বিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকে বর্তমান বাংলাদেশের ঝালকাঠি জেলায় সংগঠিত হয় দানবীয় হত্যাযজ্ঞ। ১৯২৭ সালের ২রা মার্চ গুর্খা পুলিশের গুলিতে নিহত হয় ১৯ জন মুসলিম। কুলকাঠি মসজিদের নিকট সমাহিত শহিদদের স্মৃতিফলকে তাদের নাম লিপিবদ্ধ আছে। নিহতরা হলেন: বাবরউল্লাহ হাওলাদার, আক্কেল গাজি, নইম উদ্দিন হাওলাদার, ইয়াছিন আকন, আতা উদ্দিন হাওলাদার, হাসান উল্লাহ হাওলাদার, মোসলেম উদ্দিন, মোহন মোল্লা, সিরাজ উদ্দিন, সুন্দর খাঁ, ছবদার খান, মফেজ হাওলাদার, শরম্যাত আলি হাওলাদার, বলু খান, রিয়াজ উদ্দিন, জাহের তালুকদার, জহির উদ্দিন হাওলাদার, আবুল হোসেন হাওলাদার ও ফরমান উল্লাহ হাওলাদার। (সিরাজ উদদীন আহমদ: বরিশাল বিভাগের ইতিহাস প্রথম খণ্ড, পৃ ৬০৩-৬০৪) এছাড়া আহত হন অনেকে। দীনের সংগ্রাম এবং মসজিদের ঐতিহ্য রক্ষায় তাদের ত্যাগের আজও মূল্যায়ন হয়নি।
এ হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক ছিলেন ই.এন. ব্লান্ডি ও সত্যেন সেন। ১৯২৪-২৮ সালে সত্যেন সেনের নেতৃত্বে দক্ষিণাঞ্চলে সত্যাগ্রহ আন্দোলন জোরদার হয়। মূলত এটা ছিলো একটি কঠিন সাম্প্রদায়িক সংগঠন। বাকেরগঞ্জ, ঝালকাঠি, পটুয়াখালীতে সত্যাগ্রহ আন্দোলনের নামে নেতৃবৃন্দ সংঘাত সহিংসতায় মেতে ওঠে। ঝালকাঠির পোনাবালিয়া সংলগ্ন কুলকাঠি গ্রামে শিবপূজা উপলক্ষে ভয়ঙ্কর হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ই. এন. ব্লান্ডি, পুলিশ সুপারিনটেন্ড মি. টেলর, এসডিও জি কে বিশ্বাস, দারোগা ভূতনাথ এবং সত্যেন সেন। মসজিদের মর্যাদা রক্ষা ও শিবরাত্রে পূজাকে কেন্দ্র করে মুসলিম ও হিন্দুদের মধ্যে তিক্ততা পয়দা হলে সত্যেন সেনের মদদে ই. এন. ব্লান্ডির হুকুমে গুর্খা পুলিশের গুলীতে হতাহতের ঘটনা ঘটে।