মৃত্যু আসে

শেখ ফাহমিদা নাজনীন ।।
কখনো মৃত্যু আসে ভীষণ সংগোপনে
ঠিক যেন কলসের ঢেলে দেওয়া পানি,
কলসটা কাত হলে আপসে গড়িয়ে পড়ে,
তেমনি আলতো প্রাণ পালায় সে জানি।
কখনো ঘুমিয়ে পড়ে কতকাল রোগে ভুগে
জীর্ণ, শীর্ণ প্রাণ শান্তির ঘুমে,
সেই ঘুম ভাঙে নাকো কতো রাত দিন যায়
ঘুম যেন জুড়ে থাকে মমতার চুমে।
কখনো মৃত্যু যেন অভিশাপ হয়ে আসে
নিজেই ছিনিয়ে নেয় নিজের জীবন,
সে সব মরণে থাকে পরাজিত হাহাকার,
হতাশার আবরণে আত্মহনন।
যে জীবন চিরকাল আত্মকেন্দ্রী হয়ে
নিজের আয়েশটুকু খুঁজে নিয়ে বাঁচে,
পড়শীর বেদনায় যে চোখ কাঁদেনা কভু,
অকষ্টকল্পিত পরমায়ু যাচে।
সে জীবন কক্ষনো কিছুতে হয়না কারো,
সে জীবন চিরকাল ভীন্নগ্রহী,
আপন আত্মলোক, তারাও হারিয়ে যায়
স্বার্থে পড়লে টান স্বার্থ মহী।
সেখানে মৃত্যু আসে ধ্বংসের গীত গেয়ে
জগতের করুণার পাত্র হতে,
স্রষ্টার মহা ক্রোধে আত্মা বিনাশ হয়
অধঃপতনের পথভ্রষ্ট স্রোতে।
রবের বাধ্যপ্রাণ, মানবতা অম্লান,
সত্যের আলো দিয়ে জীবন ভরা,
ভীষণ সাহসী যেন আলোকিত সিংহ,
খেলনা তাদের কাছে বাঁচা বা মরা।
এসব তেজস্বীরা দাঁড়ালে সূর্যালোকে
সূর্য চুপসে যায় সে আলোর তেজ্বে,
মৃত্যু সেখানে আসে মহান রাজার বেশে,
বেহেশতী জলসায় গান ওঠে বেজে।
এমন আত্মা নিয়ে আসমানে আহ্লাদ,
ফেরেসতা আপ্লুত সম্ভাষণে,
মৃত্যু আলতো ছুঁয়ে নিয়ে যায় সেই দেশে
প্রভুর আকাঙ্খিত আলিঙ্গনে।
এমন মৃত্যু পেতে বারেবারে সাধ জাগে,
এমন মৃত্যু যেন ছুঁয়ে যায় প্রাণ,
স্বপ্নটা চিরকাল লালন করতে থাকি,
স্বপ্নের মাঝে আছে জীবনের গান।
শেখ ফাহমিদা নাজনীন 
সংবাদ পাঠিকা, দিগন্ত টেলিভিশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *