মায়ের কান্না

রবীন্দ্রনাথ মন্ডল

নিঝুম রাত্রি নির্ঘুম চোখে একা বসে আছেন মা,
সেই যে ভোরে বেরিয়েছে ছেলে এখনো তো আসেনা।
ঘোর সন্ধ্যার আগে প্রতিদিন ফিরে আসে নিজ ঘরে,
আজকে কেন ফিরে এলো না সে- মা’র চোখে জল ঝরে।
এমনি ভাবেই শেষ হল রাত- ডাকলো ভোরের পাখি,
দরজা খুলেই চোখ রাখে পথে ছেলে ফিরে এলো নাকি!
পুবের আকাশে উঁকি দিল রবি ছড়ালো দিনের আলো,
মায়ের মন যে বেদনায় নীল- বিষাদে আঁধার কালো।

কোথা গেল ছেলে! কী যে হল তার! ভাবেন ছলো ছলো চোখে,
এমন সময় কাকে যেন ধরে নিয়ে আসে কিছু লোকে।
যখন উঠানে রাখলো শুইয়ে- কাছে গিয়ে দেখেন মা,
এ যে তার ছেলে! শুয়ে আছে কেন!! মা বলে তো ডাকে না।
ছেলের দেহকে জড়িয়ে মা কাঁদে- ছেলে তো দেয় না সাড়া,
ছেলে ছিলো তাঁর বুকের মানিক, আজ হল ছেলে হারা।
মায়ের কান্না আকাশে বাতাসে নিমিষে ছড়িয়ে গেলো,
পাড়া প্রতিবেশী অবাক হল যে! তাড়াতাড়ি ছুটে এলো।

জল ভরা চোখে সান্ত¡না দেয় জনম দুঃখিনী মা কে,
আদরের ধন এমন অকালে ছেড়ে চলে গেছে তাঁকে।
গতকাল ভোরে রোজের মতোই শহরে গিয়েছে কাজে,
মাঝ রাস্তায় দ্রুত বেগে বাস আসে ঘাতকের সাজে।
চোখের পলকে কেড়ে নিয়ে প্রাণ চলে যায় সেই বাস,
তরতাজা এক যুবক নিমিষে হয়ে যায় মৃত লাশ।
ছেলেকে হারিয়ে মা যে হলেন একা কেমনে ভুলবে দু:খ,
জীবনের তরে খালি হয়ে গেলো দুঃখিনী মায়ের বুক।

আরো পড়ুন

বৈষম্য-বিরোধী শহিদদের স্মরণে

নয়ন আহমেদ ।। অগ্নিগর্ভা এই দেশকে জিগ্যেস করো— আমরা কারা। কারা শিমুল ফুলের মতো দাবি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *