিং প্রতিরোধ কমিটি গঠন করে একটি কার্যপ্রনালী তৈরি করে তা বাস্তবায়ন করা।
ব্যবসায়ীদের দায়িত্ব
মহান সৃষ্টিকর্তা ব্যবসাকে হালাল করেছেন এবং সুদকে হারাম করেছেন। ব্যবসা এটা একটি সেবামূলক মহৎ কাজ। সেক্ষেত্রে অবশ্যই একজন ব্যবসায়ীকে মনে রাখতে হবে যে আমি এমন ব্যবসা করব না যার দ্বারা আমার মতো অন্য একটি পরিবার, সমাজ এবং দেশের অনাগত নাগরিক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। ধ্বংস হয়ে যেতে পারে একটি সুশীল সমাজ। একজন ব্যবসায়ী হিসেবে এই অঙ্গীকার করা উচিৎ যে, আমি নেশা জাতীয় পন্য এবং মাদক দ্রব্য পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ কোন ভাবেই এ জাতীয় ব্যবসা করবনা। কারন সমাজের কাছে তার এ দায়বদ্ধতা রয়েছে।
পুলিশ বিভাগের দায়িত্ব
বাংলার আপামর জনতার রক্ষক মানুষের জান-মাল, ইজ্জত ও মৌলিক অধিকার সমুন্নত রাখার অতন্দ্র প্রহরী হলেন দেশের পুলিশ বিভাগ। একটি সমাজ কতখানি অপরাধমুক্ত হবে তার সঠিক মানদন্ড নিরুপন করে পুলিশ বিভাগের উপর। একটি সমাজকে কাঁচের আয়নার মতো স্বচ্ছ ও পরিষ্কার করতে পারে পুলিশ বিভাগ ‘যদি তারা তা করতে চায়’। তবে অবশ্য এ ক্ষেত্রে তাদেরকে থাকতে হবে রাজনৈতিক দলের প্রভাবমুক্ত এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তার এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সুপারিশমুক্ত। সেক্ষেত্রে প্রকাশ্যে বিড়ি-সিগারেট পান কারির ব্যাপারে যে আইন প্রচলিত আছে তা বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে অগ্রনী ভূমিকা পালন করতে হবে। তাছাড়া আরও যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে তা হলোঃ- মাদকের সাথে যে বা যারাই জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা। সেক্ষেত্রে একজন মানুষ হিসেবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে কোন নিরপরাধ ব্যক্তি যেন ভূক্তভোগী না হয়। মাদকাসক্ত ব্যক্তি সে যেই হোক সবাইকে আইনের দৃষ্টিতে সমান দেখতে হবে। সমাজে অনেক ভদ্রবেশী মানুষ আছে যারা মাদকে আসক্ত, তাদের ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহন করা। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ত্রৈ-মাসিক অন্তর-অন্তর শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষক নিয়ে পুলিশ বিভাগের সভা-সেমিনারের আয়োজন করা। বিভিন্ন পয়েন্টে জুয়া, মাদক ও ইভটিজিং এর উপর মোবাইলটিম গঠন করে যথাযথ সাক্ষ্য-প্রমান সাপেক্ষে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা। সন্দেহভাজন বিভিন্ন স্পট এবং দোকান চার্জ করা। বিভিন্ন জায়গায় নির্জন ও পরিত্যাক্ত ভবন-আবাসন চার্জ করা।
প্রশাসনের দায়িত্ব
একটি এলাকার প্রশাসনের উপর নির্ভর করে ওই এলাকার সার্বিক আইন বাস্তবায়ন। কেননা যদি প্রশাসন মনে করে, আমার এলাকা আমি মাদক ও নেশামুক্ত সমাজ গড়ে তুলব, একটি ইভটিজিং মুক্ত সমাজ উপহার দিব। সেই মোতাবেক যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহন করা যেতে পারে তা হলোঃ- রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিদের, পুলিশ বিভাগের প্রতিনিধিদের, প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের, সাংবাদিক ও মিডিয়া ব্যক্তিবর্গের, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের এবং মসজিদের ইমামদেরকে নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে সমাজকে মাদকমুক্ত সমাজ ঘোষণা করে সেই মোতাবেক কার্যপ্রনালী তৈরী করে তা বাস্তবায়নে নির্দেশ করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা। ত্রৈ-মাসিক সভার অগ্রগতি মূল্যায়ন করে সেই মোতাবেক সিদ্ধান্ত গ্রহন করা।
রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব
রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ও জনপ্রতিনিধিগনই রাষ্ট্র পরিচালনার চাবি-কাঠি। সেক্ষেত্রে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের এই অঙ্গীকার বদ্ধ হওয়া সময়ের দাবী যে, আমরা আমাদের দেশ, জাতি, সমাজ, পরিবার, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, বিশ্বমানব কল্যাণ ও ধর্মীয় অনুশাসন পালনের স্বার্থে একটি মাদক ও নেশামুক্ত সমাজ এবং দেশ গড়ে তুলব। আর এটা করতে পারলে দেশের সর্বত্র অপরাধের মাত্রা (৩০-৪০)% কমে আসবে। আমাদের নতুন একটি শ্লোগান হওয়া দরকার ‘মাদকমুক্ত দেশ চাই, নেশামুক্ত সমাজ চাই, নিরাপদে চলতে চাই’। আমাদের এ কথা বিশ্বাস রাখতে হবে যে, শুধু অল্প মূল্যের মাদক দ্রব্যই মাদক নয়, সেটা হতে পারে বেশী মুল্যেরও। সমাজের যারা উচ্চবিত্ত কিংবা উচ্চ মধ্যবিত্ত তাদেরকে সজাগ ও সর্তক হতে হবে। আমাদের দেশের সকল রাজনৈতিক দলের এই অঙ্গিকারবদ্ধ হওয়া দরকার যে, মাদক ও নেশা জগতের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি দলের কর্মী কিংবা নেতৃত্ব পদ পাবে না। মাদকের সাথে পরোক্ষ কিংবা প্রত্যক্ষভাবে যারা জড়িত তাদেরকে স্থানীয় সরকার থেকে আরম্ভ করে কোন জনপ্রতিনিধিত্ব করার দায়িত্ব অপর্ন করা যাবে না। মনে রাখতে হবে যে ‘সাপের কাছে ব্যঙ যেমন নিরাপদ নয়, মাদকাসক্তি ব্যক্তির কাছে তেমনি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং সমাজের নাগরিকরা নিরাপদ নয়”।
মিডিয়া ও সাংবাদিকদের দায়িত্ব
সমাজ সংস্কারক, পরিবর্তন, পরিমার্জন, সংশোধন, অন্যায়-দুর্নীতি, অপরাধ দূরীকরন, সমাজ ও দেশের সার্বজনীন অবস্থার পরিবর্তনের কর্নধার ও যোদ্ধা হলো মিডিয়া তথা সাংবাদিকবৃন্দ। তারা হলেন সমাজের বিবেক, সমাজ ও দেশকে স্থিতিশীল কিংবা অস্থিতীশীল, সমাজ ও দেশে অপরাধ-অপরাধী সনাক্তকরন এবং নির্মুলকরনে তাদের ভূমিকা হলো অতন্দ্র প্রহরীর মতো। কলমের অস্ত্র থেকে পৃথিবীতে কোন শক্তিধর অস্ত্র এখনো তৈরি হয়নি আর তারাই হলেন এই অস্ত্রের মালিক। বিবেচ্য বিষয় হলো তারা কীভাবে তা প্রয়োগ করবেন? আর এর উপর নির্ভর করে আমাদের সমাজের এবং দেশের আর্থ-সামাজিক পরিবর্তন। অপরাধের উৎস খুঁজে বের করে তা সমাজ ও দেশের মানুষের সম্মুখে তুলে ধরার গুরু দায়িত্ব মিডিয়া তথা সাংবাদিকবৃন্দের। আর এরা এদের নৈতিক দায়িত্ব পালন করতে পারলে সমাজ-সংসার থেকে মাদক, নেশা ও ইভটিজিং সহ অনেক অপরাধই নির্মূল ও স্বমূলে উৎপাটন করা সম্ভব।
নতুন আইন প্রনয়ন করা
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের বাস্তব সমস্যা নিরুপনের জন্য প্রয়োজনে মাদক নিয়ন্ত্রন আইন সংশোধন, পরিমার্জন কিংবা পরিবর্ধন করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের মাদক নিয়ন্ত্রন আইনের রেফারেন্স উল্লেখযোগ্য। ভারতের এক প্রদেশে যদি পরিবারের কেউ ভূলক্রমে মাদকে কিংবা নেশায় আসক্ত হয় তাহলে ওই পরিবারের সবাইকে আইনের আওতায় এনে তাদেরকে শাস্তির সম্মুখীন করা হয়। ঐ দেশের মুখ্য মন্ত্রী বাস্তবমুখী এই আইন প্রনয়নের জন্য অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হলেও সাধুবাদ ও ধন্যবাদ পাওয়ার দাবীদার, কারন এতে করে ঐ প্রদেশে মাদক ও নেশার বিরুদ্ধে এক অসাধারন বিপ্লব সফলতা অর্জন করেছে। আর যে কারনে একজন মাদকে আসক্ত ব্যক্তি এই জগৎ থেকে ফিরে আসবে তা হলো: নেশা কিংবা মাদকে আসক্ত ব্যক্তি চিন্তা করবে যে, আমি যদি এরকম অসামাজিক ও বে-আইনি কর্মকান্ড করি তাহলে আমার পরিবার ভোগান্তির শিকার হবে। এরকম আত্ম-অনুশোচনাবোধ থেকে মাদকাসক্ত ব্যক্তি নেশার জগৎ থেকে ফিরে আসবে। পরিবারের অন্য সবাইও সচেতন হবে। সতর্ক থাকবে যে, আমার পরিবারের কেউ যদি নেশা কিংবা মাদকাসক্তির সাথে জড়ায় তাহলে আমাদের সবাইকে যেহেতু এর ফল ভোগ করতে হবে সেহেতু পরিবারের এরকম সদস্যদের ব্যাপারে সবাই সচেতন হবে এবং এই সামাজিক ব্যাধি থেকে ধীরে ধীরে সমাজ কুলষিতমুক্ত হবে। পরিবারের সবাই একে অপরের প্রতি দায়িত্বশীল ও সতর্ক হবে যাতে নেশার জগতে পরিবারের কেউ যেন প্রবেশ করতে না পারে। ##

এ. এম. আবদুল জাহের
সিনিয়র সহকারি শিক্ষক
সরকারি সংহতি পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়
হিজলা- বরিশাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *