মহাকবি কায়কোবাদের জন্ম

মুক্তবুলি ডেস্ক ।।

আধুনিক বাংলা মহাকাব্য ধারার শেষ কবি কায়কোবাদের জন্মবার্ষিকী আজ। ১৮৫৭ সালের এই দিনে তিনি ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার আগলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম মোহাম্মদ কাজেম আল কোরেশী। ‘কায়কোবাদ’ তার সাহিত্যিক ছদ্মনাম।

‘কে ঐ শোনালো মোরে আজানের ধ্বনি, মর্মে মর্মে সেই সুর, বাজিলো কি সুমধুর, আকুল হইলো প্রাণ, নাচিলো ধমনি। কি-মধুর আযানের ধ্বনি’।- মহাকবি কায়কোবাদ এরূপ অসংখ্য কবিতাসহ অসাম্প্রদায়িক আধুনিক শুদ্ধ বাংলায় গীতিকাব্য ও কাহিনীকাব্য রচনা করে গেছেন। তিনি ছিলেন খাঁটি বাঙালি এবং মুসলমান। বাংলা মহাকাব্যের অস্তোন্মুখ এবং গীতিকবিতার স্বর্ণযুগে মহাকবি কায়কোবাদ মুসলমানদের গৌরবময় ইতিহাস থেকে কাহিনী নিয়ে ‘মহাশ্মশান’ মহাকাব্য রচনা করে যে দুঃসাহসিকতা দেখিয়েছেন তা তাকে বাংলা সাহিত্যের গৌরবময় আসনে স্থান করে দিয়েছে।

অসাম্প্রদায়িক চেতনার এই কবি হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিষয় নিয়ে কাব্য রচনা করেছেন।

মাত্র তেরো বছর বয়সে কায়কোবাদের প্রথম কাব্য ‘বিরহবিলাপ’ (১৮৭০) প্রকাশিত হয়।

তার রচিত মহাকাব্য ‘মহাশ্মশান’। এটি তৃতীয় পানিপথের যুদ্ধ অবলম্বনে রচিত। এ কাব্যে জয়-পরাজয় অপেক্ষা ধ্বংসের ভয়াবহতা প্রকট হওয়ায় এর নাম হয়েছে ‘মহাশ্মশান’। এটি তার শ্রেষ্ঠ রচনা এবং এর দ্বারাই তিনি মহাকবিরূপে খ্যাতি অর্জন করেন। তার গীতিকবিতায় প্রেম, প্রকৃতি, স্বদেশ ও আধ্যাত্মিকতা প্রকাশ পেয়েছে।

কায়কোবাদ ১৯৩২ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় মুসলিম সাহিত্য সম্মেলনের মূল অধিবেশনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বাংলা কাব্যসাহিত্যে অসাধারণ অবদানের জন্য নিখিল ভারত সাহিত্য সংঘ তাকে ‘কাব্যভূষণ’, ‘বিদ্যাভূষণ ও ‘সাহিত্যরতœ’ (১৯২৫) উপাধিতে ভূষিত করে। ১৯৫১ সালের ২১ জুলাই ঢাকায় তার মৃত্যু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *