গ্রামেই আছে গ্রামীণ খেলা

খায়রুল বাশার আশিক

যারা শৈশব থেকে শহুরে এলাকায় থাকেন, তারা অবশ্যই আধুনিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত। শপিং মলে কেনাকাটা, নতুন সঙ্গীত, বিশ্ব ফ্যাশন অনুসরণ করা বা অত্যাধুনিক ডিভাইসে গেম খেলার মধ্য দিয়ে জীবন কাটে। কিন্তু গ্রামে শৈশবের সুখটা কেমন? কোন খেলায় আছে গ্রামের ছেলেবেলার সুখ? গ্রামীণ সেসব খেলা কিন্তু রয়েছে গ্রামেই।
গ্রামীণ শিশুদের তেমন কিছু ছবি নিয়ে আজকের ফটোফিচার।

বিলাসবহুল এবং আধুনিক জীবনধারা উপভোগ করার পরে অনেক শিশুই হয়তো কল্পনা করতে পারে না, কিভাবে শহরের বাইরে বসবাস করতে হয়। তবে প্রত্যন্ত গ্রাম কিন্তু এখনও প্রাকৃতিক।


বর্তমান ডিজিটাল যুগে, ঐতিহ্যগত অনেক কিছুই হারিয়ে গিয়েছে। সময়ের সাথে সাথে নতুন সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে অনেক সৃষ্টাচার। তবুও ঐতিহ্যবাহী খেলার সঙ্গে আজও মিশে আছে গ্রামের শিশুদের জীবন।


গ্রামে দড়ি লাফ আজও জনপ্রিয়, ডাংগুলি জনপ্রিয়, জনপ্রিয় কানামাছি, বৌছি, হাঁ-ডু-ডু, পাক্ষি খেলা, গোল্লাছুট, মারবেল, হাঁসধরা, রশিটানা, ইচিং-বিচিং, ওপেন টু বায়োস্কোপ, মল­যুদ্ধ, লাঠিখেলা, দাঁড়িয়াবান্ধা, লুকোচুরি, মোরগ লড়াই, কড়ি, ধাপ্পা, কুতকুত, বিস্কুট খেলা, যেমন খুশি তেমন সাঁজ, পুতুলের বিয়ে, চড়ুইভাতি, এলাডিং বেলাডিং, সাত চাড়া, বিয়ের গান নামক নানা খেলা। এমন খেলাগুলোই যেন গ্রামের ছেলেবেলার সুখ।


এসব জনপ্রিয় খেলা শহুরে শিশুদের কাছে অপরিচিত। যা ওদের কাছে একেবারেই অজানা। তবে এটাও সত্য যে, গ্রামে গ্রামে এসব খেলা আজও চোখে পড়লেও তার পরিধিও ছোট হয়ে আসছে দিনকে দিন।

শহুরে শিশুদের লাইফস্টাইল অনুকরণ করতে শিখছে গ্রামীণ শিশুরাও। গ্রামীণ প্রজন্মের অনেকেই খেলার মাঠ বাদ দিয়ে মোবাইলে গেম খেলতে শিখেছে।

এছাড়াও আগের মতো খেলার মাঠ, পতিত জায়গা, বাড়ির ওঠানও নেই। সেই কারণে সামাজিক অবক্ষয় ও তরুণরা নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে।

জ্ঞানীজনদের ধারণা নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের ঐহিত্যবাহী লোক-সংস্কৃতির পরিচয় করিয়ে দেয়া প্রয়োজন। যাতে আধুনিককালে তারা এই খেলা মায়ার বাঁধনে বুকে লালন করতে পারে। মানব জীবনে শরীরচর্চা ও চিত্তবিনোদনের কথাও বাদ বা হেলাফেলা করাও যায় না।


ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা উদ্ধারে স্কুল ও কলেজের পাশাপাশি মাদরাসায় আগের ন্যায় সরকারি-বেসরকারিভাবে উদ্যোগ ও নিয়ম বেধে দেয়া প্রয়োজন।

যখন প্রকৃতি থেকে কোনো কিছু হারিয়ে বা বিলুপ্তি ঘটে তখন দারুণ কদর বাড়ে। ঐহিত্যময় খেলাধুলা শুধুই বইয়ের পাতায় স্থান করে নেয়ার আগেই রক্ষা করা প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *