পর্ব ১
মুহাম্মাদ আবদুল মাননান
বিশ্বনবি মুহাম্মাদ (সা:) ছিলেন পৃথিবীর সেরা মানুষ। মানবজাতির সর্বোত্তম আদর্শ হিসেবে মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানবের ভূমিকায় দুনিয়ায় প্রেরণ করেন। মানবতার কল্যাণে সবার জন্য অনুসরণীয় ও অনুকরনীয় হলেন মুহাম্মাদুর স.।ইতিহাসে মুহাম্মাদ (সা:) এমনই একজন ব্যক্তি ছিলেন যিনি জীবনে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সর্বত্র সকল ক্ষেত্রে সফলতা ও কৃতিত্ব দিয়ে মানবজীবনরে জন্য আর্দশ হয়ে রয়েছেন । একজন আর্দশ শিশু থেকে শুরু করে যুবক, পিতা, স্বামী, সৈনিক, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, সেনাপতি, রাষ্ট্রনায়কসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য ছিলেন এক অনুপম আদর্শ । মহান রব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআনে বলছেন : ‘রসুল (স:) এর জীবনেই রয়েছে তোমাদের জন্য সর্বোত্তম আর্দশ।’ (সুরা আহযাব, আয়াত নং-২১) অন্য আয়াতে রসুল (সা.)-এর চরিত্র সর্ম্পকে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করনে, ‘আপনি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী ।’ (সুরা কালাম, আয়াত : ৪)। সুতরাং ছোটদের রসুল (স:) কেমন ছিলেন সে বিষয়ে সহজেই সম্যক উপস্থাপনা বা আলোকপাত করার চেষ্টা করছি।
মহানবি (স:) শিশু-কিশোরদের প্রতি ছিলেন অত্যাধিক স্নেহপ্রবণ ও যত্নশীল । তিনি নিজ পুত্র-কন্যাদের যেমন আদর করতেন, অন্য শিশুদেরও তেমনি ভালোবাসতেন এবং তাদের সাথে উত্তম আচরণ করতেন। অনেক সময় তাদের সাথে বিভিন্ন খেলাধূলায় শরিক হয়ে তাদের মনকে জয় করে রাখতেন আর শিশুরাও তাঁর মধুর সাহচর্য পেয়ে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠত । শিশুদের প্রতি মহানবি স. এর মধুর আচরণ যেমন ছিলো মনোমুগ্ধকর, তেমনি তা সবার জন্য ছিলো শিক্ষণীয় ও অনুকরণীয়। নবিজি স. যখন কোথায়ও সফরে বের হতেন, রাস্তায় কোনো শিশুকে দেখলেই তাকে উটের পিঠে তুলে নিতেন এবং নিজ গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিতেন। তিনি ইয়াতিম শিশুদের ভালোবাসতেন। তাদের মাথায় হাত বুলাতেন। নতুন জামাকাপড় কিনে দিতেন। আদর যত্ন করতনে । মুখে খাবার তুলে দিতেন। কোলে তুলে নিয়ে চুমু খেতেন, ফলে শিশুরাও তাদের বন্ধু নবিজিকে ভালোবাসতেন। একদিন মহানবি (সা.) তার নাতি হাসান (রা.) কে আদর করে চুমু খাচ্ছিলেন। তা দেখে আকবা ইবনে হারিস নবিজিকে বললেন, ‘হে নবি (সা:) আপনি শিশুদের নিয়ে এমনিভাবে আনন্দ উপভোগ করেন? আমি তো আমার ছোটো শিশু-সন্তানদের এতো আদর করি না। নবিজি (স:) তার জবাবে বললেন, ‘তোমার অন্তর থেকে আল্লাহ যদি মমতা তুলে নিয়ে থাকেন, তার জন্য তো আমি দায়ী নই।’ নবিজি স. আরো বলছেন, ‘যে ব্যক্তি শিশু-কিশোরদের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করে না, সে আমার উম্মত নয়।’ একদিন মহানবি (সা.) একদল শিশুর সঙ্গে আনন্দ করছিলেন, শিশুরাও নবিজিকে ঘিরে খুশিতে মেতে ওঠে। এমন সময় সেখানে এক বেদুঈন এসে হাজির হয় । সে মহানবি (সা.) কে উপলক্ষ করে বললো, ‘শিশুদের নিয়ে এমন আমোদ-আহলাদ করা আমার পছন্দ নয়।’
চার পর্বে খতম
One comment