মো. নুরউল্লাহ আরিফ ।।
‘তারুণ্যই পারে সমাজকে পাল্টাতে ।’ তারাই আগামী দিনে দেশের বিভিন্ন স্তরে নেতৃত্বে দিয়ে দেশকে উন্নতির শিকড়ে পৌছে দিবে। তরুণ নেতৃত্বে যখন নৈতিক মূল্যবোধ সমৃদ্ধ হয়ে দুনীতিমুক্তভাবে কাজ করবে তখন রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরের আসন হবে স্থায়ী টেকসই । তখন দেশ হবে সত্যি সত্যি একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র । সবার সমানাধিকার নিশ্চিত হবে । ধনী গরীব ব্যাবধান ঘুচে যাবে । প্রতিষ্ঠিত হবে নাগরিক অধিকার ।
এজন্য প্রয়োজন চৌকশ মেধাবী প্রাজ্ঞ দূরদর্শী শ্রেণির তরুণ প্রজন্ম। এধরণের প্রজন্ম তৈরিতে বাবা মা আত্মীয় স্বজন সমাজ রাষ্ট্রসহ সকলকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। কেননা আমরা যদি চৌকশ শ্রেণির মেধাবী দেশপ্রেমিক প্রজন্ম গড়ে তুলতে ব্যর্থ হই , তাহলে কল্যাণকর সমাজ রাষ্ট্র বিনির্মাণ স্বপ্নই থেকে যাবে। হয়ত এধরণের ব্যর্থতার কারণে রাষ্ট্র কাঠামো টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। এধরণের প্রজন্ম তৈরিতে বাবা মাসহ আত্মীয় স্বজন সবাইকে সিরিয়াস হতে হবে। নিতে হবে নানামুখী পরিকল্পনা। এব্যাপারে একবার মনযোগ সহকারে সমাজের দিকে চোখ বুলালে সবার কাছে বর্তমান তরুণ প্রজন্মের হাল হাকিকত স্পষ্ট হয়ে ওঠবে।
বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের অনেকে লেখাপড়া বাদ দিয়ে স্মার্ট মোবাইল ফোনে চব্বিশ ঘন্টা ডুবে থাকে। হয় গেমস খেলে নতুবা রাত জেগে অন্যের সাথে চ্যাটিংয়ে ব্যস্ত থাকে। ভার্চুয়াল জগত এখন তাদের কাছে ধ্যান জ্ঞান। প্রায়শ দেখা যায় সন্ধ্যার পর বারো থেকে পনের ব্ছরের কিশোররা পড়ালেখো বাদ দিয়ে পার্কে বা বিনোদনকেন্দগুলোতে আড্ডা দেয়। এদের মধ্যে উছন্নে যাওয়া শ্রেণি আছে বখাটে । যারা রাতের আধাঁরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বহুতল ভবনের ছাদে বা স্কুল কলেজের মাঠে মাদকসেবন করে। এসব মাদকের মধ্যে রয়েছে গাজা, মদ, ইয়াবা, হিরোইন, হুইস্কি ইত্যাদি। মাদকসেবিরা সৃজনশীল কিছু করতে পারে না। তাদের কাছ থেকে সমাজ ভাল কিছু আশা করতে পারেনা।’
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত’ মাদকসেবনের কারণে তরুণসমাজের কাছে এ বাক্য মিথ্যে পরিণত হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে এসব বখাটে মাদকে সেবনের নিরাপদ আস্তানা পেয়েছে প্রতিষ্ঠানের ছাদ বা মাঠ। মাদক সেবনের ফলে অনেকে অস্বাভাবিক আচরণ করে। যার ফলে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। চুরি ছিনতাই ও বেড়ে যাচ্ছে। মাদক কেনার টাকা না পেলে বাবা মাকেও সন্তানের হাতে লাঞ্চিত হতে হয়। যা সত্যিই অনেক দুঃখজনক ও উদ্বেগের মহা কারণ।
মাদক সেবনে শারীরে নানান সমস্যা হয়। যেমন -লিভারে সমস্যা, হার্টে সমস্যা, মরণব্যধি ক্যান্সার, কিডনী সমস্যা ও শ্বাসকষ্টসহ মত্যু পর্যন্ত হতে পারে। মাদকসেবনের কারণে তরুণসমাজ পরিবারের জন্য সম্পদ না হয়ে বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। এখনই সময় বিপথগামী তরুণ সমাজকে সঠিক সুস্থ সংস্কৃতির পথে এনে আগামীর দেশ পরিচালনার দায়িত্ব তাদের হাতে ন্যস্ত করার দায়িত্ব নিতে হবে সংস্কৃতিজনকে । নতুবা আমাদের সমূহ খেসারত দিতে হবে। আফসোসের অন্ত থাকবেনা।
লেখক: শিক্ষক, শশিভূষণ বেগম রহিমা ইসলাম কলেজ, চরফ্যাশন , ভোলা।