জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের ইতিবৃত্ত: পর্ব ২০

ম্যারাথনের যুদ্ধ

ইসায়িপূর্ব ৪৯০ অব্দে প্রাচীন গ্রিসের নগর-রাষ্ট্র অ্যাথেন্সের মূল শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে ম্যারাথন নামের এক ময়দানে গ্রিক ও পারসিকদের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধ। অ্যাথেনীয় এবং তাদের মিত্র প্লাতীয়রা এবং পারস্যের রাজা ১ম দারিয়ুুশের সৈন্যদের মধ্যে এই যুদ্ধ ঘটে এবং যুদ্ধে গ্রিকদের জয় হয়। এই ভয়াবহ যুদ্ধে প্রায় ৬৪০০ মানুষ নিহত হয়।

ম্যারাথনের যুদ্ধের আংশিক ঘটনা - axamulalom's bangla blog

প্রকৃত যুদ্ধের ঘটনাবলী সম্পর্কে নিশ্চিত জানা যায় না। পারসিকদের ছিল অশ্বারোহী সেনাদল। গ্রিকদের এরকম কোনো সেনাদল দেখতে না পেয়ে তারা বিস্মিত হয়েছিল। যুদ্ধে প্রায় ১০ হাজার গ্রিক অংশ নেয়। পারসিক সৈন্যের সংখ্যার ব্যাপারে মতদ্বৈত আছে। সমসাময়িক কবি সিমোনিদেসের দেয়া সংখ্যা ৯০ হাজার বিশ্বাসযোগ্য নয়। একটি আধুনিক হিসাব অনুযায়ী ২৫ হাজার পারসিক সৈন্য যুদ্ধ করেছিল। তীব্র যুদ্ধশেষে পারসিকেরা বড় পরাজয় লাভ করে এবং সৈন্যসংখ্যা কম হওয়া সত্ত্বেও গ্রিকরা ফাতহ (বিজয়ী) হয়।
[মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া থেকে, তারিখ: ১১ জুলাই ২০২১]

ষষ্ঠ ক্রুসেডের গণহত্যা

পোপ তৃতীয় ইননোসেন্ট সূচনা করেন ৬ষ্ঠ ক্রুসেড। এ ক্রুসেডের ক্রুরতা ছিলো অতি ভয়াবহ। ইসায়ি ১২১৬ সালে পোপের নির্দেশে ২ লক্ষাধিক খ্রিস্টান নাইট সিরিয়া দখলের অভিপ্রায়ে অগ্রসর হয় ইউরোপ থেকে। সেই সূত্রে খ্রিস্টান ধর্মযোদ্ধারা মিশর ও ডালমেটিয়া গমন করে প্রায় ৭০, ০০০ মানবসন্তানকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এই হলো ইননোসেন্ট পোপের নির্দোষিতা!

[ড. আসকার ইবনে শাইখ, ক্রুসেডের ইতিবৃত্ত, মদিনা পাবলিকেশন্স, বাংলাবাজার ঢাকা, ফেব্রুয়ারি ২০০২, পৃ ৩৭]

কানাডায় আদিবাসী শিশু হত্যা

কানাডার একটি পরিত্যক্ত আবাসিক স্কুলে গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। সেখানে পাওয়া গেছে ২১৫টি শিশুর দেহাবশেষ। ধারনা করা হচ্ছে, এরা আদিবাসী শিশু। তাদের মধ্যে কারও কারও বয়স তিন বছরের মতো। ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় কামলুপস ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল স্কুল নামের এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ১৯৭৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়।
কানাডার আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বাধ্যতামূলক বোর্ডিং স্কুল ছিলো। উনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে সরকার ও ধর্মবিষয়ক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিচালিত এসব স্কুলে জোর করে আদিবাসী শিশুদের এনে রাখা হতো। এ ধরনের স্কুলের মধ্যে কামলুপস ছিল সবচেয়ে বড় স্কুল। ১৮৮০ সালে রোমান ক্যাথলিক প্রশাসনের অধীনে এই স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৫০ সালে স্কুলটিতে ৫০০ জনের মতো শিক্ষার্থী ছিলো।
কানাডার আদিবাসীবিষয়ক মন্ত্রী ক্যারোলিন বেনেত বলেন, আবাসিক স্কুলগুলো ছিলো লজ্জাজনক ঔপনিবেশিক নীতির অংশ। সরকার হারিয়ে যাওয়া এসব নিষ্পাপ শিশুকে স্মরণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ ১৮৬৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত এসব স্কুলে ১,৫০,০০০+ আদবাসী শিশুকে পরিবারের কাছ থেকে জোর করে তুলে আনা হয়। এসব শিশুকে নিজেদের ভাষায় কথা বলতে এবং নিজেদের সংস্কৃতি চর্চা করতে দেওয়া হতো না। তাদের নানাভাবে নির্যাতন করা হতো। এ ব্যবস্থার কারণে অনেক আদিবাসী শিশু ঘরে না ফেরায় ২০০৮ সালে এর প্রভাব খতিয়ে দেখতে একটি কমিশন গঠন করা হয়।
২০১৫ সালে প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, নীতিটি ছিল ‘সাংস্কৃতিক গণহত্যা’। ২০০৮ সালে কানাডার সরকার এ জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায়। এসব স্কুলে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

[দৈনিক প্রথম আলো, অনলাইন, কারওয়ান বাজার ঢাকা, ২৯ মে ২০২১]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *