ভোলার স্বাধীনতা জাদুঘর, বাঙালির গৌরবগাথা ইতিহাস

গাজী তাহের লিটন

ইতিহাস কথা বলে। বাঙ্গালীর ইতিহাস রক্ত আর লাশে ঘেরা। ব্রিটিশদের দুইশত বছরের শোষণ-নিপীড়ণ, দেশবিভক্তি এবং মুক্তিযুদ্ধের পথ ধরে আজ স্বাধীন বাংলাদেশ। নতুন প্রজন্মকে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সেইসব ইতিহাস সম্পর্কে অবগত করার উদ্দেশ্যে দ্বীপ জেলা ভোলার বাংলাবাজার এলাকায় তোফায়েল আহমেদ ট্রাস্টি বোর্ডের উদ্যোগে স্বাধীনতা জাদুঘর গড়ে তোলা হয়েছে। দেশের কৃতি সন্তান স্থপতি ফেরদৌস আহমেদ প্রায় এক একর জায়গার উপর নির্মিত ভোলার আকর্ষণীয় এই বিনোদন কেন্দ্রটির ডিজাইন করেন।

স্বাধীনতা জাদুঘরে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, ৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২ সালের ছাত্র আন্দোলন, ৬৬ সালের ছয় দফা, ৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ৭০ সালের নির্বাচন এবং ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সম্পূর্ণ ইতিহাস সংরক্ষিত আছে। এছাড়া এখানে তথ্য ভিত্তিক ভিডিও এবং দুর্লভ ছবির সংগ্রহ দেখে বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের সুযোগ রয়েছে।

স্বাধীনতা জাদুঘরের প্রথম তলায় রয়েছে বঙ্গভঙ্গ, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, দেশ ভাগ ও ৫২ এর ভাষা আন্দোলন সহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার ধারাবাহিক ইতিহাস। দ্বিতীয় তলায় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে রয়েছে। আর তৃতীয় তলায় আছে স্বাধীনতা পরবর্তী বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস। এছাড়া আছে বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও অর্জনের সাক্ষী জাতির পিতার ঘনিষ্ঠ সহচর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহমেদের সংগ্রামী জীবনের উপাখ্যানসহ মুক্তিযুদ্ধের নানা গৌরবগাথা এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।

যাদুঘরে কিভাবে যাবেন

সড়ক ও নৌপথে ভোলা যাওয়া যায়। ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে গ্রীনলাইন ওয়াটারবাস, অ্যাডভেঞ্চার, এম.ভি ভোলা, এম.ভি সম্পদ, এম.ভি কর্ণফুলী, এম.ভি ফারহান ইত্যাদি লঞ্চ ভোলার উদ্দেশ্যে যাতায়াত করে। সড়ক পথে ভোলা যেতে চাইলে প্রথমে ঢাকা থেকে লক্ষ্মীপুর আসতে হবে। লক্ষ্মীপুর হতে প্রতিদিন দুপুর ১২টায় সী-ট্রাক ভোলা উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।এখন ভোলার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত।

কোথায় থাকবেন
ভোলার সদর রোডে বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে। এদের মধ্যে হোটেল জেড ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল আফরোজ, হোটেল হাবিব, হোটেল রয়্যাল প্যালেস, কে জাহান উল্লেখযোগ্য।

নতুন প্রজন্মের কাছে দেশের ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। সঠিক ইতিহাসের পথ ধরেই নতুন প্রজন্ম বিনির্মাণ করবে আগামীর বাংলাদেশ।সেই দৃষ্টিকোণ বিবেচনায় স্বাধীনতা জাদুঘরের মতো প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব অপরিসীম।

গাজী তাহের লিটন, ভোলা।
০১৮১১১৯০৩৩৩

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *