ডিজিটাল বাংলার ডিজিটাল রূপ   

তপতী সরকার
.
‘দিনবদলের বইছে হাওয়া, ডিজিটাল বাংলাদেশ আমাদের প্রথম চাওয়া’ স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, মাননীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রীর উদ্ধৃত উক্তির লাইনকে স্মরণ করলে মনে পড়ে সরকার তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ডটার অব পিচ, দেশরত্ন  জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক ২০০৯-১০ সাল নাগাদ দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসার ও বিকাশের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ : ভিশন-২০২১’ ঘোষণার কথা।
বাংলাদেশে যখন ডিজিটাল পদ্ধতি চালু হয় তখন মানুষ বুঝত না ডিজিটাল কি। অনেকেই বিভিন্নভাবে ডিজিটাল কে ব্যঙ্গ করত। বর্তমান মহামরী করোনা ভাইরাস ডিজিটাল পদ্ধতিকে হাতে কলমে শিখিয়ে দিচ্ছে ডিজিটাল কি। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ফলে সারা বিশ্ব যখন স্থবির হয়ে পড়েছে, অর্থনীতি মন্দা হয়ে পড়েছে সমগ্র বিশ্ব, বঞ্চিত হচ্ছে রেমিটেন্স সুবিধা থেকে তখনই বুঝা গেল ডিজিটাল রুপ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাসের শুরুতে যখন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সকল জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে কোভিড ১৯ এর খোঁজ নিচ্ছিলেন এবং সতর্কতা মূলক দিক নির্দেশনা দিচ্ছিলেন তখন মানুষ আবার ভাবতে লাগল এটা কিভাবে সম্ভব একসাথে ৬৪ জেলায় সংযোগ? তখন থেকেই মানুষের মধ্যে ডিজিটাল রুপ জন্ম নিতে শুরু করে। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের চার মাস প্রায়  শেষের দিকে। এই চার মাসে মানুষ ডিজিটাল পদ্ধতি সম্পূর্ণ রুপে আয়ত্ত করে নিয়েছে। তারা এখন অনলাইন নির্ভর হয়ে পড়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী, পোশাক কেনাকাটা, ফুডস আইটেমসহ সব ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিস ঘরে বসে অর্ডার করলেই পাওয়া যায়। লোকজন বাইরে যেতে হয় না। গত ১৭ মার্চ থেকে সবধরণের কোচিংসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। মাঝে কিছু দিন শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ব্যাঘাত হলেও সরকারের উদ্যোগে বিভাগীয় এবং জেলা পর্যায়ে পরিচালিত অনলাইন স্কুলের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আবার তাদের পড়াশোনার পরিবেশে ফিরে আসতে পেরেছে। তারা ধন্যবাদ জানাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী পুত্র,  ডিজিটাল বাংলাদেশের তথ্য  প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে।
এই পদ্ধতি শুধু বাংলাদেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বর্তমানে দেশের বাইরে বিভিন্ন নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশে বসেই  অনলাইনে পড়াশোনার সুযোগ পাচ্ছে। এটা সম্ভব  হয়েছে শুধুমাত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের কারণে। এবছর করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফলে পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে গবাদি পশুও বিক্রি হয়েছে অনলাইন প্রক্রিয়ায়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আজ বাংলাদেশ সমগ্র বিশ্ববাসীর সামনে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে পরিচিত।
ডিজিটাল রুপের ফলেই বর্তমানে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে অসংখ্য ফ্রিল্যান্সার। তারা ঘরে বসেই পড়াশোনার পাশাপাশি এই পেশায় যুক্ত হচ্ছেন। বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেতে অনেক শিক্ষিত যুবকরাই এই পেশায় আগ্রহী হয়ে উঠছেন। যার ফলে দেশেরও রেমিটেন্স সুবিধা বৃদ্ধি পায়। শিক্ষিত গৃহিনীরাও এই সুযোগের বাইরে নন। তারাও ঘরে বসে গৃহ কাজের ফাঁকেফাঁকে ফ্রিল্যন্সার হিসেবে কাজ করছেন। এতে নিজেও যেমন উপার্জন করতে পারছেন পরিবারকেও আর্থিক সহযোগিতা করতে পারছেন।
ফ্রিল্যন্সারের পাশাপাশি আবার অনেককে দেখা যায় অনলাইন শপিং বিজনেসে। অনলাইন শপিং বিজনেস বলতে কোম্পানি থেকে প্রোডাক্ট নিয়ে নিজ উদ্যোগে সেল করা। এক্ষেত্রে গ্রাহক অনলাইনে প্রোডাক্টের অর্ডার করবে- উদ্যোক্তা নিজে বাজার থেকে কম মুল্যে অর্ডারকৃত প্রোডাক্ট গ্রাহকের হাতে পৌঁছে দিবে। জরিপে দেখা যায় ফ্রিল্যন্সার এবং উদ্যোক্তা দু’টি পদ্ধতির কারণেই মানুষ ডিজিটাল পদ্ধতির সাথে বেশি পরিচিত হয়ে উঠছে। ফলে ডিজিটাল বাংলার ডিজিটাল রুপ তাদের সামনে এখন আর স্বপন নয়, বাস্তব।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের কার্যকরী দিক-নির্দেশনা এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সফল প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনায়েদ আহমেদ পলক এমপির পে-পলের ভাইস প্রেসিডেন্টের সাথে মিটিংয়ের মাধ্যমে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণের ফলে পে-পল কর্তৃপক্ষ অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে তাদের জুম অপারেশন শুরু হয়েছে। এই সফল উদ্যোগ অনলাইন আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে অর্জিত আয়কে দেশে আনার প্রক্রিয়াকে সহজতর করবে।
পরিশেষে
‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ পরিণত হয়েছে দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর মেরুদণ্ড- হিসেবে। বাংলাদেশে এর ব্যবহারও ধীরে ধীরে প্রসারিত হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রাকে আরও গতিশীল করার লক্ষ্যে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া হচ্ছে। দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসার ও বিকাশের জন্য যেমন প্রয়োজন দক্ষ জনবল, তেমনি দরকার প্রশিক্ষণ ও অর্থায়ন। তাই বাংলাদেশের সরকার হাতে নিয়েছে বেশ কিছু সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। তাই যথার্থ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রীর স্লোগান ‘প্রযুক্তি প্রগতির পথ হিসাবে গণ্য, ডিজিটাল বাংলাদেশ হতে হবে সকলের জন্য’।

৫ comments

  1. বর্তমান সম‌য়ে বি‌শেষ ক‌রে ক‌রোনা কা‌লিন সম‌য়ে ডি‌জিটাল কথাটা স্বার্থক কারণ ছাত্রদের এখন একটাই উপায় জুম এ‌্যাপ যার মাধ‌্যমে ক্লাস কর‌ছে লাখ লাখ ছাত্র/ছাত্রী,

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *