রাজিব হাসান
.
রহমান আল্লাহ’র গুণগান যারা করে, আর যারা করে না এদের সবাইকেই তিনি রিজিক দেন; দেন দম নেবার সুযোগ! তিরষ্কার করে সাথে সাথেই রহমাতের ছায়াতল থেকে বহিঃষ্কার করে দেন না; সুযোগ দেন, ফুরসৎ দেন, ভাবাবার অবকাশ দেন। কতবার, কতদিন, কত মাস ঘুম থেকে উঠে ফজরে হাজিরা দেইনি। তার কোন ইয়ত্তা আছে? অথচ নিয়ামতের কোন কমতি কি হয়েছে?
একবার চোখ বন্ধ করে চিন্তা করে বলুনতো, ঠিক একই কায়দায় আমি যদি আমার কাজে (অফিস/ডিউটি/ক্লাসে) একদিন, দুদিন, তিনদিন বা ফজরের মতই হাজিরা না দেই – তাহলে কেমন হবে?
— উক্ত দিনগুলির বেতন কাটা হতে পারে;
— হতে পারে দুর্বল পারফরমেন্সের কারণ,
— ইয়ার্লী ইনক্রেমেন্ট না হওয়াটাও একটা কারণ হতে পারে
— আর এরকম হতে থাকলে এক পর্যায়ে হয়ত অফিসের বস বা কোম্পানী আপনার প্রয়োজনীয়তা অনুভব নাও করতে পারে। — তাৎক্ষণিক জবাবদিহিতা তো আছেই।
.
অথচ যিনি আমাদের রিজিক দেন অফুরন্ত ভান্ডার থেকে সেই আর-রাজ্জাকের গুনগাণ গাই না। আর যারা সেই রবের মুখাপেক্ষী তাদেরকে জ্বী স্যার/জ্বী হুজুর/জ্বী বস বলতে ভুলি না। সমস্যাটা ঠিক এখানেই। প্রায়োরিটি সেট। আল্লাহকে ভুলে আল্লাহ’র বান্দার মুখাপেক্ষী হই, এতে একমুহুর্ত ছাড় দেওয়ার বান্দা আমি নই। অফিস ৭টায় হলে অ্যাল্যার্ম ঠিকই ৬ টায় দেই। কিন্তু ফজর ৫টায় হলেও অ্যল্যার্ম দেবার পাত্র আমরা নই !
.
যিনি প্রতিমুহূর্ত আমাকে সুযোগ দিচ্ছেন, তার নিদর্শন দেখাচ্ছেন, অগণিত নিয়ামতে ঢেকে রেখেছেন তার জন্য সময় নেই। ফজরে তো আমারই সর্বাগ্রে তার সামনে দাঁড়ানো উচিৎ ছিল আর বলা উচিৎ ছিল: ‘এই দেখো রব- আমি এসেছি! আমি তোমার রহমতের দুয়ারে দাঁড়িয়ে! এখনো যাইনি হারিয়ে।
.
ফজরে হাজিরা দেয়ার জন্য আমার রবের পক্ষ থেকে যে পরিমাণ ভালোবাসার বর্ণনা এসেছে তা সত্যি অন্তরে দোলা দেবার মত। সহিহ মুসলিমের এক হাদিসে এসেছে, রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ পড়বে, সে আল্লাহর জিম্মায় থাকবে।’ মানে সেদিনের দায়িত্ব মহান আল্লাহই নিয়ে নিচ্ছেন। হিফাজত করবেন সুমহান রাব্ব। এ গেলো দুনিয়াবী প্রতিদান।
.
আখিরাতে তো চির আকাঙ্ক্ষার জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। দুই শীতল নামাজ তথা ফজর ও আসর আদায়কারীর জন্য রয়েছে জান্নাত। সহীহ বুখারির হাদিসে এসেছে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুই শীতল (নামাজ) পড়বে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’
.
হাফিজ ইবনুল ক্বাইয়িম (রহ.) বলেছেন, “সকালবেলার ঘুম, ঘরে রিজিক আসতে বাধা দেয়। কেননা তখন রিজিক বণ্টন করা হয়।
.
মহান আল্লাহ আমাদের রাত কাঁচা থাকতে থাকতেই বিছানায় যাবার সুযোগ দিন আর ফজিলতের ফজরে হাজিরা দেওয়ার তৌফিক দিন (আমিন)
লেখার তথ্যসূত্র: ফেসবুক