ইসলামী ব্যাংকঃ ব্যবসা ও জান্নাতের অভিযাত্রা

মুহাম্মদ ওয়াছিয়ার রহমান ।।

এখন থেকে চল্লিশ বছর আগের কথা। ৩০ মার্চ ১৯৮৩ বুধবার সকাল নয়টা। ৭৫, মতিঝিল, ঢাকা তৃতীয় তলা, উত্তর পাশ। এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যাত্রা। দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় প্রথম ইসলামী ব্যাংকিং শুরু। এক সময় এদেশের ইসলাম প্রিয় জনতার তৃষ্ণা ছিল সূদমুক্ত ব্যাংক ব্যবস্থা। যাঁরা এর উদ্যোক্তা ছিলেন তাদের ঘুম হারাম ছিল এই ব্যাংকের জন্য। বাংলাদেশ ব্যাংক-এ অনুমোদনের আবেদনের পর সে আবেদনে ‘অনাপত্তি’ পত্র দেয় ২৩ এপ্রিল ১৯৮১। ১৯৮২ বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ‘লেটার অব ইনটেন্ট’ লাভ করে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ব্যাংক অব ঢাকা লিমিটেড’। পরে নাম পরিবর্তন করা হয়। ২৭ মার্চ ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ‘ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড’ নামে ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরু করার লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। ১৩ মার্চ ১৯৮৩ জয়েন্ট স্টক কোম্পানী ইসলামী ব্যাংককে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী হিসেবে অনুমোদন দেয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ৩১ মার্চের মধ্যে ব্যাংক চালু করার শর্তে ২৭ মার্চ ১৯৮৩ ইসলামী ব্যাংককে লাইসেন্স প্রদান করে। খুব কম সময় দেয়ায় ব্যাংকটি চালু করতে বড় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদ্বোধন করা সম্ভব হয়নি।

উদ্যোক্তা ছিলেন যাঁরাঃ

ব্যাংকের উদ্যোক্তাদের এই অভিযাত্রীরা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক লস্কর, মফিজুর রহমান, বায়তুশ শরফের পীর মাওলানা আব্দুর জব্বার মোহাম্মদ ইউনুস, মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মালেক মিনার, মোহাম্মদ হোসেন, আলহাজ বশির উদ্দিন, সফিউদ্দিন দেওয়ান, জাকি উদ্দীন আহমেদ, নূরুজ্জামান, অধ্যাপক আব্দুল্লাহ, ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা আনোয়ার, নাসির উদ্দিন, দাউদ খান ও এ.কে.এম ফজলুল হক এবং এম.এ রশীদ চৌধূরীসহ অনেকে। বিদেশী উদ্যোক্তাদের মাঝে ছিলেন- দুবাই ইসলামিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান সাঈদ আহমেদ লুতাহ, কুয়েত ফাইনান্স হাউজের চেয়ারম্যান আহমেদ রা’যী আল-ইয়াসিন, সৌদী আল-রাযী কোম্পানীর সোলায়মান আল-রাযি এবং ওআইসির সাবেক সহকারী মহাসচিব ও সাবেক সৌদী রাষ্ট্রদূত ফুয়াদ আব্দুল হামিদ আল-খতিবসহ আরো অনেকে। বিশেষ করে জনাব ফুয়াদ আল-খতিব সাহেব ঢাকায় নিযুক্ত সৌদী রাষ্ট্রদূত হওয়ায় বিভিন্ন বিদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। স্পসর খোঁজার জন্য আব্দুর রাজ্জাক লস্কর, মোহাম্মদ ইউনুস ও মোশাররফ হোসেন নিজ খরচে বিদেশে গিয়ে অনেকের কাছেই অনুরোধ জানান স্পসর হওয়ার জন্য ।

ব্যাংক প্রতিষ্ঠার স্বপ্নঃ

ব্যাংকের অন্যতম উদ্যোক্তা জাকি উদ্দীন আহমেদ তাঁর আত্মজীবনী মূলক গ্রন্থে লিখেছেন- ”আব্দুর রাজ্জাক লস্কর সাহেবের অনুরোধে আমি ও মোশাররফ হোসেন ব্যাংকের স্পসর হই। ব্যাংকের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানতে চাইলে তখন আব্দুর রাজ্জাক লস্কর বলেন- ‘মনে করেন বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য এ টাকা আপনারা আল্লাহর পথে দান করছেন। এটি ছদকায়ে জারিয়া। সূদ ছাড়া ব্যাংক চলতে পারবে এটা তখনও অকল্পনীয়। ব্যাংক সফল না হলে পুরা টাকা হারিয়ে যাবে। তবুও আমরা ভাবলাম একটা মহৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছি। এ টাকা ছদকা হিসেবে আল্লাহর পথেই যাবে।” ব্যাংকের অন্যতম উদ্যোক্তা মোহাম্মদ হোসেনের মন্তব্য ছিল- ”ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার আযান শুনে সাড়া দিয়েছি। মানুষকে সূদের গুনাহ ও অভিশাপ থেকে মুক্ত করার এ চেষ্টা। এ ব্যাংক সফল হলে ব্যবসায়ীরা হালাল ব্যবসা-বাণিজ্যেও সুযোগ পাবেন। এ আযান শুনে মনে হলো কষ্ট করে হলেও লাখ পাঁচেক টাকা যোগাড় করতে পারবো। আমরা যদি ইসলামী পদ্ধতির ব্যাংকের ছোট একটা মডেল তৈরি করতে পারি, তা-ই অন্যদের উদ্বুদ্ধ করবে। যদি ব্যাংক না হয় তবে দুনিয়াতে পাঁচ লাখ টাকা ফেরৎ পাব না কিন্তু আখিরাতে আল্লাহর কাছে এ উদ্যোগে সাড়া দেয়ার অছিলায় মাফ পাওয়ার আশা রাখি।” উদ্যোক্তাদের এ কাজের বিনিময়ে তাদের প্রত্যাশা ছিল মূলতঃ জান্নাত। ব্যবসায়িক কোন লক্ষ্য ছিল না। আরো মজার ব্যাপার হলো- প্রথম যখন ৭৫, মতিঝিল, ঢাকায় এই ব্যাংক চালু হয় তখন কিছু লোক ব্যাংকের মধ্যে জুতাসহ প্রবেশ না করে জুতা হাতে করে অথবা ব্যাংকের বাইরে রেখে খালি পায়ে ব্যাংকের মধ্যে প্রবেশ করতো। ইসলামী ব্যাংককে তারা মসজিদের ন্যায় মর্যাদা দিত। তখনও বাংলাদেশে কোন ব্যাংকের লোগোতে আরবি অক্ষর ছিল না। ইসলামী ব্যাংকের লোগোতে আরবি অক্ষর থাকায় ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে এটা একটা বিশেষ আকর্ষণ লাভ করে । লোগোটি তৈরি করেন দেশের খ্যাতনামা শিল্পী ও ক্যালিগ্রাফার সবিহউল আলম।

ব্যাংকের প্রথম প্রহরঃ

৩০ মার্চ ১৯৮৩ সকাল ৯টায় ঘরোয়াভাবে ব্যাংকর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য কোন দাওয়াতপত্র ছাপানো হয়নি। খানিকটা অনাড়ম্বরভাবে শুরু হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- সাবেক অর্থ সচিব ও এশিয়া উন্নয়ন বাংকের নির্বাহী সহ-সভাপতি কফিল উদ্দীন মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্ণর এম.এ খালেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক মহাপরিচালক এ.এফ.এম ইয়াহিয়া, বাংলাদেশ ব্যাংকের গবেষণা পরিচালক এ.এস.এম ফখরুল আহসান। সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক লস্কর। অতিথি ছিলেন- সর্বজনাব প্রবীণ সাংবাদিক ও দৈনিক দেশ পত্রিকার সম্পাদক সানাউল্লাহ নূরী, দৈনিক ইত্তেফাকের সহকারী সম্পাদক আখতার উল আলম, বায়তুশ শরফের পীর মাওলানা আব্দুল জব্বার ও ঢাকার কাস্টমস কালেক্টর (পরে ব্যাংকের চেয়ারম্যান) শাহ আব্দুল হান্নানসহ বিভিন্ন বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আযীযুল হক। অতিথিদের স্বাগত বক্তব্য দেন ব্যাংকের ভাইস-চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মফিজুর রহমান। এর মাধ্যমেই শুরু হয় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রথম ইসলামী ব্যাংক (ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ-এর স্বপ্ন যাত্রার)। পরে ১২ আগস্ট ১৯৮৩ ব্যাংকের সামনে রাস্তায় বিশাল প্যান্ডেলে অনুষ্ঠানিক ভাবে ব্যাংকটি উদ্বোধন করেন তখনকার বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী এস.এম শফিউল আযম।

ব্যাংকিং কার্যক্রম শুরুঃ

প্রথম দিন ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর নামে ২৫ লাখ টাকা জমাসহ একটি চলিত হিসাব খোলেন মহাপরিচলক এ.এফ.এম ইয়াহিয়া। সেদিন ৪৯টি চলিত হিসাব খোলা হয়, তাতে মোট ৩৫ লাখ ১৩ হাজার ৫০৯ টাকা জমা হয়। ওই দিন যাঁরা হিসাব খোলেন তাদের মধ্যে অন্যতম- মোহাম্মদ মফিজুর রহমান, ধানমন্ডির মসজিদ আত-তাকওয়া সোসাইটি, এম আযীযুল হক, তাঁর স্ত্রী জাহানারা হক, মোহাম্মদ ইউনুস, অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক, ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা আনোয়ার, আব্দুর রাজ্জাক লস্কর, আকসা শিপিং, এম. এ রশীদ চৌধূরী, হাফিজ ফয়েজ আহমেদ, মোহাম্মদ হোসেন, সফিউদ্দীন দেওয়ান, ইস্টার্ন টাইপ রাইটারের মালিক বাবু এস.আর সেনগুপ্ত, আহমদ হোসেন, নূরুল ইসলাম মজুমদার, মুহাম্মদ ইসমাইল হুসাইন, এস.ডি আলম এবং এ.বি.এম ফজলুল হক চৌধূরী। জনাব এম আযীযুল হক ও তার স্ত্রী জাহানারা হক হিসাব খোলায় কোন পরিবারে এটাই প্রথম দু’টি হিসাব খোলা এবং জাহানারা হক প্রথম নারী হিসাব ধারক। অন্যদিকে ইসলামী ব্যাাংক তার যাত্রার শুরুতে মানুষের মধ্যে যে আবেগ ও আকর্ষণ সৃষ্টি করে তার ঢেউ অন্য ধর্মের লোকদের মাঝেও পরিলক্ষিত হয়। বাবু এস.আর সেনগুপ্ত প্রথম হিন্দুধর্মালম্বী যিনি প্রথম দিনে হিসাব খুলে ইতিহাসের অংশ হয়ে আছেন।

তহবিল সংগ্রহঃ

তখন ব্যাংক খোলার জন্য পরিশোধিত মূলধন প্রয়োজন ছিল আট কোটি টাকা। ওই সময়ে বিপুল অংকের এই টাকা সংগ্রহ করা ছিল অত্যন্ত দূরহ কাজ। শেষ পর্যন্ত আইডিবিসহ ১১টি ইসলামী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিদেশি সরকারি সংস্থা ও ব্যক্তির উদ্যোগে ৭০ ভাগ অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব হয়। তার মধ্যে আল-রাযী কোম্পানীর সোলাইমান আল-রাযী একাই ৩০ ভাগ অর্থ যোগান দেন। বাংলাদেশ সরকার ৫ ভাগ, ১৯ বাংলাদেশি ব্যক্তি ও ৪টি প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ইকোনমিক্স রিসার্স ব্যুরো, ইবনে সিনা ট্রাস্ট, বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার ও বায়তুশ শরফ ইসলামিক রিসার্স ইনস্টিটিউট মিলে ১৫ ভাগ। পাবলিক শেয়ার রাখা হয় ১০ ভাগ। এই নিয়ে অর্থের সংস্থান হয়ে যায়।

জনবল নিয়োগঃ

১৪ জুন ১৯৮২ এই ব্যাংকের প্রথম কর্মকর্তা হিসাবে জনতা ব্যাংকের ওয়াসা শাখার সিনিয়র অফিসার আব্দুর রাজ্জাককে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেন ব্যাংকের আহবায়ক আব্দুর রাজ্জাক লস্কর। মতিঝিলস্থ মাসুদ রাজা অ্যান্ড কোম্পানীর মালিকানাধীন রাজা ভবনের তৃতীয় তলার উত্তর পাশ। যার ঠিকানা ৭৫, মতিঝিল, ঢাকায়। সেপ্টেম্বর ১৯৮২ সালে ব্যাংকের অফিস হিসাবে ভাড়া নেয়া হয়। ব্যাংকের প্রথম ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে ১ মার্চ ১৯৮৩ নিয়োগ লাভ করেন সোনালী ব্যাংক স্টাফ কলেজের প্রিন্সিপাল এম আযীযুল হক। তিনি তখন অ্যাসিসটেন্ট জেনারেল ম্যানেজার। যাঁর সোনালী ব্যাংকে ২৫ বছর চাকরী শেষ করতে মাত্র ক’দিন বাকি ছিল। তিনি যদি পঁচিশ বছর চাকুরী শেষ করতেন তা’হলে পূর্ণ সার্ভিস বেনিফিট পেতেন। কিন্তু তিনি তাঁর প্রাপ্য এই সুবিধা ত্যাগ করে ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার প্রথম কান্ডারী হিসাবে হাল ধরেন। তিনি তখন ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। ওই দিনই মোহাম্মদ শাহাব উদ্দীন মোল্লা ইসলামী ব্যাংকে অফিসার হিসাবে যোগদান করেন। ২৮ মার্চ ১৯৮৩ ক্যাশিয়ার পদে সোনালী ব্যাংকের মোহাম্মদ শামসুল আলম, ২৯ মার্চ এনাজ উদ্দীন আহমেদ ও নিরাপত্তা প্রহরী পদে মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ভূঁইয়া নিয়োগ পান। ২৯ মার্চ পর্যন্ত মোহাম্মদ মফিজুর রহমান প্রকল্প পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ৩০ মার্চ ১৯৮৩ জনাব মতিন উদ্দীন আহমেদ (বারো ভূঁইয়া) লোকাল অফিস শাখার প্রথম ম্যানেজার হিসেবে অ্যাসিসট্যান্ট এক্সিকিউটিভ ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে যোগদান করেন। এ সময় অন্যান্য উপযুক্ত  ব্যাংকারদেরকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা জেনারেল ম্যানেজার পদে এই ব্যাংকে আসার আহবান জানালে তারা জানান- আপনারা আগে শুরু করেন। আমরা দেখি কি হয়, তারপর সিদ্ধান্ত নিব। তখনও মানুষের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের ধারণা স্পষ্ট ছিল না। সুতরাং প্রতিষ্ঠিত চাকরী ছেড়ে এখানে আসা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিলে।  চল্লিশ বছর পর ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড এখন বাংলাদেশ তথা মুসলিম জাহানের অহংকার। বাংলাদেশে ইসলামী ব্যাংক সমূহের আজ জয় যাত্রা। যার মূল রূপকার ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ। এ ব্যাংকের চল্লিশ বছর পূর্ণ হলো। চার দশকের গৌরবউজ্জ্বল ও সফল অভিযাত্রাতার পিছনে রয়েছে আল্লাহর রহমত, ব্যাংকের নিবেদিত প্রাণ কর্মীদের নিরলস প্ররিশ্রম এবং জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে দেশের আপামর জনসাধারণের আকুণ্ঠ সহযোগিতা ও সমর্থন।

অর্জনের খন্ডচিত্রঃ

ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটির বেশি টাকা রেমিটেন্স হিসেবে বিদেশ থেকে আহরণ করে আজ দেশের শ্রেষ্ঠ রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংক। আমদানী, রপ্তানী, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও পল্লী উন্নয়নসহ বহুসূচকে ইসলামী ব্যাংকের অবস্থান সবার উপরে। প্রায় ২০ হাজার নিবেদিতপ্রাণ কর্মীর এ ব্যাংকের রয়েছে ৩৯৪টি শাখা, ২২৭টি উপশাখা ও ২৬৯৩ এজেন্ট আউটলেট। ২৬০০ এটিম-সিআরএমসহ ব্যাংকের মোট আউটলেট সংখ্যা প্রায় ৬ হাজার। এই ব্যাংকে আমানতের পরিমাণ হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। গ্রাহক সংখ্যা বর্তমান প্রায় ২ কোটি। যুক্তরাজ্যের ফাইন্যানসিয়াল ইনটেলিজেন্স ম্যাগাজিন প্রতিবছর বিশ্বের এক হাজার শ্রেষ্ঠ ব্যাংকের তালিকা প্রণয়ন করে। এই তালিকায় ’দি ব্যাংকার’-এর তথ্য মতে ২০১২ সাল থেকে একের পর এক ইসলামী ব্যাংক বিশ্বের এক হাজার ব্যাংকের তালিকায় গত এগার বছর যাবত নিজের স্থান অবস্থান সমুন্নত রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া দেশের এবং বিদেশের বহু সম্মাননা এবং অ্যাওয়ার্ডে বিভুষিত প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিঃ।
ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এই দিনে ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিব আরস্ত খানের একটি কথা বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন- ‘এই বাংকের কর্মীদের মত এতো সৎ মানুষের সমাবেশ আমি আর কোথাও দেখিনি’। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে নানা চড়াই উৎরাই ও প্রতিকুলতা অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। কিন্তু আল্লাহর রহমত, কর্মীদের নিরন্তর প্রচেষ্টা এবং জনগণের ভালবাসায় শিক্ত এ প্রতিষ্ঠান সামনের দিকে এগিয়ে যাবে এটাই সবার ঐকান্তিক প্রত্যাশা।

লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ পল্লী সাংবাদিক সমিতি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *