টিপ একজন নারীর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, এমনটাই ধারণা অনেকের। কপালে টিপ ষোলটি মেকআপের মধ্যে অন্যতম। বেশ কিছু অঞ্চলে বিয়ের পর টিপ পরার রেওয়াজও রয়েছে। তবে দ্বীনের সঠিক জ্ঞান না থাকার কারণে তারা হয়তো জানেন না যে, এটি বিশেষ একটি ধর্মের পরিচায়ক ও সংস্কৃতির অংশ। এমনকি এ টিপ ইসলাম বিদ্বেষী অত্যাচারী নমরুদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা একটি বিশেষ চিহ্নও বটে।
ইসলামে টিপ পরার একটি ইতিহাস আছে। হজরত ইব্রাহিমকে (আ.) আগুনে পুড়িয়ে মারার জন্য নমরুদ যখন একটি ১৮ মাইলের বিশাল অগ্নিকুণ্ড নির্মাণ করে তখন সেটি এত বড় ও ভয়াবহ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে, কোনো মানুষের পক্ষে হজরত ইব্রাহিমকে (আ.) সেখানে নিয়ে নিক্ষেপ করা সম্ভব হলো না।
এরপর অত্যাচারী নমরুদের নির্দেশে একটি চরকা বানানো হলো। যার মাধ্যমে হজরত ইব্রাহিমকে (আ.) ছুড়ে আগুনে নিক্ষেপ করা যায়। কিন্তু মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহ তায়ালার কুদরতি নির্দেশে রহমতের ফেরেশতারা চরকার একপাশে ভর করে থাকায় সেটি ঘুরানো যাচ্ছিল না। তখন শয়তান নমরুদকে কুবুদ্ধি দিল- কিছু নগ্ন মেয়ে (পতিতা) এনে চরকার সামনে বসিয়ে দিতে; কারণ এমন জঘন্য পরিবেশে ফেরেশতারা থাকতে পারেন না।
শয়তানের অনুসারী নমরুদ তাই করল। তখন ফেরেশতারা চরকা ছেড়ে চলে গেল; আর হজরত ইব্রাহিমকে (আ.) আগুনে নিক্ষেপ করা সম্ভব হলো। এই ঘটনার পরবর্তী সময়ে ওই মেয়েগুলোকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হলো এবং তাদের মাথায় তিলক পরানো হলো। যেটা বর্তমানে আমাদের কাছে টিপ নামে পরিচিত।
যেসব মুসলিম নারী ফ্যাশনের জন্য টিপ পরে তারা হয়তো এই ঘটনা জানেন না। আর যদি জেনেও কেউ কপালে টিপ ব্যবহার করে তাহলে সেটা তার দুর্ভাগ্য! তবে হিন্দু নারীরা কপালে টিপ পরে তাদের ধর্মীয় সংস্কৃতির অংশ হিসেবে।
(সূত্র : তাফসিরে মারিফুল কুরআন। হযরত ইবরাহিম (আ.) মূলগ্রন্থ তাবারী, তারীখ, ১ খণ্ড ১২৩-১২৪; ছালাবী আদি গ্রন্থ, কাসাসুল আম্বিয়া, পৃষ্ঠা: ৮১, আদি ইসলামী ইতিহাস, ইবনে কাসির)।