করোনাকালে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের করণীয়

মোঃ শামছুদ্দীন নাঈম
.
গোটা বিশ্ব এখন করোনা নামক ভাইরাসের করাল গ্রাসে এক দুর্যোগপূর্ণ অবস্থার সম্মুখীন। সারা পৃথিবী এ মহামারির থাবায় স্থবির। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মানব জাতিকে যে অতি দুর্বল হিসেবে পৃথিবীতে সৃষ্টি করেছেন তার বাস্তব প্রমান হলো এ করোনা। আজ আমাদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে আমাদের শক্তি, সাহস, অস্ত্র, টাকা, অহংকার ও দাম্ভিকতা সৃষ্টিকর্তার কাছে কিছুই না। তবুও বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে একটু নিরাপদ ও সুস্থ্য থাকার চেষ্টা করা মাত্র। তারই ধারাবাহিকতায় জাতির মেরুদন্ড শিক্ষার উৎপত্তিস্থল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও দেশকে ভাইরাসের আক্রমন থেকে রক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা যারা অভিভাবক রয়েছি এ মূহুর্তে আমাদের ছেলে মেয়েদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষার প্রতি নজর রাখা অতিব জরুরী বলে আমি মনে করি।
আমরা একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে ভাইরাসে যাতে শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত না হয় এজন্যই প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। তার মানে হলো অভিভাবকদের দায়িত্বে তাদেরকে ঘরে রাখতে হবে। কিন্তু দেখা যায় প্রতিষ্ঠান বন্ধের কারনে শিক্ষার্থীরা ঘরের বাইরে আড্ডায় ব্যাস্ত। বিশেষ করে গ্রামে বেশী পরিলক্ষিত হয়। এতে করে বুঝা যায় অভিভাবকগন দায়িত্বহীন। আর এ দায়িত্বহীনতার ফলে প্রতিষ্ঠান বন্ধের আসল উদ্দেশ্য ব্যর্থতায় পরিনত হচ্ছে। দ্বিতীয়তঃ এ বন্ধের মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষার্থী পড়ার টেবিলের বাইরে। একজন দক্ষ শিক্ষক আমার ছাত্র জীবনে বলতেন প্রতিষ্ঠান মাঝে মাঝে বন্ধ থাকা শিক্ষার্থীর জন্য পড়ার একটি অনন্য সুযোগ। এ সময়ে যে যত বেশী পড়তে পারবে, সে তত বেশী ভাল ফলাফল করবে। তাই আমিও মনে করি এ বিশাল সুযোগকে শিক্ষার্থীরা ছুটি না ভেবে সংসদ টেলিভিশনে প্রচারিত ক্লাসগুলো নিয়মিত দেখে কাজে লাগাতে পারলে পরীক্ষায় ভাল ফলাফল বয়ে আনা সম্ভব হবে।
আর টেলিভিশনে ক্লাস নিশ্চিত করা, পড়ার টেবিলে নিয়মিত বসানো, পাঠের প্রতি মনোযোগী করতে অভিভাবকদের ভূমিকা ও দায়িত্ব অপরিসীম।  আমাকে ও অনেকে বলেন- স্যার স্কুল কবে খুলবে? ছেলে মেয়েরা তো পড়ালেখা করেনা। এখানে আমি বলব স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে আমাদের ছেলে মেয়েদের সুরক্ষার জন্যই। পরিবেশ তৈরি হলে স্কুল অবশ্যই খোলা হবে ইনশাল্লাহ। এখন সে দিকে নজর না দিয়ে বাড়িতে পড়ানো ও অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে আমাদের। আমরা অভিভাবকগন যদি এমন সংকটময় পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ খেয়াল না করি তাহলে আমার বিশ্বাস তারা তাদের কাংখিত সাফল্যে পৌঁছা কঠিন ও দুরূহ হয়ে পড়বে।
তাই আসুন এমন সংকটাপন্ন সময়গুলো বুদ্ধিমত্তা ও সচেতনতার মাধ্যমে পার করি। আর মহান আল্লাহর নিকট নিজেদের কৃত কর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি। তাহলে মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের ক্ষমা করে দিয়ে এ ধ্বংসাত্বক করোনা ভাইরাস পৃথিবী থেকে দূরিভূত করে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনবেন ইনশাল্লাহ। পরিশেষে স্লোগান থাকবে-
“নিজেরা ঘরে থাকি, শিক্ষার্থীদের ঘরে রাখি
নিজেরা সুস্থ্য থাকি, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখি।।
.
মোঃ শামছুদ্দীন নাঈম
বিএসএস অনার্স, বিএড, এমএসএস
সহকারি শিক্ষক, পূর্ব চরভূতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
লালমোহন, ভোলা।

আরো পড়ুন

ভ্রমণ: ভোলা হতে ভোলাগঞ্জ

ড. সাইয়েদ মুজতবা আহমাদ খান ।। বাংলাদেশের অন্যতম পূণ্যভূমি সিলেটের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র ভ্রমণের একটা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *