গিরগিটি কেন রং পাল্টায়

মুক্তবুলি ডেস্ক ||

প্যানথার নামের গিরগিটির রং পাল্টাতে সময় লাগে দুই মিনিট। অনেক দিন ধরেই গবেষণা চলছে, কেমন করে এটি তারা পারে। সম্প্রতি জানা গেছে, রং পাল্টানোর এ কৌশল আসলে লুকিয়ে আছে তাদের শরীরের ভেতরে। প্রচলিত ধারণা, অনেক গিরগিটিরই চামড়ার নিচে রয়েছে রঞ্জক পদার্থ মেশানো কোষের অনেক স্তর, যার কারণে তাদের চামড়ার রং হতে পারে হালকা কিংবা গাঢ়।
তবে কেবল এই একটা পদ্ধতি ব্যবহার করেই গিরিগিটি শরীরের রং পাল্টায় না; বরং তাদের চামড়ার ঠিক নিচে থাকা ছোট্ট স্ফটিক ‘আইরিডোফোরস’ তাদের রং বদলানোর পেছনের আসল চাবিকাঠি। গিরগিটি উত্তেজিত অবস্থায় থাকলে এসব স্ফটিক আপনা থেকেই সংকুচিত ও প্রসারিত হতে থাকে।

‘নেচার কমিউনিকেশনস’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা থেকে জানা যায়, এসব স্ফটিক ক্রমে সংকুচিত আর প্রসারিত হওয়ার দরুন স্ফটিকগুলো বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোর প্রতিফলন ঘটাতে থাকে। ঠিক যেন কোনো আয়নার মতোই ঘটে এ প্রতিফলন- এমনটাই মনে করেন গবেষণার অন্যতম লেখক সুইজারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব জেনেভার মিশেল মিলিনকোভিচ। তিনি জানান, কিছু নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলোই কেবল স্ফটিকগুলো প্রতিফলিত করে, বাকিগুলো নয়। স্ফটিকের আকার আর তাদের অবস্থানের ভিন্নতার কারণে রঙের মাঝেও ভিন্নতার সৃষ্টি হয়।

মিলিনকোভিচ জানান, সাধারণত একটি ছেলে ক্যামেলিওন বা গিরগিটি আরেকটিকে ভয় দেখাতে কিংবা নিজের রূপ জাহির করতে প্রায়ই এমনভাবে রং পাল্টাতে থাকে। আর এ ঘটনা বাস্তবে ক্যামেরাবন্দিও করেন তারা, যখন একটি ছেলে ক্যামেলিওন তার আরেক প্রতিযোগীর সম্মুখীন হয়। গবেষক দলটি ক্যামেলিওনের শরীরের বেশ ভেতরের দিকের এক স্তরের সন্ধান পান, যেটি কিনা প্রায় অবলোহিত সূর্যালোককে প্রতিফলিত করে। এর দরুন ক্যামেলিওন তার শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে পারে খুব সহজেই। দলের আরেক সদস্য অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্নের ডেভি স্টুয়ার্ট-ফক্স জানান, এ দ্বিতীয় স্তরের সন্ধান পাওয়াটা খুবই আনন্দের ব্যাপার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *