বদলে যাচ্ছে ঝালকাঠির সিটি পার্ক

বাবুল মিনা, ঝালকাঠি ||

প্রাচ্যের কোলকাতা খ্যাত ঝালকাঠি একটি ব্যবসায়িক কেন্দ্র। সুগন্ধা নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় ব্রিটিশদের নজরে আসে ঝালকাঠি শহরটির। নৌপথে ব্যবসা বাণিজ্যের সুবিধার কথা চিন্তা করে গড়ে ওঠে বাণিজ্যিক শহর ঝালকাঠি। কথিত আছে জালের কাঠি থেকে ঝালকাঠির নামকরণ করা হয়েছে। ঝালকাঠিতে বিনোদনের জন্য তেমন কোন স্পট না থাকলেও এক সময় জমজমাট ছিল ঝালকাঠি সিটি পার্ক। কিন্তু মাদক ও কিছু বখাটের আড্ডাস্থল হয়ে ওঠার কারণে সিটি পার্কটি অন্ধকারের গহবরে তলিয়ে যায়।

কথা হয়- সিটি ক্লাবের প্রথম সভাপতি গৌতম কুমার সরকারের সাথে। তিনি আপসোস করে জানান, “আমরা অনেক আশা আকাঙ্খা নিয়ে ১৯৮৪ সালে ২৪ ডিসেম্বর ঝালকাঠি পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের পূর্ব স্ট্যান্ড রোডে অবহেলিত ও নির্যাতিত মানুষের পাশে দাড়ানোর লক্ষে সিটি ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা করি। এই সিটি ক্লাবের উদ্যোগেই ক্লাবের নিকটবর্তী পুরান স্টেডিয়ামের দক্ষিণ পাশে পৌরসভার জায়গা সংস্কার করে সিটি পার্ক গড়ে তোলা হয়। উক্ত জায়গা পর্যায়ক্রমে নেশাখোরদের আবাসস্থলে পরিণত হয়। ভাসমান পতিতালয় ও মাদকসহ নানা অপকর্মের নিরাপদ জায়গা হয় এই পার্ক। একসময় ওই স্থান থেকে কোন ভদ্রলোক নিরাপদে যাতায়াত করতে পারতো না।

তৎকালীন পৌর প্রশাসক সাইফুল ইসলাম ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মরহুম বেলায়েত হোসেনের সহযোগিতায় সিটি পার্কটির জন্য জায়গা বরাদ্ধ দেয়া হয়। সিটি পার্কটি গড়ে তোলার উদ্দেশ্য ছিল ঝালকাঠিবাসীর বিনোদনের জন্যে একটি মনোরম স্থান সৃষ্টি করা। এক সময় এই সিটি পার্কে প্রতিদিন গড়ে ৪/৫ টি পিকনিক পার্টি আসতো। মানুষ ছুটির দিনে বেড়াতে আসতো এবং অনেক আনন্দ পেত। ঝালকাঠি জেলার বাহির থেকেও এখানে অনেকে বেড়াতে আসতেন। কবি শামসুর রাহমানসহ বিভিন্ন গুণিজন সিটি পার্ক পরিদর্শন করেছেন। পরবর্তীতে সিটি পার্কটি পৌরসভার অধীনে নিলে পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায় এবং নেশাখোর ও মাদকসেবীদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়।’’

সিটি পার্কটি বর্তমানে পৌরসভা থেকে লিজ গ্রহণ করেছেন নবীন ও সবচেয়ে কম বয়সী ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ূন কবীর সাগর। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, ‘‘সিটি পার্ক’র ঐতিহ্য ও গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্যে তিনি নানামুখী উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড শুরু করেছেন। তিনি আরো বলেন, সিটি পার্কে পিকনিক স্পট, পুকুর সংস্কার, বসার স্থান, বিনোদনের জন্যে রাইডস, রান্না ঘর, ৩ তলা বিশিষ্ট কনভেনশন সেন্টার, গেস্ট হাউজ, হাটাচলার জন্যে রাস্তা সংস্কার ও সৌন্দর্য বর্ধনসহ সেফটি ও সিকিউরিটি গড়ে তোলা হবে। যাতে এখানে মানুষ নিরাপদে বেড়াতে আসতে পারেন এবং আনন্দ উপভোগ করতে পারেন।’  তিনি নিজস্ব তহবিল থেকে নিজ উদ্যোগে এসব কর্মযজ্ঞ করবেন বলে জানান। ঝালকাঠিবাসীর দীর্ঘদিনের চাওয়া পাওয়া পুরন করতে মহতি উদ্যোগ নেয়ায় ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ূন কবীর সাগর কে সুধীজন ও এলাকাবাসী সাধুবাদ জানাচ্ছেন। আবার ফিরে আসবে পুরানো পৌর সিটি পার্কের জৌলুস।

বাবুল মিনা
কোষাধ্যক্ষ,
জাতীয় সংবাদিক সংস্থা, ঝালকাঠি |

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *