ঝালকাঠির গৌরব কবি কামিনী রায়

মু. আল আমীন বাকলাই ।।

১২ অক্টোবর কবি কামিনী রায় এর জন্মবার্ষিকী। পন্ডিত বিচারক চন্ডিচরণ সেন এর কন্যা কামিনী রায় বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি, তিনি তৎকালীন শ্রেষ্ঠ নারী সংগঠক। পিতার নিকট বাল্যশিক্ষা লাভের পর সেই শিশু বয়সে কবি’ র কবিতা রচনার প্রয়াস ১৮৮৯ তে “আলো ও ছায়া” কাব্য গ্রন্থে প্রকাশের মধ্যদিয়ে উন্মেষ ঘটে।

এরপর নির্মাল্য, পৌরানিকী, দ্বীপ ও ধূপ, মাল্য ও নির্মাল্য, জীবনপথে, অশোক সংগীত প্রভৃতি কবির উল্লেখযোগ্য লেখনি। ব্যক্তিগত জীবনের আঘাত- প্রত্যাঘাত টানাপোড়েন আর তৎকালীন নারী সমাজের দুঃখ বেদনার্ত জীবন যাপনের যাতাকলে নিস্পেষিতদের চিত্র তুলে ধরার প্রয়াস তাঁর কবিতার ছত্রে ছত্রে। ব্যর্থতা, হতাশা, কিছু করতে না পারাকে কবিতায় ফুটিয়ে তুলেছেন। সমসাময়িক সমাজ ব্যবস্থার অনাচার ভাঙার সুর তার কবিতায় প্রচন্ড। ঈশ্বর ভক্তি আর ঈশ্বরের নিরঙ্কুশ ক্ষমতার প্রতি আত্মসমর্পণ তাঁর অনেক কবিতার উপজীব্য। “নাই কিরে সুখ নাই কিরে সুখ এ ধরা কি শুধু বিষাদময়” কবির জিজ্ঞাসা। নারীকুলের উন্নয়নে পুরুষের প্রতি আহ্বান, “খুলিয়া শৃঙ্খল ভাঙিয়া পিঞ্জর শিখাও চলিতে ধরি তার কর” যুগের পরিবর্তনে নারী আজ অগ্রগামী।

বৃটিশ ভারতের প্রথম মহিলা স্নাতক ডিগ্রিধারী কবির মহান বাণী আমরা মেনে চললে সমাজের, রাজনীতির গুনগত পরিবর্তন সম্ভব “পরের কারনে স্বার্থ দিয়া বলি এ জীবন মন সকলি দাও তার মত সুখ কোথাও কি আছে আপনার কথা ভূলিয়া যাও “। আজ জমিদার চন্ডিচরণ সেন ও কামিনী রায় এর বাস্তুভিটার চিহ্ন মাত্র নেই। এটি উদ্ধার ও সংরক্ষণের দাবি বাঙালি ও বাংলা ভাষাভাষীদের। কবির জন্মস্থান “ঝালকাঠি জেলার বাসন্ডা “গ্রাম। যেটি জাতীয় পর্যায়ে ভুল লেখা হয়, যা সংশোধন করার দাবী করছি।

মু. আল আমীন বাকলাই, সাধারণ সম্পাদক, কবিতাচক্র, ঝালকাঠি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *