পর্ব ৩
মুহাম্মাদ আবদুল মাননান
একদিন প্রিয়নবি মুহাম্মাদ (সাঃ) খেতে বসেছিলেন। কিন্তু খানা তখনও শুরু করেননি । উম্মে কায়েস বিনতে মুহসিন (রাঃ) তার শিশুপুত্রটিকে কোলে করে রাসূলের সাথে দেখা করতে আসলেন। শিশুটিকে দেখে রাসূল (সাঃ) তার দিকে এগিয়ে আসলেন । পরম আদরে কোলে তুলে নিয়ে খাবাররে জায়গায় গিয়ে বসলেন । শিশুটি নবিজির আদর পেয়ে তাঁর কোলেই পেশাব করে ভিজিয়ে দেয় । রাসূল (সাঃ) স্মতি হাসলেন। চেহারায় বিরক্তি প্রকাশ পেল না। তিনি পানি আনার জন্য একজনকে বললেন । পানি আনা হলে যে যে জায়গায় পেশাব পড়েছিল সেখানে পানি ঢেলে দিলেন। রাসূলে খোদা মনে করতেন, বাগানের ফুল যেমন পবিত্র, মায়ের কোল থেকে নেয়া শিশুও তেমনি পবিত্র। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘শিশুরা আল্লাহর দেয়া খুশবু। ওরা ফুলরে মতো।’ (মিশকাত)। একদিন মহানবী সা: মসজিদের মিম্বারে খুতবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় দেখতে পেলেন, তাঁর দৌহিত্রদ্বয়- হাসান (রা:) ও হুসাইন (রা:) দৌঁড়াদৌড়ি করতে গিয়ে তাঁদের পা পিছলে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিলো । সাথে সাথে তিনি খুতবা বন্ধ করে মিম্বর থেকে নেমে গিয়ে দুহাত বাড়িয়ে শিশু দুটিকে সযত্নে কোলে তুলে নিয়ে তাঁদেরকে পড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করলেন। তারপর আবার মিম্বরে উঠে খুতবা দিতে লাগলেন। অন্য আরেক দিন একটি ঘটনা । শিশু হাসান (রা:) ও হুসাইন (রা:) সিজদারত অবস্থায় নানার পিঠের ওপর সওয়ার হলেন। তাঁরা তাঁর পিঠ থেকে না নামা র্পযন্ত- তিনি সিজদা থেকে উঠলেন না। ফলে সিজদা দীর্ঘায়িত হলো। সালাত শেষে মুক্তাদিগণ জিজ্ঞাসা করলেন : ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি আজ সিজদা বেশ র্দীর্ঘায়িত করলেন। তিনি জবাব দিলেন: আমার আওলাদগণ (নাতিদ্বয়) আমাকে সওয়ারি বানিয়েছে।তাই তাঁদের তাড়াতাড়ি নামিয়ে দেয়াটা আমার পছন্দ হয়নি।
মহানবী সা: কখনো নামায পড়া অবস্থায় শিশুদের কান্নার আওয়াজ শুনলে নামাজ সংক্ষিপ্ত করতেন। এ সর্ম্পকে তাঁর একটি বিখ্যাত হাদিস : আমি নামাজ পড়তে শুরু করলে মন চায় র্দীঘ করে নামাজ পড়। তারপর কোনো শিশুর কান্নার শব্দ ভেসে আসে কানে, তখন নামাজ সংক্ষপ্তি করে ফিলি। কেননা লম্বা করে নামাজ পড়ে শিশুদের মায়েদের কষ্টে ফেলে দেই- এটা আমি চাই না। (বুখারি শরিফ)
আল্লাহর রাসূল (সা.) চৌদ্দশ’ বছর আগেই শিশুদের যুদ্ধে ব্যবহার ও হত্যা না করার নির্দেশ দিয়েছেন। বদর যুদ্ধের সময় কিছু বালক যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। রাসূল (সা.) বালকদের জিহাদি প্রেরণা খুশি হলেন। কিন্তু তিনি এই কচি শিশুদের ঘরে ফিরে যেতে বললেন। অবশ্য উমাইয়ার নামক একটি শিশুর দৃঢ় সংকল্পের জন্য শেষে তাকে যুদ্ধে যেতে অনুমতি দেন।অন্য এক যুদ্ধে কয়কেজন শিশু মারা যায়। তারা ছিলো শত্রুপক্ষের। এ খবর এসে পৌঁছলে রাসূল (সা.)-এর প্রাণ কেঁদে ওঠে।তিনি খুবই আফসোস ও দুঃখ করতে থাকেন। এ অবস্থা দেখে একজন সৈনিক বললেন, ‘হে আল্লাহর নবী। আপনি যাদের জন্য এতো র্মমবেদনা ভোগ করছেন তারা বিধর্মীদের সন্তান।
চার পর্বে খতম