চীনে সংখ্যালঘু নির্যাতন কেন্দ্র
জাতিসংঘের হিসাব মতে চীনের তথাকথিত ‘রাজনৈতিক দীক্ষা’ দান কেন্দ্রে ১০ লাখ মুসলিমকে আটক করে রাখা হয়েছে। এই তথাকথিত ‘রাজনৈতিক দীক্ষা’ কেন্দ্রে আটক বেশিরভাগই হচ্ছেন উইগুর মুসলিম। মাসব্যাপী পরিচালিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদেরকে ইসলাম পরিত্যাগে বাধ্য করা হয়, তাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে তাদের নিজস্ব বিশ্বাসের সমালোচনা করতে হয়। প্রতিদিন প্রায় ১ ঘণ্টা করে প্রোপাগান্ডামূলক কমিউনিস্ট পার্টির গান গাইতে হয়। এসব তথাকথিত ‘রাজনৈতিক দীক্ষা’ দান কেন্দ্র সম্পর্কে আরো তথ্য রয়েছে, মুসলিমদের জোর করে শুকরের মাংস এবং অ্যালকোহল খেতে বাধ্য করা হয়, এমনকি সেখানে অমানবিক নিষ্ঠুর নির্যাতনে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে।
গত বছর থেকে চীনে এসব তথাকথিত ‘রাজনৈতিক দীক্ষা’ দান কেন্দ্র চালু করা হয় এবং বর্তমানে চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শহর জিনজিয়াংয়ে এসব কেন্দ্রের দ্রুত প্রসার হচ্ছে। চীনের উপর যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসনাল কমিটির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এসব ‘রাজনৈতিক দীক্ষা’ দান কেন্দ্র হচ্ছে বিশ্বের সবচাইতে বড় সংখ্যালঘু নির্যাতন কেন্দ্র।’ জর্জটাউন বিশ্বাবিদ্যালয়ের চীনা ইতিহাস বিষয়ের অধ্যাপক জেমস মিলওয়ার্ড বলেন, ‘চীনে ধর্মীয় বিশ্বাসকে একটি বিকারগ্রস্ত বিশ্বাস হিসাবে দেখা হয়।’ যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক একজন উইঘুর গবেষক তাহির ইমিন বলেন, ‘রাজনৈতিক দীক্ষা’ দান কেন্দ্রে আটক তার পরিবারের অনেক সদস্য রয়েছেন, এবং তিনি তাদের নিকট থেকে শুনেছেন যে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে সেখানে একটি রোগের সাথে তুলনা করা হয়।
মুরাত হারি নামের ৩৩ বছর বয়সী একজন উইঘুর মুসলিম, যিনি ২০১০ সালে ফিনল্যান্ডে চলে আসেন তিনি তার পিতামাতা ‘রাজনৈতিক দীক্ষা’ দান কেন্দ্রে আটক আছে বলে তার আত্মীয় স্বজন থেকে শুনেছেন। তিনি অনলাইনে ‘আমার পিতা মাতাকে মুক্তি দাও’ এরকম একটি প্রচারণা চালিয়েছিলেন কিন্তু এক সময় তিনি জানান যে তিনি মারাত্মকভাবে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। দ্যা গ্লোব এন্ড মেইলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে উইঘুর একজন নারী যিনি কানাডাতে বসবাস করেন এবং যার বোন ‘রাজনৈতিক দীক্ষা’ দান কেন্দ্রে আটক রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি কোন কিছুতেই মনোযোগ দিতে পারছি না, আমার মন নিস্তেজ হয়ে গিয়েছে। আমি ঘুমোতে পারছি না।’ তিনি আরো জানান, ‘আমি অনেক ওজন হারিয়েছি কারণ আমি আর খেতে পারছিনা।’
২৪ বছর বয়সী উইঘুরের একজন ছাত্র যিনি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত আছেন, তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তিনি সবসময় এই ভয়ের ভেতর থাকেন যে তার আত্মীয়-স্বজনদেরকে ‘রাজনৈতিক দীক্ষা’ দান কেন্দ্রে আটক করা হতে পারে। তিনি আরো বলেন, আমার পিতার সাথে আমার শেষ যোগাযোগের প্রায় ১৯৭ দিন হয়ে গেছে। ‘আমি আমার পিতার জীবন নিয়ে শঙ্কিত।’ তার কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল কেন তিনি এমন মনে করছেন, উত্তরে তিনি জানান যে, ‘কারণ আমি বিদেশের একটি বিদ্যালযে ভর্তি হয়েছি।’ ‘এখন আমি জানি যদি কখনো আমি বাড়ি ফিরে যাই,’ তিনি যোগ করে বলেন, ‘আমাকে আমার পিতার মতই আটক করে রাখা হবে।’
[আবদুল্লাহ তামিম: চীনের বন্দিশালায় উইঘুর মুসলিমদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতনের ভয়ংকর তথ্য, আওয়ার ইসলাম ২৪, ২৯.০৮.২০১৮, সূত্রঃ দ্যা আটলান্টিক]
মুম্বাইয়ে মুসলিম মূলোৎপাটন
মুম্বাইয়ে ইংরেজ সরকার ইনাম কমিশন নামে একটি কমিটির মাধ্যমে স্থানীয় মুসলমানদের ২০ হাজার এস্টেট বাজেয়াপ্ত করে এবং এ সম্প্রদায়ের হাজার হাজার পরিবার-পরিজনকে হালাক করে।
[ড. মুহাম্মদ ইনাম-উল-হক: ভারতে মুসলমান ও স্বাধীনতা আন্দোলন, দ্বিতীয় মুদ্রণ, ভাদ্র ১৪১০, পৃ ৪২]
মার্কিন সৈন্যদের জার্মানিতে গণধর্ষণ
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের পর, শুধুমাত্র আমেরিকান সেনারা প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার জার্মানি নারী, যুবতী ও মেয়ে শিশুর সম্ভ্রমহানি করেছে! তাদের মিত্রশক্তি ব্রিটিশ সেনারা ৪৫ হাজার জার্মানি যুবতীকে ধর্ষণ করেছে! তদ্রুপ আরেক মিত্রশক্তি ফরাসি সেনারা ৫০ হাজার জার্মানি যুবতীর ইজ্জতহানি করেছে! শুধু তাই নয়; আমেরিকান সেনারা ৩ হাজার ৫০০ ফরাসি যুবতীর ইজ্জত হরণ করেছে। অথচ ফ্রান্স ছিল তাদের মিত্রশক্তি! আবার রাশিয়া প্রায় ১০ লাখ নারীর শ্লীলতাহানি করে! এদের অনেককেই তাদের আব্বা-আম্মার সামনেই বিবস্ত্র করে ধর্ষণ করা হয়েছে! অনেকেরই অনাবৃত লাশ রাস্তার ওপর পড়ে থাকে! অনেককেই ধর্ষণে বাঁধা দেয়ার কারণে গুলি করে উড়িয়ে দেয়া হয়!
আমেরিকান সামরিক সরকারের পক্ষ থেকে এই আইন জারি করা হয়েছিল যে, জার্মানির প্রত্যেক বাসিন্দা যেন নিজ নিজ ঘরের সামনে তার পরিবার-পরিজনের সকল সদস্যের নামের একটা তালিকা করে লটকিয়ে রাখে। এই তালিকা লটকানোর পর যে অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল, তা ভাষায় প্রকাশ করা দুষ্কর। শুধু এতটুকু বলা যায় যে, আমেরিকান সেনাদের হাতে উপর্যুপরি ধরষণের শিকার ১৭ জন নারীকে মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, সেখানে তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। ভাগ্যবিড়ম্বিতা এসব নারীদের সবচেয়ে কমবয়সী ধর্ষিতার বয়স ছিল সাত, আর সবচেয়ে বয়স্ক ধর্ষিতার বয়স ছিল ঊনসত্তর!
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার কয়েকমাসের মধ্যে বিরাট সংখ্যক জার্মানি নারীরা জার্মানের বিভিন্ন হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর জন্য গমন করে। ডাক্তারদের ভাষ্যমতে, এই পরীক্ষা দিনভর চলত। নারীরা লাইন ধরে পরীক্ষা করাতো। আরেকটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, জার্মান সরকার পঞ্চাশ দশক পর্যন্ত ৩৭ হাজার শিশুর পরিচয় তাদের মায়ের নামেই নিবন্ধিত করেছে! এদের বাপের কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি! এমনকি আজও পর্যন্ত প্রায় ০.৫ মিলিয়ন জার্মানি নাগরিকের কোনো পিতৃপরিচয় পাওয়া যায়নি! শুধুমাত্র জার্মানি নারীদের গণহারে ধর্ষণ করার কারণে!
পশ্চিমা সাদা চামড়ার দুপেয়ে পশুগুলোর এ-এক চেপে রাখা ইতিহাস। এই পশুগুলোই আজকের কথিত সভ্য পৃথিবীতে নারী অধিকারের ফেরিওয়ালা! নারী আন্দোলনের পথিকৃৎ! নারী স্বাধীনতার ঠিকাদার! নারীমুক্তির অগ্রপথিক! তারা তাদের কালো ইতিহাস লুকিয়ে রাখতে চাইলেও তাদের স্বজাতির কোনো না কোনো নীতিবাদী ঐতিহাসিক এসব কালো ইতিহাসের ভাঁজকরা পাতা উল্টিয়ে দেয়! জেনে ফেলে দুনিয়াবাসী! এই কালো ইতিহাসটাও উন্মোচন করেছেন জার্মানির এক নারী ইতিহাসবেত্তা Miriam Gebhardt তাঁর রচিত ‘সেনারা যখন এল’ বইয়ের পাতায়। তিনিও একজন সাদা চামড়ার দুপেয়ে প্রাণী! অবশ্য পশু নয়!
[ড. মরিয়াম গিবহার্ট জার্মানির কনস্ট্যান্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক। তিনি একাধারে সাংবাদিক, ঐতিহাসিক ও শিক্ষাবিদ। তাঁর When the Soldiers Came কিতাবটি ২০১৫ সনের মার্চে জার্মান থেকে প্রকাশিত]
[সূত্র: ইন্টারনেট]