১৫৫৬ সালে কিশোর আকবর দিল্লির সিংহাসনে আরোহন করেন। নাবালক বকলম অশিক্ষিত সম্রাটকে হিন্দু রাজা মহারাজারা রাজপুতনী হেরেম বালাদের মাধ্যমে ত্বরিত তালিম দিয়ে উঠতি যৌবনেই আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলেন। তারা প্রাচীন ভারতে শক-হুন শাসনামলে আর্য-ব্রাহ্ম ক্ষত্রিয়ের দ্বারা অনুসৃত ‘‘তিন প্রজন্ম প্রকল্প’’ পুনঃবাস্তবায়নের কর্মসূচি হাতে নেন। সে প্রকল্পটি ছিলো নিম্নরূপ:
প্রথম প্রজন্মে একজন ১০০% মুসলমান পুরুষের সাথে একজন ১০০% হিন্দু নারীর বিয়ে দিতে হবে, তাদের মিলনে যে শঙ্কর জন্মাবে সে হবে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবনে ৫০% মুসলমান ও ৫০% হিন্দু।
দ্বিতীয় প্রজন্মে সেই ৫০% মুসলমানের সাথে কোনো ১০০% হিন্দু নারীর বিয়ে হলে যে শঙ্কর জন্মাবে সে হবে ১৭% মুসলিম ও ৮৩% হিন্দু।
তৃতীয় প্রজন্মে সেই ১৭% মুসলমানের সাথে ১০০% হিন্দু নারীর বিয়ে দিলে পরবর্তী প্রজন্মের সন্তানটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় জীবনে হবে ৯৩% হিন্দু ও ৭% মুসলিম। অর্থাৎ তিন প্রজন্ম শেষ হতে হতে মুসলমানিত্বও শেষ হয়ে যাবে।
আর এর সাথে সুরা ও নারীর প্রাচুর্যযুক্ত হয়ে যদি ক্যাটলেটিক এজেন্টের কাজ করে তবে পারসেন্টেশনের প্রবৃদ্ধি আনুপাতিক হারের চেয়েও অনেক দ্রুত সাধিত হবে। এ নীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একে একে রাজা মহারাজারা অনেকেই তরুণ আকবরের হাতে ভগ্নী ও কন্যা সম্প্রদান করেন। গড়ে তোলেন নিকটাত্মীয়ের সম্পর্ক।’ এ ধর্মান্তর প্রক্রিয়া আজও অব্যাহত। এর পাশাপাশি ভারতীয় সংস্কৃতি, টিভি, মিডিয়া, ফিল্ম, নাটক, সিরিয়াল, সরকার মুসলিমদের ইসলামশূণ্য করার নানা ফন্দি ফিকিরে নিযুক্ত। ভারতীয় চরিত্র চাচ্ছে, মুসলমানরা শুধু নামেই মুসলিম থাকবে, কাজেকর্মে হবে শুধুই হিন্দু পৌত্তলিক বা ব্রাহ্মণ্যবাদী। শ্রী অন্নদাশঙ্কর রায়ের মতে, ‘মুসলিম তবে মস্তিষ্ক হিন্দুর।’
[ ড. মুহাম্মদ ফজলুল হক : নবাব সিরাজউদ্দৌলা ও বাংলার মসনদ, বাড কম্প্রিট এন্ড বাপলিকেশন্স ঢাকা, দ্বিতীয় প্রকাশ, জানুয়ারি ২০০২, পৃ ৫৮]