সাহিত্য পুরস্কার পেল সাংবাদিক আমীন আল রশীদের ‘জীবনানন্দের মানচিত্র’

মুক্তবুলি ডেস্ক

আইএফআইসি ব্যাংক নিবেদিত ‘কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার ২০২১’ পেয়েছেন সাংবাদিক আমীন আল রশীদ। ২০২১ সালে প্রকাশিত তার গবেষণা গ্রন্থ ‘জীবনানন্দের মানচিত্র’ বইয়ের জন্য তিনি এই পুরস্কার পেয়েছেন।

এ বছর কথাসাহিত্যে ‘বিভা ও বিভ্রম’ উপন্যাসের জন্য সাদাত হোসাইন এবং কবিতায় ‘সুন্দরবন সিরিজ’ গ্রন্থের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন চাণক্য বাড়ৈ।

আগামী শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টায় একযোগে কালি ও কলম এবং আইএফআইসি ব্যাংকের ফেইসবুক পেইজে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানটি দেখানো হবে। এ আয়োজনে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক, ফরাসি ভাষাবিদ ও অনুবাদক চিন্ময় গুহ। আয়োজনে সংগীত পরিবেশন করবেন বিশিষ্ট বাউলশিল্পী ও সংগীতসাধক শফি মণ্ডল।

সাহিত্য শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ক মাসিক পত্রিকা ‘কালি ও কলম’ বাংলাদেশের নবীন কবি ও লেখকদের সাহিত্যের সৃজনধারায় গতি সঞ্চারের উদ্দেশ্যে ২০০৮ সাল থেকে ‘কালি ও কলম তরুণ কবি ও লেখক পুরস্কার’ প্রদান করে আসছে। এই পুরস্কার নবীনদের সাহিত্যচর্চা ও সাধনাকে সঞ্জীবিত করেছে। বিচারকমণ্ডলীর সিদ্ধান্ত অনুসারে এবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাহিত্য এবং শিশু-কিশোর সাহিত্যে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ জমা না পড়ায় এ দুটি বিভাগে পুরস্কার দেয়া হয়নি।

কালি ও কলম পুরস্কার পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় নেক্সাস টেলিভিশনের কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স এডিটর আমীন আল রশীদ জানান, ‘জীবনানন্দের মানচিত্র’ তার দীর্ঘ অনুসন্ধানের ফসল। এতে রয়েছে রূপসী বাংলার কবিখ্যাত জীবনানন্দ দাশের ৫৫ বছরের ঘটনাবহুল জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত সব স্থানের সচিত্র বিবরণ। দুর্লভ অনেক ছবির সাথে রয়েছে জীবনানন্দের কাল ও বর্তমান সময়ের তুলনামূলক আলোচনা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের যেসব জায়গায় কবি জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তিনি ছিলেন, সেসব জায়গা এখন কেমন আছে; সেখানে জীবনানন্দের কোনো স্মৃতি আছে কি না; তার জন্মস্থান ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে যেসব বিতর্ক বা সংশয় রয়েছে, তাও উঠে এসেছে এই বইতে।

তিনি আরও বলেন, বইটি মূলত জীবনানন্দের ৫৫ বছরের একটি অ্যালবাম। একজন অনুসন্ধানী সাংবাদিক বাংলাদেশ ও ভারতের নানা জায়গায় বছরের পর বছর ধরে খুঁজেছেন কবি ও ব্যক্তি জীবনানন্দ দাশকে। কথা বলেছেন জীবনানন্দের সাক্ষাৎ পাওয়া একাধিক মানুষের সাথে। বাংলাদেশের বরিশাল, বাগেরহাট, কলকাতা শহর, খড়্গপুর, দিল্লিসহ যেসব জায়গায় স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে জীবনানন্দ দাশ বসবাস করেছেন; ধানসিড়ি ও জলসিড়ি নদী; স্টিমারযাত্রা, বরিশাল শহরের অলিগলিতে তার পথহাঁটা—সবই উঠে এসেছে এই অনুসন্ধানে। এসব জায়গায় লেখককে অনেকবার যেতে হয়েছে। প্রতিটি তথ্য যাচাই-বাছাই করতে হয়েছে। সব মিলিয়ে ‘জীবনানন্দের মানচিত্র’ মূলত অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার একটি প্রামাণ্য দলিল—যেখানে রয়েছে ইতিহাস ও সাহিত্যের মেলবন্ধন।

জীবনানন্দের জীবনীকার প্রভাতকুমার দাসের সরাসরি তত্ত্বাবধান এবং গবেষক গৌতম মিত্রর গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শে লিখিত এ্ই বইটি প্রকাশ করেছে ‘ঐতিহ্য’। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী তাপস কর্মকার।

প্রসঙ্গত, আমীন আল রশীদের জন্ম জীবনানন্দের স্মৃতিবিজড়িত ধানসিড়ি নদীর শহর ঝালকাঠিতে। তিনি শিক্ষাজীবনেরও একটি বড় অংশ কাটিয়েছেন জীবনানন্দের স্মৃতিধন্য বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *