তরিকুল ইসলাম তিতাস ।।
থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও টিপ টিপ করে আবার কখনও অঝোর ধারায়। আকাশ কালো মেঘে আচ্ছন্ন। তখন শ্রাবণ মাস। শ্রাবণ মাসের এ রুপ আমার বহু আগে থেকেই পরিচিত। আমার ছোটবেলাটা কেটেছে নিভৃত এক পল্লীতে। নদী নালা, খাল বিল বেষ্টিত পল্লী । যেখানে রয়েছে বিস্তীর্ন এলাকা জুড়ে সবুজ ধানের ক্ষেত, মাঠে রয়েছে অসংখ্য সাদা পদ্ম এবং লাল শাপলা, ছোট ছোট অসংখ্য খাল এবং ক্ষেতের ধারে কদম এবং কেয়া ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণ।
‘মুক্তবুলি’ ম্যাগাজিনে বন্ধু আযাদ আলাউদ্দীন’র ‘বাংলা কবিতায় বর্ষা’ বিষয়ক একটা লেখা পড়ে ফিরে গেলাম সুদূর অতীতে। তখন আমি অনেক ছোট। প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। আষাঢ় শ্রাবণ মাস এলে আমরা তখন ছোট ছোট নৌকা নিয়ে নৌকা বাইচ দিতে যেতাম। ছোট ছোট খাল দিয়ে যখন গ্রোতের তোড়ে নৌকা ভেসে যেত, তখন খালের পাড়ে রাস্তার দুই ধারে কদম এবং কেয়া ফুল ফুটে থাকতে দেখতাম। কেয়া ফুলের মিষ্টি গন্ধে চারদিকে মৌ মৌ করত। কখনও কখনও অঝোর ধারায় নেমে আসত বৃষ্টি। নৌকায় বসে বৃষ্টির পানিতে ভিজতে ভিজতে আমরা শাপলা তুলতাম। পূবাল বাতাসের তোড়ে আমাদের নৌকা ভাসিয়ে নিয়ে যেত অনেক দূরে।
অষ্ট্রেলিয়া আমেরিকা সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বৃষ্টি ঋতু দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। অষ্ট্রেলিয়ায় বৃষ্টি হয় জুন জুলাই মাসে। আর এই জুন জুলাই মাস মুলত অষ্ট্রেলিয়ায় শীত কাল। সিংগাপূরে বৃষ্টি হয় ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত আবার থাইল্যান্ডে বৃষ্টি হয় জুন মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত । এসব দেশে বৃষ্টি ঋতুর আলাদা কোন বৈশিষ্ট্য নেই, আলাদা কোন রূপ নেই। যেমনটা আমি দেখেছি বাংলাদেশে।
পার্থিব ব্যাস্ততায় আমরা যখন আমাদের প্রকৃতির রূপ বৈচিত্র্য প্রায় ভুলতে বসেছি, আযাদ আলাউদ্দীন তখন ‘মুক্তবুলি’ ম্যাগাজিনের মাধ্যমে আমাদের সেই প্রকৃতির অনেকটাই পরশ দিয়ে যাচ্ছেন।
আমি যখন বাংলাদেশে এসেছিলাম তখন ম্যাগাজিনটির কয়েকটি কপি পেয়ে পড়েছিলাম। তখন থেকে আমি সংগ্রহ করে নিয়মিত এটি পড়ছি। ভালই লাগে ম্যাগাজিনটির বিভিন্ন বিভাগ। মুক্তবুলি ম্যাগাজিন এবং এর সকল লেখদের সাফল্য কামনা করছি।
তরিকুল ইসলাম তিতাস
বরিশাল বিএম কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী
বর্তমানে অষ্ট্রেলিয়া প্রবাসী