ফেরারি জীবন 

শাহীন কামাল 

।।

পিতৃপুরুষের ভিটেমাটিতে কাকপক্ষীর আবাস

রাতের নির্জনে শেয়াল কানামাছি খেলে

পেঁচার ডাকে সন্ধ্যা নামে

গা ছমছম ওপথে পা পরেনা এখন আর।

জন্মঘর কালে কালে-

বুনো ঝোপের আড়ালে

স্মৃতিচিহ্ন ধুলোয় মিলেমিশে একাকার।

পিতামহ গত হয়েছেন বহুকাল আগে

কবরে তার যত্রতত্র পরে থাকে ঝরাপাতা।

সবুজের নীল কষ্ট সময়ে শুকিয়ে রঙ বদলায়

হলুদাভ সোনালি পাতা মাটিতে মিলায়-

শুকনো পাতার মতো ঠিকানাহীন জীবন

শুন্য থেকে শুরু করে মাটিতে সাকিন।

আত্মোন্নতির পথে চলতে গিয়ে

রেখে আসি পদচিহ্ন

নতুনের অবগাহনে স্বপ্নে বিভোর ডালপালায়

সবুজ পাতা গজায়-

আবার বিবর্ণতায় ঢাকে মন-প্রকৃতি

কষ্ট উপচে পড়ে সময়ের পৃষ্ঠে,

নতুন পথে হাটি, নতুনভাবে।

কবরের নামফলকের কালো অক্ষর মুছে যাওয়া

দেখা হয়ে উঠেনা

সময় দেয়ার সময় কোথায়?

পরিচয় আবছা আলোয় অদৃশ্য হয়

যেমনটি হয়েছে পূর্বপুরুষেরা-

জায়গাজমি, বংশতালিকা ব্যতিরেকে

কোথায় আর টিকে আছে তারা!

গভীর মমতায় ভিটেমাটি জড়িয়ে রাখা হাত-

নিজ হাতে সঁপে দিয়েছি কবরে।

কল্যাণকামী প্রার্থনারত হাতের ছোঁয়ায়

সকাল হয়না এখন

মাটির শয্যায় মমতাময়ীর দেহ ঘুমায় বছর বছর।

পরিযায়ী পাখির মতো ছুটে চলে দেহ

নির্বিঘ্নে জীবন কাটাবো বলে কত আয়োজন!

সুতাসমেত ঘুড়ি হয়ে উড়ে মন

অতীত ভুলে বর্তমানে বাঁচি নির্বিঘ্নে।

স্মৃতিভারাতুর অতীত গাঘেঁষে ঠায় দাঁড়িয়ে

দূরবীনে ছায়া ফেলে, নাটাইয়ের সাথে ফিরে আসে

ভুলতে পারিনা, ভুলে যাওয়া সহজ নয়।

আমিও পরিযায়ী পাখির মতো দূরে যাই

ফিরে আসি বারবার, তবু ফেরা হয়ে উঠেনা।

 

শাহীন কামাল, প্রভাষক

নাজিউর রহমান কলেজ, ভোলা।

[email protected]

৬ comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *