বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে সাংবাদিকতার স্মৃতি

আযাদ আলাউদ্দীন

আমি তখন বিএম কলেজ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক দক্ষিণাঞ্চল পত্রিকার বার্তাসম্পাদক। এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের জন্য আমরা নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করি। কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. নাজিম উদ্দিন স্যার আমাদের এসব উদ্যোগে সর্বাত্নক সহযোগিতা করেন।

ছাত্রজীবনে তিনদিনের একটি ট্রেনিংয়ের আয়োজন ছিলো অনেক ব্যয়বহুল একটি বিষয়। মানসম্মত ট্রেইনার খুঁজে বের করা, তাদের সম্মানী প্রদান, অংশগ্রহণকারীদের প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ভাড়া করা আরো কতো ধরনের খরচ! সবমিলিয়ে প্রায় ৬০ হাজার টাকার বাজেট।

ছাত্রঅবস্থায় এই টাকার যোগান দেয়া আমাদের পক্ষে ছিলো অসম্ভব একটি ব্যাপার। তখন ‘নাগরিক উদ্যোগ’ নামের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বরিশালের দায়িত্বে ছিলেন মনিরুজ্জামান খান। এরআগে তিনি ম্যাসলাইন মিডিয়া সেন্টারে (এমএমসি) কর্মরত ছিলেন। তিনি আমার ঘনিষ্ঠ এবং প্রিয় একজন মানুষ। আমাদের এই অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন সভাপতি মাসুম মিজান সহ আমরা যোগাযোগ করলাম মনির ভাইয়ের সাথে। তিনি বললেন- আমরা যেহেতু মানবাধিকার নিয়ে কাজ করি আপনাদের ট্রেনিংয়ের সাথে যদি মানবাধিকার বিষয়টি যুক্ত করতে পারেন তাহলে আমরা সাপোর্ট দিতে পারবো। আমরা বললাম যে ফরমেটেই হোক ট্রেনিং হওয়া দরকার। আমরা ট্রেনিংয়ের বিষয় ঠিক করলাম ‘ক্যাম্পাস রিপোর্টারদের মানবাধিকার বিষয়ক রিপোর্টিং দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ’। এরপর আমাদের ট্রেনিংয়ের স্পন্সর হয়ে গোলো ‘নাগরিক উদ্যোগ’।

২০০৫ সালের ১৫, ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর বিএম কলেজ লাইব্রেরি ভবনের দোতলায় সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হলো বিএম কলেজ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের এই প্রশিক্ষণ কর্মশালা। তৎকালীন অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. নাজিম উদ্দিন কর্মশালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। বিএম কলেজে অধ্যয়নরত এবং একইসাথে বিভিন্ন মিডিয়ায় কর্মরত ৪০ জন সাংবাদিক তিনদিনের ওই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন।

কর্মশালার ট্রেইনারদের মধ্যে ছিলেন- অধুনালুপ্ত আজকের কাগজের তৎকালীন বরিশাল ব্যুরো চিফ মরহুম মীর মনিরুজ্জামান, প্রথম আলোর তৎকালীন নিজস্ব প্রতিবেদক তৌফিক মারুফ (বর্তমানে তিনি কালের কন্ঠের ডেপুটি চিফ রিপোর্টার), যায়যায় দিনের তৎকালীন বরিশাল অফিস প্রধান স্বপন খন্দকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও বর্তমানে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার মনিরুজ্জামান খান প্রমুখ।

ট্রেনিং শেষে প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে নাগরিক উদ্যোগ ও বিএম কলেজ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে যৌথভাবে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। সেই প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের সবাই এখন সাংবাদিকতা সহ বিভিন্ন পেশায় এখন প্রতিষ্ঠিত।

ছবির ক্যাপশন

১. প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে আপ্যায়ন পর্বে রয়েছেন ডান থেকে বামে- অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আযাদ আলাউদ্দীন, সহসভাপতি (বর্তমানে এটিএন নিউজের সিনিয়র রিপোর্টার) তাওহীদ সৌরভ, সভাপতি  (বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি) মাসুম মিজান, তৎকালীন কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. নাজিম উদ্দিন, সমাজকল্যাণ বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর কে.এম মুজিবুর রহমান, ইসলামী শিক্ষা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুর রব, নাগরিক উদ্যোগের একজন কর্মকর্তা ও সাংবাদিক মনিরুজ্জামান খান।
২. বিএম কলেজ ক্যান্টিনের পেছনে বিএম কলেজ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ের সামনে তৎকালীন কয়েকজন সদস্য
৩. প্রশিক্ষণ কর্মশালায় গ্রুপ ডিসকার্সন পর্বে অংশগ্রহণকারীদের ব্রিফ করছেন বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক স্বপন খন্দকার।

আযাদ আলাউদ্দীন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বিএম কলেজ জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন। ০১৭১২১৮৯৩৩৮

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *